অসহায় বিধবা হেরন্তি কোচের মানবেতর জীবনযাপন
কোচ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অসহায় বিধবা নারী হেরন্তি কোচের ভাগ্যে স্বামী মারা যাওয়ার ১৩ বছরেও জোটেনি একটি সরকারি ঘর। স্থানীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সুফল মেলেনি। ছেলেকে নিয়ে ভাঙা ঘরে এখন মানবেতর জীবনযাপন তার।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের দিনমজুর মৃত অশ্বিনী কোচের স্ত্রী হেরন্তি কোচ। শ্রম বিক্রি করে স্ত্রী-ছেলেসহ তিন সদস্যের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। ২০১১ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। সহায়-সম্বল সবকিছু স্বামী অশ্বিনী কোচের চিকিৎসার পিছনে ব্যয় করেও বহু টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন হেরন্তি কোচ। টাকার অভাবে তাই থাকার ভাঙার ঘরটিও আর মেরামত করতে পারেননি।
স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে দিনমজুরি করে ছেলেকেসহ কোনোমতে বেঁচে আছেন হেরন্তি কোচ। তিনি জানান, একদিন কাজে না গেলে যেতে পারলে অনাহারে অর্ধাহারে কাটে। থাকার ঘরটিও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সারারাত বসে কাটাতে হয়।
তিনি জানান, একটি সরকারি ঘর পেতে স্থানীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহুবার আবেদন-নিবেদন করেছেন। বিভিন্ন সময় আশ্বাসও পেয়েছেন। কিন্তু আজো ভাগ্যে জোটেনি সেটি।
হেরন্তি কোচের অভিযোগ, ঘর পেতে ২৫/৩০ হাজার টাকা চান জনপ্রতিনিধিরা। টাকা দিতে না পারায় তাকে ঘর দেয়া হচ্ছে না।
সমতলের আদিবাসী, যাদের বাড়ির পাঁচ শতাংশ ভিটা আছে, কিন্তু ঘর তৈরির সামর্থ্য নেই, তেমন গৃহহীন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনে প্রতি বছর ঘর বরাদ্দ আসে। স্থানীয়দের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে সরকারি ঘর পেয়েছেন অর্থশালীরাও।
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংগঠন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ঝিনাইগাতি উপজেলা শাখার চেয়ারম্যান নবেশ খকশী বলেন, হেরন্তি কোচের জন্য এবার সুযোগ নেই। পরবর্তীতে বরাদ্দ পাওয়া গেলে দেখা যাবে কি করা যায়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে