Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

সবার জন্য বীমা, এটাই হোক জাতীয় বীমা দিবসের অঙ্গীকার

M A  Khaleque

এম এ খালেক

শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪

জ পহেলা মার্চ পঞ্চম জাতীয় বীমা দিবস। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জাতীয় বীমা দিবস নানা কারণেই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো জাতীয় বীমা দিবস পালন করা হয়। মাঝখানে এক বছর করোনার কারণে জাতীয় বীমা দিবস পালিত হয়নি। জাতীয় জীবনে বীমা শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা কীভাবে অবদান রাখতে পারে, সে সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্যই জাতীয় বীমা দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়। পহেলা মার্চ জাতীয় বীমা দিবস পালনের পেছনে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যুক্ত রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ পাকিস্তান আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদানের মাধ্যমে বীমা শিল্পে কাজ শুরু করেছিলেন। বীমা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর যুক্ত হওয়ার ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই মূলত পহেলা মার্চ জাতীয় বীমা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সেই সময় পাকিস্তান সরকার প্রকাশ্যে রাজনীতি চর্চা নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে বঙ্গবন্ধু বীমা শিল্পে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে আর্থিক কোনো কারণ যুক্ত ছিল না। বরং বীমা শিল্পে কাজ করার আড়ালে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ পান। বীমা শিল্পে কর্মরত থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগসূত্র স্থাপনের সুযোগ পান। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করেন। এ কারণে বঙ্গবন্ধুর বীমা শিল্পে যোগদানের ঘটনার রাজনৈতিক তাৎপর্যও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময় বঙ্গবন্ধু যদি বীমা শিল্পে যোগদান না করতেন, তাহলে তার রাজনৈতিক চর্চা বাধাগ্রস্ত হতে পারতো। কাজেই বঙ্গবন্ধুর বীমা শিল্পে যোগদানের তারিখ পহেলা মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছেন।

আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় বীমা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষকে বীমা পলিসি গ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা। আমাদের দেশের সাধারণ মাানুষতো বটেই শিক্ষিত জ্ঞানী মানুষের মধ্যেও বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, জীবন বাঁচানোর মালিক আল্লাহ। কাজেই বীমা করলেই যে জীবন বাঁচবে, তা কী করে হয়। তাই তারা বীমা পলিসি গ্রহণের আবশ্যকতা বুঝতে চান না; কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই জীবন বাঁচানোর মালিক; কিন্তু বীমা শিল্প মানুষের জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব গ্রহণ করে না। কাউকে শারীরিক ক্ষতি থেকে বাঁচানোর দায়িত্বও বীমা শিল্পের নয়। বীমা শিল্প কারও জীবন হানি হলে অথবা কোনো দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আর্থিক এবং শারীরিক ক্ষতির শিকার হলে তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকে। কাজেই বলা যায়, বীমা শিল্প মানুষের জীবন বাঁচাতে নয়, জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে সহায়তা করে।

আমাদের দেশে দুধরনের বীমা কোম্পানির অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ করা যায়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে সাধারণ বীমা, যারা মানুষের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কাজ করে। আর এক শ্রেণির বীমা হচ্ছে জীবন বীমা। জীবন বীমা মানুষের শারীরিক ক্ষতি হলে আর্থিক এবং অন্যান্যভাবে সহায়তার চেষ্টা করে। কোনো বীমা শিল্পই মানুষের জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব গ্রহণ করে না। কারও কারও মনে এমন একটি ধারণা বদ্ধমূল হয়ে আছে যে, বীমা পলিসি গ্রহণ করা ইসলামসম্মত নয়; কিন্তু এটা অজ্ঞতাপ্রসূত একটি ধারণা মাত্র। কারণ বীমা পলিসি গ্রহণের সঙ্গে ইসলামের কোনো বিরোধ নেই। ইসলামের সূচনালগ্নে আরব দেশের মানুষ নানাভাবে বীমা পলিসি গ্রহণ করত। তারা ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে দূর দেশে গমনকালে পথে সম্পদের কোনো ক্ষতি হলে সেই ক্ষতি পুনর্ভরনের জন্য এক ধরনের বীমা পলিসি গ্রহণ করতেন। যদিও সেই বীমা পলিসি বর্তমান সময়ের মতো এতটা আধুনিক বা পরিকল্পিত ছিল না।

বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে এক ধরনের অনীহা প্রত্যক্ষ করা যায়। তারা বীমা পলিসি গ্রহণের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে না বলেই বীমা সম্পর্কে এমন উদাসীন। সামর্থ্যবান অনেক মানুষও বীমা পলিসি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রদর্শন করেন না। একটি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি যদি কোনো সময় দুর্ঘটনায় বা অন্য কোনো কারণে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মুখে পতিত হন, তাহলে পুরো পরিবার এক সময় আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। অথচ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যদি বীমা পলিসি গ্রহণ করা থাকত, তাহলে মৃত্যুর পর পরিবার কিছুটা হলেও আর্থিক সাপোর্ট পেতে পারত।

নর্থ সাউথ ইউনির্ভার্সিটির একজন অধ্যাপক সম্প্রতি দেশের বীমা শিল্পের অবস্থা নিয়ে একটি গবেষণা কার্য সম্পাদন করেছেন। এতে প্রতীয়মান হয়েছে যে, দেশের মানুষ বীমার সুফল সম্পর্কে তেমন একটা সচেতন নন। বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতা। বীমা শিল্পে যারা কাজ করছেন, তারা এখনো সাধারণ মানুষের মাঝে বীমা শিল্পের গুরুত্ব সেভাবে তুলে ধরতে পারেননি। বীমা দাবি নিষ্পত্তিতে কোনো কোনো বীমা কোম্পানির গাফিলতি, প্রক্রিয়াগত জটিলতা, দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে অহেতুক সময়ক্ষেপণ, এজেন্ট বা প্রতিনিধিদের প্রতারণা এবং তাদের কাছে থেকে প্রত্যাশিত সেবা না পাওয়া ইত্যাদি নানা কারণে সাধারণ মানুষ বীমা শিল্পের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। তারা মনে করেন, বীমা পলিসি গ্রহণ করে প্রতারিত হবার চেয়ে পলিসি গ্রহণ না করাই ভালো। বীমা কোম্পানির প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার প্রসঙ্গ উঠে এলেও সেই আস্থাহীনতা কোনো দূরীকরণ করা যাচ্ছে না, সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট ভাবে কিছু বলা হয়নি।

দেশের বিভিন্ন শহরের ১ হাজার ২৮০ জন অংশগ্রহণকারীর মতামতের ভিত্তিতে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রায় ২ বছর সময় নিয়ে প্রণীত এই গবেষণা প্রতিবেদনে এই সেক্টরের পূর্ণাঙ্গ চিত্র ফুটে না উঠলেও এ থেকে প্রাথমিক ধারণা গ্রহণ করা যেতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছর বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ বীমা পলিসির আওতায় ছিল। এটা বিশ্বের ৮৫তম অবস্থান। অর্থাৎ বিশ্বের ৮৪টি দেশের মানুষ বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে থাইল্যান্ড। দেশটিতে মোট জনসংখ্যার ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ বীমা পলিসির আওতায় রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মালয়েশিয়া। তাদের ৫ শতাংশ মানুষ বীমা পলিসির আওতায় রয়েছে। ভারতে বীমা পলিসি গ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা ৪ শতাংশ, চীনে এটা ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। ভিয়েতনামে বীমা পলিসি গ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়ায় বীমা পলিসি গ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা যথাক্রমে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ ও ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ বীমা পলিসির আওতায় রয়েছে, যা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে সর্বনিম্ন।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মতে, বাংলাদেশ বীমা শিল্পের অগ্রযাত্রায় বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বাসের অভাব। মানুষ বীমা কোম্পানিগুলোকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস করতে পারছে না। তাদের মনে বিশ্বাস জাগ্রত করার মতো কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারছে না বীমা কোম্পানিগুলো। দাবি নিষ্পত্তিতে প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেকেই বীমা পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বীমা পলিসি গ্রহণের আবশ্যকতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাব রয়েছে। ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি (আইডিআরএ) সূত্রে জানা যায়, দেশের মোট ৮১টি বীমা কোম্পানি ব্যবসায়রত রয়েছে। এর মধ্যে জীবন বীমা ৩৫টি এবং সাধারণ বীমা ৪৬টি। এসব বীমা কোম্পানিতে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বীমা কোম্পানি প্রায় একই ধরনের সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছে। তারা বৈচিত্র্যময় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তেমন একটা সাফল্য প্রদর্শন করতে পারছে না। যেসব কারণে বীমা কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম সেভাবে বিস্তৃত হতে পারছে না তার জন্য নতুন সেবা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা অন্যতম। শিশু শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা, অপ্রত্যাশিত অসুস্থতা, জমি ক্রয়, অবসরকালিন সময়ের জন্য সঞ্চয় ভ্রমণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বীমা পলিসি প্রচলনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও এখনো তা কাজে লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বীমা গ্রহীতার হার বাড়ছে না। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় বীমা পলিসি গ্রহীতার সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ২০০৮ সালে দেশের মোট শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ মানুষ বীমা কাভারেজের আওতায় ছিল। এর মধ্যে জীবন বীমা পলিসি গ্রহীতার হার ছিল শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ এবং সাধারণ বীমা পলিসি গ্রহীতার হার ছিল শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০১৯ সালে মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। এর মধ্যে জীবন বীমা পলিসি গ্রাহক ছিলেন শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ ও সাধারণ বীমা পলিসি গ্রহণকারি ছিলেন শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২০ সালে মোট বীমা গ্রহীতার হার ছিল শূন্য দশমিক ৪২ শতাশ। এর মধ্যে জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা গ্রহীতা ছিলেন যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ। ২০২১ সালে মোট বীমা গ্রহীতার হার ছিল শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা পলিসি গ্রহীতা ছিলেন যথাক্রমে শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ। ২০২২ সালে মোট বীমা পলিসি গ্রহীতার হার ছিল শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা পলিসি গ্রহীতার হার ছিল যথাক্রমে শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ।

সার্বিকভাবে বীমা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে না। অথচ বীমা পলিসি গ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারতো। বীমা পলিসি গ্রহীতার হার এক শতাংশ বৃদ্ধি পেলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে ২ শতাংশ। জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক কর্তৃক নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ কার্যকর উন্নত দেশের মর্যাদা লাভের জন্য জাতীয়ভাবে অঙ্গিকারবদ্ধ। জাতিসঙ্ঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হবে। আগামীতে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য আরো অনেকগুন বৃদ্ধি পাবে। সেই সময় বাংলাদেশের মানুষকে আরো বেশি করে নিরাপত্তা সচেতন হতে হবে।

একটি দেশের জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা শিল্প তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোনোভাবেই এই অবদান বা ভূমিকাকে অস্বীকার করা যাবে না। উন্নত দেশগুলোর নাগরিকদের অধিকাংশই বীমা পলিসির আওতায় রয়েছে। ফলে কোনো সময় কর্মক্ষেত্রে বা চলাচলের সময় দুর্ঘটনায় পতিত হলে তাদের আর্থিক সংকটে পড়তে হয় না। তারা এই দুর্যোগের সময় বীমা কোম্পানি থেকে সাপোর্ট পেয়ে থাকেন। কেউ চাকরি হারালে বা অন্য কোনো কারণে বেকার হয়ে পড়লেও তাদের সাপোর্ট দেবার মতো ব্যবস্থা আছে। উন্নত দেশগুলোতে দেহের প্রতিটি অঙ্গের আলাদা আলাদাভাবে বীমা পলিসি গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ যেহেতু এখনো বীমা শিল্পের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন নন, তাই তাদের ক্ষেত্র বিশেষে বাধ্যতামূলকভাবে বীমার আওতায় আনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরিতে যেমন গ্রুপ বীমা পলিসি গ্রহণের ব্যবস্থা আছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও সেভাবে বাধ্যতামূলকভাবে বীমা পলিসি গ্রহণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে বীমা পলিসি গ্রহণ কোনো বিলাসিতা নয়। এটা আর্থিক এবং শারীরিক ক্ষতি হলে তা থেকে উত্তরণের জন্য একটি চমৎকার ব্যবস্থা। তাই দেশের প্রতিটি নাগরিককে তাদের স্বার্থেই বীমা পলিসির আওতায় আসা প্রয়োজন।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ