উদ্যোগ নিলেও পুরোপুরি চালু হচ্ছে না মেট্রোরেলের অনলাইন রিচার্জ
রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহন হিসেবে ইদানিং সবচেয়ে জনপ্রিয় মেট্রোরেল। বিশ্বমানের সেবা দিয়ে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করলেও টিকিট কাটা এবং পাস রিচার্জ করার পদ্ধতি এনালগই রয়ে গেছে। স্থায়ী পাসে টাকা রিচার্জ করার জন্য এবং একক ভ্রমণের টিকিট কাটতে এখনো স্টেশনে গিয়ে লাইন দিতে হয়।
স্টেশনে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটা বা পাস রিচার্জ করার ফলে সেবাগ্রহীতারা প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায় পড়ছেন। অন্যদিকে গত প্রায় ৬ মাস ধরেই স্থায়ী কার্ডের সংকট চলছে। সবমিলিয়ে দেখা দিয়েছে একধরনের বিশৃঙ্খল অবস্থা। এই অবস্থা কর্তৃপক্ষ ঘরে বসেই টিকিট কাটা এবং রিচার্জ করার উদ্যোগ নিলেও প্রযুক্তিগত জটিলতায় পরিপূর্ণভাবে চালু করা সম্ভব হবে না অনলাইন রিচার্জ সিস্টেম।
উল্লেখ্য, মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল); কিন্তু স্থায়ী বা র্যাপিড পাস সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। স্থায়ী পাসের রিচার্জ আরও সহজ করার কাজটিও ডিটিসিএর হাতে রয়েছে।
ডিটিসিএ ঠিকাদারের মাধ্যমে র্যাপিড পাস সংগ্রহ করে তা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে দেয়। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ চার কিস্তিতে ডিটিসিএ থেকে ৭৫ হাজারের মতো কার্ড পেয়েছে যার প্রায় সবই বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে, একদিকে যেমন যাত্রীদের নতুন কার্ড বা পাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না অন্যদিকে উদ্যোগের অভাবে হচ্ছে না অনলাইন রিচার্জ।
এদিকে একাধিক সূত্রে জানা যায়, একক ভ্রমণের টিকিট কাটা এবং পাস রিচার্জের জন্য যে সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, সেটির দায়িত্বেও রয়েছে ডিটিসিএ। ফলে ডিটিসিএ এবং ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জন্যও অনলাইন রিচার্জ করার পুরো প্রক্রিয়াটি দেরি হচ্ছে বলে জানায় সূত্রটি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে খুব দ্রুত মেট্রোরেলের এমআরটি পাসের অনলাইনের রিচার্জের পরিষেবা দেয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশা করছি খুব দ্রুতই এই বিষয়ে যাত্রী সাধারণকে সুখবর দিতে পারব।’
অন্যদিকে ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র্যাপিড পাস রিচার্জ করার ব্যবস্থা চালু করতে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রাথমিক দরপত্র আহ্বান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে ৩৩টি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। জাইকার সহযোগিতায় ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ক্লিয়ারিং হাউস ফর ইন্টিগ্রেটিং ট্রান্সপোর্ট টিকিটিং সিস্টেম ইন ঢাকা সিটি অ্যান্ড অ্যাডজাসেন্ট ডিস্ট্রিক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে অনলাইনে র্যাপিড পাস রিচার্জ করার এ নতুন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অনলাইন রিচার্জ চালু হলে মুঠোফোনে বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে র্যাপিড পাসে টাকা ভরা যাবে। তবে এর জন্য মুঠোফোনে নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এএফসি) সুবিধা থাকতে হবে। এএফসি সুবিধা না থাকলেও পাস রিচার্জ করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে রিচার্জ করার পর মেট্রোরেলের স্টেশনে থাকা যন্ত্রে স্পর্শ করে তা সমন্বয় করে নিতে হবে। অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে চালু হচ্ছে না অনলাইন সেবা।
এই অবস্থার সম্ভাব্য সমাধান কী হতে পারে সে বিষয়ে জানতে ডিটিসিএর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া টেলিফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে