ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ
আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এক দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার তৎকালীন রমনা রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভায় ঐতিহাসিক ভাষণে জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে উদ্দীপ্ত করেছিলেন। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’– এ দৃপ্ত উচ্চারণে বঙ্গবন্ধু সেদিন পাকিস্তানের নিষ্পেষণ থেকে বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র ঘোষণা করেছিলেন তাঁর ভাষণে।
মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণ। এই স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি তাঁর ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকান্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সে ভাষণ পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র হয়ে পড়ে। মূলত বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণে উদাত্ত আহ্বানেই মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে বাঙালি। পরে ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
দিনটিকে বাঙালির ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেন তারা। ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলোতে প্রকাশ করা হবে বিশেষ নিবন্ধ।
দিনটি স্মরণে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে রয়েছে– ভোর সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন; সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ এবং বিকেল ৪টায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে রয়েছে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ৭ মার্চ উপলক্ষে কেন্দ্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালনের জন্য দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক এবং সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে