Views Bangladesh Logo

নির্ধারিত হচ্ছে স্টারলিংকের সেবার ‘পরিধি’, বড় ছাড় পাবে অপারেটররা

দেশে শিগগিরই চালু হতে যাওয়া স্টারলিংকের সেবার ‘পরিধি’ ঠিক করে দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশি স্যাটেলাইট খাত ও এ সংশ্লিষ্ট অন্য সেবাদাতাদের স্বার্থরক্ষায় এই ‘পরিধি’ নির্ধারণ ছাড়াও আরও কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এ লক্ষ্যে প্রথম দফায় অনুমোদিত নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট (এনজিএসও) সেবা গাইডলাইনে পরিবর্তন ও সংযোজন এনেছে বিটিআরসি। আর এটি চেয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

পরিবর্তন ও সংযোজনের পর বিটিআরসি এসজিএসও সেবা গাইডলাইন দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

এবার গাইডলাইন অনুসারে, এনজিএসও সেবাদাতারা ইন্টারনেট সার্ভিস (ডোমেস্টিক ডাটা কমিউনিকেশন), আর্থ এক্সপ্লোরেশন স্যাটেলাইট সার্ভিস, রিমোট সেন্সিং, আবহাওয়াসংক্রান্ত সেবা এবং বিটিআরসি নির্ধারিত অন্য কোনো সেবা যদি থাকে, সেগুলো দিতে পারবে না। আগের গাইডলাইনের ১৬.৪ অনুচ্ছেদে এনজিএসওদের অন্য সেবার সঙ্গে ইন্টারনেট সার্ভিস (ডোমেস্টিক ডাটা কমিউনিকেশন) ও আর্থ এক্সপ্লোরেশন স্যাটেলাইট সার্ভিস, রিমোট সেন্সিং, আবহাওয়া সংক্রান্ত সেবা দেয়ার বিষয়টিও ছিল। নতুন গাইডলাইনে এনজিএসও সেবাদাতারা শুধুমাত্র ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), মেশিন টু মেশিন যোগাযোগ, আর্থ স্টেশন ইন মোশন এবং প্রতিটি সাইটের জন্য বিটিআরসির অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যাকহল সেবা দিতে পারবে।

অন্যদিকে এনজিএসজিও কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের স্যাটেলাইট অপারেটরের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করলে ফি ও চার্জে বড় ছাড় পাবে। এই ছাড় হবে ২৫ শতাংশ। গাইডলাইনে এই সংযোজন হয়েছে ৭.২ অনুচ্ছেদে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশে বিদেশি এনজিএসও স্যাটেলাইট অপারেটর সেবা চালুর পর দেশের স্যাটেলাইট খাতসহ অন্য সংশ্লিষ্ট সেবা বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। দেশের এই খাতের ইকোসিস্টেম উন্নয়ন ও স্বার্থরক্ষায় নতুন করে এই পরিবর্তন ও সংযোজন।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশে গ্রাউন্ড আর্থস্টেশন স্থাপনে বেশ কয়েকটি দেশি প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। যার অংশ হিসেবে স্টারলিংকের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করছেন। এরই মধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে একাধিক প্রতিষ্ঠান যৌথ অংশীদারিত্বে কাজ করতে চুক্তিস্বাক্ষর করেছেও।

এই অংশীদারিত্বের আওতায় মহাকাশে স্পেস বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা এবং চলমান অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংক বাংলাদেশের শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চল, উত্তরাঞ্চল এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করবে, যা লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের বাধা থেকে মুক্ত থাকবে।

তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশে টেলিকম-গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের কভারেজ সীমিত এবং অনেক দূরবর্তী এলাকায় এখনও লোডশেডিং সমস্যা রয়েছে, স্টারলিংক দেশের উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও এবং এসএমই ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং ডিজিটাল অর্থনৈতিক উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করবে।

চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা, টেসলা ও এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক।

এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ এবং দেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর আহবান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস তার হাই-রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমানকে নির্দেশ দেন, যেন তিনি স্পেসএক্স দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করেন, যাতে আগামী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করা যায়।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ