Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

তাবলিগে সংঘাত এলো যেভাবে

Manik Miazee

মানিক মিয়াজী

বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ল্লাহর বিধান, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনাসহ ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি সাধারণ মুসলমানদের আগ্রহী করে তুলতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবি রহ. ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন তাবলিগ জামাত। শুরু থেকেই আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান ও নামাজের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছিলেন তাবলিগের মুরব্বিরা। উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশেও তাবলিগ জামাতের প্রসার ঘটে।

শুরু থেকে ‘সুসংঘটিত’ থেকে দাওয়াতি কাজ পরিচালনা করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাবলিগে বিভক্তি দেখা দেয়। দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করায় শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। এই বিশৃঙ্খলা রূপ নিয়েছে সংঘাত-সংঘর্ষেও। ঘটেছে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও। তার ধারাবাহিকতায় টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা ‘জুবায়েরপন্থি’ ও ‘সাদপন্থি’দের মধ্যে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সংঘর্ষ হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি আহত হয়েছেন শতাধিক।

তাবলিগের সঙ্গে সম্পৃক্তরা জানিয়েছেন, তাবলিগ জামাতে বিভক্তি শুরু হয় মূলত দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজকে কেন্দ্র করে। মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবির দর্শনের ওপর ভিত্তি করে তাবলিগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা আমির। শুরুতে তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নেতৃত্ব এবং নীতিমালা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়।

ইলিয়াস কান্ধলবির মৃত্যুর পর তার ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ আমির হন। বংশ পরম্পরায় বিভিন্ন ব্যক্তির নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আমিরের দায়িত্বে আছেন মাওলানা সাদ। তবে মাওলানা জুবায়েরও নেতৃত্বের দাবিদার ছিলেন। এ নিয়েই শুরু হয় দ্বন্দ্ব।

তাবলিগের এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে ২০১৬ সালের ১৯ জুন। ওইদিন দিল্লিতে সংগঠনটির মূল কেন্দ্র বা মারকাজে দুই পক্ষের মারামারি হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যেও মারামারি হয়। এর জেরে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ মারকাজটি দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধও করে দেয়।

মাওলানা সাদকে নিয়ে বাংলাদেশে বিভেদ প্রকাশ্যভাবে দেখা দেয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা থেকে। তাবলিগ জামাতের যে অংশটি সাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তারা মূলত মাওলানা জুবায়েরপন্থি। তাদের প্রবল বিরোধিতার কারণে সে সময় ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি সাদ। তখন সাদ ও তার অনুসারীরা কাকরাইলে তাবলিগের প্রধান কেন্দ্র বা মারকাজে অবস্থান নেন। এরপর থেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।

২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল রাজধানীর বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে ছাত্রদের নিয়ে এসে কাকরাইলের মারকাজের নিয়ন্ত্রণ নেন জুবায়েরপন্থিরা। পরদিন কয়েক হাজার সাদপন্থি কাকরাইলে উপস্থিত হলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জুবায়েরপন্থি ও সাদপন্থিদের দ্বন্দ্বের কথা গণমাধ্যমে এসেছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ