হজে গিয়ে প্রচণ্ড গরমে মারা গেছেন ১৩শ’ জনেরও বেশি
সৌদি আরবে চলতি বছরের হজ চলাকালে মরুভূমির পবিত্র স্থানগুলোতে চরম তাপমাত্রার কারণে ১৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
রোববার (২৩ জুন) সৌদি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানায়। খবর ইউএনবি।
সৌদি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বিন আব্দুররহমান আল-জালাজেল জানান, নিহত ১ হাজার ৩০১ জনের মধ্যে ৮৩ শতাংশই অননুমোদিত হজযাত্রী। তারা পবিত্র নগরী মক্কা ও এর আশেপাশে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য প্রচণ্ড তাপমাত্রার মধ্যে দীর্ঘ পথ হেঁটেছেন।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল এখবারিয়া টেলিভিশনকে মন্ত্রী বলেন, ৯৫ জন হজযাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে রাজধানী রিয়াদে চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃত হাজিদের অনেকের সঙ্গে পরিচয়পত্র না থাকায় পরিচয় শনাক্ত করতে দেরি হয়েছে।
তিনি জানান, মৃতদের মক্কায় দাফন করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ৬৬০ জনেরও বেশি মিসরীয় নাগরিক। কায়রোর দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৩১ জন ছাড়া বাকি সবাই অননুমোদিত হজযাত্রী ছিলেন। অননুমোদিত হজযাত্রীদের সৌদি আরব ভ্রমণে সহায়তাকারী ১৬টি ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করেছে মিসর।
সাংবাদিকদের ব্রিফ করার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ নিহতের ঘটনাই মক্কার আল-মুয়াইসেম এলাকার জরুরি কমপ্লেক্সে ঘটেছে। চলতি বছর সৌদি আরবে ৫০ হাজারের বেশি অনুমোদিত হজযাত্রী পাঠিয়েছে মিসর।
সৌদি কর্তৃপক্ষ অননুমোদিত হজযাত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার লোককে বহিষ্কার করে। তবে অনেকেই পায়ে হেঁটে মক্কা ও এর আশপাশের পবিত্র স্থানগুলোতে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। তাদের বেশিরভাগই মিসরীয়। অনুমোদিত তীর্থযাত্রীদের বিপরীতে, প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে তাদের ফিরে আসার জন্য কোনৈা হোটেল ছিল না।
নিহতদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ১৬৫ জন, ভারতের ৯৮ জন এবং জর্ডান, তিউনিসিয়া, মরক্কো, আলজেরিয়া ও মালয়েশিয়ার বেশ কিছু সংখ্যক হাজি রয়েছেন। এছাড়া দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) নিজস্ব গণনা অনুযায়ী এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তা সংস্থা এপি স্বাধীনভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে না পারলেও জর্ডান ও তিউনিসিয়ার মতো কয়েকটি দেশ এই বাড়তি গরমকে দায়ী করেছে। বিশেষ করে হজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে প্রচণ্ড গরমে হাজিদের অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখেছেন এপির সাংবাদিকরা। কেউ কেউ বমি করে পড়ে যান।
ঐতিহাসিকভাবে হজে মৃত্যু অস্বাভাবিক কিছু নয়, যেখানে এ সময় ২০ লাখেরও বেশি লোক পাঁচ দিনের তীর্থযাত্রার জন্য সৌদি আরব ভ্রমণ করে। তীর্থযাত্রার ইতিহাসে বিপুল সংখ্যক মানুষকে পায়ের নিচে পিষ্ট হয়েও মারা যেতে দেখা গেছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে