সাইফ আলি খানের বাড়িতে পাওয়া নমুনার সঙ্গে শরিফুলের আঙুলের ছাপ মেলেনি
বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশি শরিফুল ইসলাম শেহজাদ। তবে, তাকে গ্রেপ্তারের এক সপ্তাহ পর প্রশ্ন উঠেছে, হামলার রাতে মুম্বাইয়েরে বান্দ্রা অভিজাত আবাসিক এলাকায় সাইফের বাড়িতে যিনি ঢুকেছিলেন, তিনি আদৌ শরিফুল ছিলেন কি না?
রোববার (২৬ জানুয়ারি) এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, সাইফ আলি খানের বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা নমুনার সঙ্গে শরিফুলের আঙুলের ছাপ মেলেনি। গ্রেপ্তারের পর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য তার ১০টি আঙুলের ছাপ পাঠানো হয়েছে।
মহারাষ্ট্র সিআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টে দেখা যায় যে, সাইফের বাড়িতে পাওয়া ১৯টি নমুনার মধ্যে একটিও শরিফুলের সঙ্গে মেলেনি।
তাই আদৌ শরিফুলই সাইফের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শরিফুলের বাবাও বাংলাদেশ থেকে দাবি করেছেন, পুলিশের প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাওয়া ব্যক্তিটি তার ছেলে শরিফুল নয়।
১৬ জানুয়ারি ভোরে সাইফকে রক্তাক্ত অবস্থায় মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তির পর দাবি করা হয়, আগের রাতে একজন দুষ্কৃতি ডাকাতির উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে ঢুকেছিল। এতে বাধা দেয়ায় হামলাকারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাইফের ওপর হামলা চালায়। অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসা শেষে ২১ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরেন তিনি।
১৮ জানুয়ারি মুম্বাই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সদস্যরা থানের শ্রমিক বসতি থেকে শরিফুলকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম একজন অবৈধ অভিবাসী, যিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন। তার কাছ থেকে একটি বাংলাদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য নথি জব্দ হয়েছে। এসব নথি প্রমাণ করে, তিনি বাংলাদেশের বরিশাল সদর এলাকার বাসিন্দা এবং তার জন্ম ১৯৯৪ সালের ১২ মার্চ। তার বাবার নাম মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
তবে, শরিফুলের বাবা মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্বীকার করেন যে, আটক ব্যক্তিটি তার ছেলে, কিন্তু তিনি এই অপরাধে জড়িত নন বলে দাবি করেন।
রুহুল আমিন ভারতীয় গণমাধ্যম এবিপি আনন্দকে ফোনে বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা ব্যক্তিটি আমার ছেলে নয়। আমি ছবিটি দেখেছি। ফুটেজে যে ব্যক্তিকে দেখা গেছে, তার চুল বড় এবং চোখের ওপর পড়েছে। ও আমার ছেলে নয়। তার চেহারাও আলাদা। আপনার দেশ অনেক বড় এবং অনেক মানুষের চেহারা একই রকম হতে পারে। এমনকি বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশেও অনেক মানুষের চেহারার মিল রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে শরিফুল বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যায় এবং সেখানে চাকরি করত।’
শরিফুল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সমর্থক ছিলেন এবং শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় ফেরার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে হুমকি পান বলেও দাবি তার বাবার। শরিফুল প্রথমে পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন। পরে ভালো কাজের সন্ধানে মুম্বাই চলে যান।
তবে, পুলিশ জানিয়েছে, শরিফুল দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি।
অন্যদিকে পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে এর আগে ভারতের গণমাধ্যম দাবি করেছিল, অভিযুক্ত শরিফুল বলেছেন, তিনি বাংলাদেশে ফেরত যেতে চান। তার দাবি, তার উদ্দেশ্য ছিল, কেবল অর্থ চুরি করা, কাউকে আঘাত করা নয়।
শরিফুল পুলিশকে জানান, তিনি গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চাকরি হারান এবং আর্থিক সমস্যার মুখে পড়েন। তিনি অভিনেতা সাইফ আলী খানের বাড়ি থেকে অর্থ চুরি করে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে