অমর একুশে বিশেষ সংখ্যা ২০২৪
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান
যে অঞ্চল নিয়ে আজকের বাংলাদেশ সেখানে ভাষা-বিতর্কের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তা সত্ত্বেও ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের প্রতীক হয়ে আছে বেশির ভাগ বাঙালির কাছে। তবে এই আন্দোলনের ব্যাপ্তি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সময়টিকেই ঘিরে বলে বেশিরভাগ গবেষকদের লেখায় উঠে এসেছে। এই আন্দোলনকে নিছক বাংলা ভাষার মর্যাদার লড়াই মনে করলে সবটা বলা হবে না। ১৯৪৮ সালের শুরু থেকেই এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। পূর্ব-বাংলার উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির একজন প্রতিনিধি হিসেবে নেতৃত্ব দিলেও তার সঙ্গে গভীর সংযোগ ছিল এদেশের কৃষক, শ্রমিক ও নিম্নমধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষের। তাই তো একুশে ফেব্রুয়ারির গণবিস্ফোরণের প্রথম বার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আরমানিটোলা ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় তিনি উচ্চারণ করেছিলেন, ‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার দাবিতে ছিল না, সেটা ছিল আমাদের জীবন-মরণের লড়াই। আমরা মানুষের মতো বাঁচতে চাই। আমরা খাদ্য চাই, বস্ত্র চাই, আশ্রয় চাই, নাগরিক অধিকার চাই। আমরা কথা বলার অধিকার চাই, শোষণমুক্ত সমাজ চাই।’ (‘সিক্রেট ডকুমেন্টস’, প্রতিবেদন নং ৪৭, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩)।
পশ্চিম পাকিস্তানি শিল্পায়নের ‘বন্দি বাজারে’ই পরিণত হয়েছিল পূর্ব বাংলা। এর জন্য প্রস্তুত ছিল না পাকিস্তান আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মুসলিম লীগের সমর্থক তরুণ কর্মীরা। তারা দারুণ হতাশ তখন। তাই পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকচক্রের বিরোধিতা শুরু করে এই তরুণ কর্মীরা। এদের বেশির ভাগই ছিল কৃষক সন্তান। কেউ কেউ আবার এক-প্রজন্মের শহরবাসী। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ধর্মনিরপেক্ষ। অনেকেই অস্পষ্টভাবে হলেও বামঘেঁষা। এরাই আওয়ামী মুসলিম লীগের সক্রিয় কর্মীদল হিসেবে বেড়ে ওঠে। যাদের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিব। কমিউনিস্ট পার্টির অনেকেই, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা এদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বাংলাদেশের কৃষকদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সংবেদনশীল বাঙালি জাতীয়তাবাদী এক সচেতন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। বাংলা ভাষার ওপর আঘাত এলে এরাই তীব্রভাবে প্রত্যাঘাত হানে। তাদের সঙ্গে শুরুতে না হলেও পরবর্তী পর্যায়ে ধীরে ধীরে যুক্ত হয় ব্যাপক সংখ্যক কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসক শ্রেণি পূর্ব-বাংলার ওপর যে আঞ্চলিক নিপীড়ন চাপিয়ে তারই প্রতিফলন ঘটে কখনও সংবিধান, কখনও অর্থনীতি, কখনো ভাষা-সংক্রান্ত নীতির মধ্য দিয়ে। ভাষা-প্রশ্নটি ছিল সামনের প্রসঙ্গ। পেছনে ছিল আঞ্চলিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের তীব্র আকাঙ্ক্ষা। তাই এ বিদ্রোহ ছিল অনিবার্য। পাকিস্তানি শাসক শ্রেণির ভাঁওতাবাজীর প্রধান শিকার কৃষক-শ্রমিকরাই তৈরি করেছিল ভাষা আন্দোলনের নির্মাণ-রসদ।
এই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা প্রায় সবাই এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর মতো মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণি অবস্থান থেকে। তাদের চাওয়া-পাওয়াও ছিল প্রায় একই রকম। তিন-চতুর্থাংশই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা রাজনীতি সম্পৃক্ত ছিল। ভাবাবেগে ৬৭ শতাংশ সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। ২৫ শতাংশ উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। ৭৩ শতাংশ ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের বিরোধী ছিল। ৪ শতাংশ মুসলিম লীগ সম্বন্ধে ইতিবাচক–যদিও সবাই পাকিস্তান আন্দোলনে যুক্ত ছিল। উর্দু রাষ্ট্র ভাষা ব্যক্তিগত ক্ষতির চেয়ে জাতীয় বিকাশ ব্যাহত হবে বলে বেশিরভাগ উত্তরদাতারা মনে করত। অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা নানা সংকটে তাই ভাষা আন্দোলনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ধীরে ধীরে স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে উঠেছিল। এর প্রভাবে শিল্প ও সাহিত্য চর্চাতেও প্রতিফলিত হতে থাকে। পাকিস্তানবাদী সংকীর্ণ সাহিত্যচর্চা থেকে উদারনৈতিক গ্রণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্যচর্চার যে ধারাটি বেগবান হয়েছিল তা নিঃসন্দেহে ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রভাব থেকে উৎসারিত। ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের শ্রেণি থেকেই বের হয়ে এসেছিল ঊনসত্তর এবং একাত্তরের জাতীয়তাবাদী ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব। ১৯৪৮-৫২ পর্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে শুভ সূচনা হয় তারই সফল উত্তরণ ঘটে একাত্তরে। ঔপনিবেশিক ও তার সহযোগী শ্রেণির বিরুদ্ধে অধঃস্তন শ্রেণিগুলোর (তথা পেটিবুর্জোয়া, ধনী ও মাঝারি ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, শ্রমিক, কৃষক) এক অভূতপূর্ব সম্মিলন ঘটেছিল বলেই এই উত্তরণ সম্ভব হয়েছিল (আতিউর রহমান (সম্পাদিত) ভাষা আন্দোলনের আর্থ-সামাজিক পটভূমি, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৬-২১, দ্বিতীয় সংস্করণ (এক খণ্ডে), ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ২০০০)। তাদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ভাষা-আন্দোলন অধঃস্তন শ্রেণিগুলোর এক মিলিত চৈতন্যের ফসল।
আগেই বলেছি, পূর্ববাংলার মধ্যবিত্ত শ্রেণির বেশিরভাগ মানুষ কৃষক সম্প্রদায় থেকে এসেছিলেন। পাকিস্তান আন্দোলনে তারা সক্রিয় ভূমিকাও রেখেছিলেন। যেহেতু পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন তাই তারা মনে করেছিলেন, রাষ্ট্র তাদের আবেগ অনুভূতির মূল্য দিয়ে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষায় মর্যাদা দেবে; কিন্তু বাস্তবে তারা বরং উর্দুকে সেই মর্যাদা দিল। বাংলাকে করল অপমান। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অংশ–ছাত্ররা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনের সূত্রপাত করল। এমন কি বাংলা ভাষার মর্যাদার লড়াইয়ে তাদের রক্ত ঝরলো। তারা সরাসরি সরকারের রাষ্ট্রভাষা নীতির বিপক্ষে চলে গেল। তাদের এই আন্দোলনে অংশ নেয়ার পেছনে যেসব কারণ কাজ করেছে সেগুলোর প্রধান দুটি কারণ হলো–
এক. বাংলা অপমানিত হওয়ার কারণে তারা মনে করল, পাকিস্তান বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য এবং গর্বের বিরুদ্ধে। যারা মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ, তাদের ভাষার প্রতি এই অবিচার বুদ্ধিজীবী মহলে গভীর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। সেই প্রতিক্রিয়া এক সময়ে সাধারণ মানুষের মনেও সঞ্চারিত হয়েছিল।
দুই. তারা এটা উপলব্ধি করতে পারল যে, উর্দু রাষ্ট্রভাষা হলে তাদের সরকারি ও আধাসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হবে। তাদের অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো হারিয়ে যাবে। তাদের সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাবে। তাদের সংস্কৃতি বিকশিত হবে না।
ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেবার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক বঞ্চনার কথাও প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরেন। এ সময়টায় তার নেতা জনাব সোহরাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে সারা পূর্ব বাংলা সফর করেন এবং জনসভা করেন। তার বক্তৃতায় গরিব চাষিদের ভাগ্যোন্নয়ন ছাড়াও পাট ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষানীতির ব্যাপক সমালোচনা করেন (আতিউর রহমান, সিক্রেট ডকুমেন্টস সংক্ষিপ্ত ও সরল পাঠ, পৃষ্ঠা ৫২-৫৬, প্রথম প্রকাশ, অন্যপ্রকাশ, ২০২১)। জনগণের দুঃখ বঞ্চনার দায় রাষ্ট্রকে নিতে হবে বলে তিনি বারে বারে দাবি করেন। তিনি তার ভাষণে প্রশাসন ব্যবস্থায় দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ার কথা বলেন। কর কাঠামোতে গরিবের স্বার্থ যে বিঘ্নিত হচ্ছিল সে কথাও তুলে ধরেন। খাদ্য সংকটে সরকারের উদাসীনতারও তীব্র সমালোচনা করেন। আর বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের কথা তো সর্বক্ষণই বলতেন। আর এভাবেই তিনি ধীরে ধীরে গণমানুষের পছন্দের নেতায় পরিণত হন।
ভাষা আন্দোলনে শহরাঞ্চলের মধ্যবিত্ত শ্রেণির ব্যাপক অংশগ্রহণ ওই শ্রেণির শিক্ষিত অংশের নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি রচনা করে। মাতৃভাষায় পবিত্রতা রক্ষার জন্য সর্বসাধারণের দাবির মাধ্যমে বাঙালি জাতির পৃথক আশা-আকাঙ্ক্ষার বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজটি দক্ষতার সঙ্গেই করতে পেরেছিলেন নেতৃত্বে থাকা অপেক্ষাকৃত বেশি আলোকিত অংশটি। পাকিস্তান রাষ্ট্র যে সংখ্যাগুরু বাঙালিদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে মোটেই আন্তরিক নয় ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এই কথাটি স্পষ্ট হয়ে যায়। সেই চেতনারই প্রতিফলন ঘটে পরবর্তীকালে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে বাঙালি জাতিসত্তায় বিশ্বাসী যুক্তফ্রন্ট বিপুলভাবে জয়ী হয়।
গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষিত ২১-দফা আসলে বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণির আশা-আকাঙ্ক্ষারই প্রতিচ্ছবি। এই ছবিটি আরও পরিষ্কার হয় যখন এই দাবিটি শ্রমশক্তির বিভিন্ন উপদলে বণ্টন করে দেখা হয়। ১৯৬১ সালে এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পূর্ব পকিস্তানের মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৩৬ শতাংশ ছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্তর্গত; কিন্তু ২১-দফায় প্রায় ৬৮ শতাংশ আর্থ-সামাজিক দাবি-দাওয়াই ছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির আশা-আকাঙ্ক্ষা ঘিরে। এটা অভাবিত নয়। কার্যত যুক্তফ্রন্ট ছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির রাজনৈতিক জোট। সুতরাং নির্বাচনি ইশতেহারে তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। সত্যিকার অর্থে পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে শহুরে এবং গ্রামীণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে সংযোগ ছিল খুবই গভীর। রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন মূলত শহুরে মধ্যবিত্ত অভিজাত শ্রেণির প্রথমদিককার প্রজন্ম। সুতরাং কৃষকদের আর্থ-সামাজিক দাবি শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণির রাজনৈতিক নেতাদেরও প্রাণের দাবি ছিল।
এই বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি কালজয়ী সংবিধান রচিত হয়েছে। এই সংবিধানের মৌলিক লক্ষ্যই হচ্ছে এমন একটি রাষ্ট্র পরিচালনা করা, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বৈষম্যবিহীন সাম্যের সমাজ ও অর্থনীতির বিকাশকে ত্বরান্বিত করবে। তেমন রাষ্ট্র বিনির্মাণের অভিপ্রায়ে স্পষ্টতই প্রতিফলিত হয় প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দুশটিরও বেশি জনবান্ধব আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায়। বিশ্ববাসী জানেন বাংলাদেশের এগিয়ে যাবার সেই পথটি হঠাৎ করেই রুদ্ধ করে দেয়া হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। এরপর থমকে যায় বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অভিযাত্রা। তা সত্ত্বেও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে উদারনৈতিক সেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির নেতৃত্ব এখনো সামনের কাতারে।
সমকালীন বাস্তবতায় সামাজিক সুস্থিতি ও উন্নয়নের স্বার্থেই মুক্তিযুদ্ধের মতোই জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তবে মধ্যবিত্তের একাংশের সুবিধাবাদিতা দুর্নীতি প্রবণতা, স্বেচ্ছাচারিতাগুলোকেও খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হলে মধ্যবিত্তের প্রগতিশীল অংশ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সাহসী ভূমিকা অপরিহার্য। আশার কথা মধ্যবিত্তের তরুণ সন্তানরা ফের মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনাকে বুকে ধারণ করে যুদ্ধাপরাধী ঘাতক দালালদের উপযুক্ত শাস্তির পক্ষে বিশাল জনমত গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। এই চেতনাকে আরও শাণিত করা গেলে মুক্তিযুদ্ধের মৌল আকাঙ্ক্ষা সঠিক মুক্তি অর্জন করা নিশ্চিত সম্ভব হবে। এই মৌল চেতনার পক্ষে লড়াই নিঃশেষ হবার নয়। আশা করছি, এই পর্যায়ের সংগ্রামেও মধ্যবিত্ত নেতৃত্ব জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে তার যোগ্য ভূমিকা পালনে পিছপা হবে না। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ সেই পথে অনেকটাই এগিয়েছে। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এই বাংলাদেশ এগিয়ে চলুক সেই প্রত্যাশাই করছি। আসলেই আমরা সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে মানুষের খাওয়া পরার নিশ্চয়তার পাশাপাশি মনুষ্যত্বের পুরো গৌরব দাবি করা সম্ভব।
লেখক: সম্মানীয় অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে