Views Bangladesh Logo

ভিউজ বাংলাদেশের অনুসন্ধান

ভারত থেকে পরিচালিত আন্তর্জাতিক ‘কনফারেন্স স্ক্যামার’ গ্রুপের প্রতারণার ফাঁদে শিক্ষক ও গবেষকরা

Rased Mehedi

রাশেদ মেহেদী

নফারেন্সের শিরোনামগুলো অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী। আয়োজক সংগঠনের নামও আকর্ষণীয়। সংগঠনের ওয়েবসাইট খুব ভালো ডিজাইনের এবং সুনির্মিত। যে কেউ প্রথম দেখায় বিশ্বাস করতে বাধ্য যে এটি সত্যিই একটি আন্তর্জাতিক বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা সংগঠন; কিন্তু বাস্তবে এই সাইটগুলো সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ফাঁদ। প্রতি বছর প্রায় একশ কনফারেন্সের তালিকা ওয়েবসাইটে দিয়ে কনফারেন্স ফি আদায়ের নামে প্রতারণার মাধ্যমে শত শত ডলার হাতিয়ে নেয়াই হচ্ছে এ চক্রের কাজ। বিভিন্ন নামের একই ধরনের প্রায় ২০টি ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এই সংঘবদ্ধ চক্র। ভিউজ বাংলাদেশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চক্রটি পরিচালিত হচ্ছে ভারত থেকে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা আছেন। এ প্রতারক চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একজন নাগরিকেরও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতারকদের অন্যতম ওয়েবসাইট “Sciencesociety.co” বাংলাদেশি এক নাগরিকের পরিচয় রয়েছে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে।

অনুসন্ধানের শুরু যেভাবে

বাংলাদেশের একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এই চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছিলেন। “Sciencesociety.co” আয়োজিত বিজ্ঞানবিষয়ক একটি সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে অংশ নেয়ার জন্য তিনি ২০২৪ সালের শুরুতে ফি জমা দিয়ে নিবন্ধন করেন। ওয়েবসাইটে ওই সম্মেলনের স্থান ছিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক। সম্মেলনে যোগ দেয়ার ১০ দিন আগে তাকে “Sciencesociety.co” থেকে ই-মেইলে জানানো হয়, সম্মেলনটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে অনুষ্ঠিত হবে। পরে তিনি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে যোগ দিয়ে তার গভীর সন্দেহ হয়, এটি কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলন নয়, বরং প্রতারণার ফাঁদ। প্রতারণার শিকার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের দেয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী শুরু হয় ভিউজ বাংলাদেশের অনুসন্ধান।

সম্মেলনের ফরম পূরণ থেকেই প্রতারণার আলামত: সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য নিবন্ধন করতে হলে অনলাইনে ফরম পূরণ করে অনলাইনেই জমা দিতে হয়। ফরমের তথ্য যাচাইয়ের পর সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিবন্ধন নম্বরসহ একটি নিশ্চিতকরণ ই-মেইল বার্তা দেয়া হয়। এর সঙ্গে একটি পেমেন্ট গেটওয়ের লিংক দিয়ে পেমেন্ট জমা দিতে বলা হয়; কিন্তু এই প্রতারক চক্রের ওয়েবসাইটে ফরম পূরণ করতে গিয়ে দেখা যায় প্রথমেই সম্মেলনে অংশগ্রহণের ক্যাটাগরি (পেপার সাবমিশন, লিসনার, ইনপারসন এবং ভার্চুয়াল) বেছে নিতে হয়। ক্যাটাগরির পাশে কোনটার জন্য কত ফি দিতে হবে, তারও উল্লেখ আছে। ক্যাটাগরি বেছে নিয়ে সোজা যেতে হয় পেমেন্ট অপশনে। পেমেন্ট করার পর পেমেন্ট নিশ্চিত করার একটি রশিদ আসে ই-মেইল বার্তায়। প্রথমে পেমেন্ট করার এই অপশনই প্রথমে সন্দেহের সৃষ্টি করে এই সংগঠন এবং ওয়েবসাইট সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের। এরপর এই চক্রের সাইট থেকে ক্যাটাগরি অনুযায়ী একটি ফরম ডাউনলোড করতে হয়। ফরমে পেমেন্ট রশিদ থেকে ট্রানজেকশন আইডি উল্লেখ করে, সেখানে স্বাক্ষর করে সেটি স্ক্যান করে এরপর তাদের ই-মেইলে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠাতে হয়। এরপর কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলে প্রায় সাত দিন পর তিন থেকে তারা একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠায় যার বাক্যগঠন ও বিন্যাস অত্যন্ত নিম্নমানের।

প্রতারণার দ্বিতীয় অধ্যায়

আপনি একবার পেমেন্ট করলে এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। এই প্রতারণার আর কোনো প্রতিকার পাওয়ার উপায় নেই। তবে প্রতারণার বিষয়টি পুরোপুরি বুঝতে হলে অনুসন্ধানের সঙ্গে আরও এগিয়ে যেতে হবে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে কনফারেন্স তারিখের ঠিক ১০ দিন আগে আপনার কাছে একটি ই-মেইল বার্তা আসবে যেখানে বলা হবে, ‘ফর আনফোরসিন রিজন, টোটাল কনফারেন্স শিফট টু ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরম।’ সেখানে কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য একটি জুম লিংক শেয়ার করা হয়।

নির্ধারিত দিনে জুমে ওই কনফারেন্সে অংশ নিতে গিয়ে দেখা যায়, মোট ৫৯ জন যুক্ত হয়েছেন। মূল বিষয়বস্তু ‘কম্পিউটার সায়েন্স, মেকাট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি’ হলেও যিনি মূল কি নোট পেপার উপস্থাপন করেন তার বিষয়বস্তু ছিল মূলত ক্লাস রুমে কীভাবে নতুন প্রযুক্তি, গাণিতিক সমীকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির হালনাগাদ বিষয়বস্তু সম্পর্কে শিক্ষাদান করতে হয়, সে বিষয়ে। তিনি মূল বিষয়বস্তুতে যাননি। তার ইংরেজি উচ্চারণ ছিল অত্যন্ত দুর্বল। ড. নফুজ মাফারজা মালয়েশিয়ার নাগরিক। এই শিক্ষকের পরিচয় পরে তার ইউনিভার্সিটি অব মালায়ার ওয়েব পেজে পাওয়া যায়। সেখানে তার পরিচয় লেখা আছে সিনিয়র লেকচারারার, ডিপার্টমেন্ট অব ম্যাথমেটিকস অ্যান্ড সায়েন্স এডুকেশন। তিনি মূল বিষয়বস্তুর বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। এ ছাড়া আরও ১৭ জন তাদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। এগুলোর মধ্যে কৃষি খামার থেকে গণিতের কিছু বিষয় ছিল। ভার্চুয়াল কনফারেন্সে একাধিক অংশগ্রহণকারী মূল বিষয়বস্তুর সঙ্গে সংগতিহীন এই কনফারেন্সের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এ সময় সঞ্চালক অনিশ রিটভিক এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কথা না বলার অনুরোধ জানিয়ে তাদের মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেন।

সম্মেলনে উপস্থাপন করা প্রত্যেকটি কি নোট পেপার-পরবর্তী সময়ে অংশগ্রহণকারীদের ই-মেইলে পাঠানোর কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা দেয়া হয়নি। এ ছাড়া যারা সশরীরে সম্মেলনে অংশ নেয়ার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফি পরিশোধ করেছিলেন তাদের তথাকথিত সায়েন্স সোসাইটির লোগো সংবলিত বেশ কিছু স্যুভেনির উপহার হিসেবে দেয়ার কথা বলা হলেও তার কিছুই পরবর্তী সময়ে দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে সায়েন্স সোসাইটির ই-মেইলে মেইল করে জানতে চাওয়া হলে অংশগ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে একটি সার্টিফিকেট পাঠানো হয়। যে সার্টিফিকেটে স্বাক্ষরদাতা হিসেবে অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশি নাগরিক ড. এমডি মনোয়ারুল হকের নাম ও স্বাক্ষর দেখা যায়। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ড. মনোয়ারুল হকের নাম বেসরকারি ফারইস্ট ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাক্টাল্টি মেম্বার, ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া জার্মান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে তার নামের অ্যাসোসিয়েট মেম্বার, ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ দেখনো হয়েছে। এ ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে ড. মনোয়ারুল হক ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, সায়েন্স সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক আগে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। পরে আর তিনি এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক বা খোঁজ খবর রাখেননি। সায়েন্স সোসাইটির সার্টিফিকেটে তার নাম এবং স্বাক্ষর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তার বক্তব্য তুলে ধরে সায়েন্স সোসাইটিকে ই-মেইল করা হলে তারা জানায়, ড. মনোয়ারুল হকের সম্মতি নিয়েই তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রমাণও তাদের কাছে আছে বলে দাবি করে।

ভেন্যু নিয়ে প্রতারণা

নিবন্ধনের সময় থাইল্যান্ডের পাতায়াতে এই কনফারেন্সের মূল ভেন্যু দেখানো হয়েছিল দ্য সিজন হোটেল, পাতায়া। পরে সিজন হোটেলে সশরীরে গিয়ে খোঁজ নেয়া হলে হোটেলের রিসিপশন থেকে জানানো হয়, তারা এই তথাকথিত প্রতিষ্ঠানের কারণে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের কনফারেন্সের কথা বলে অনেকেই টেলিফোনে কিংবা সশরীরে এসে খোঁজ নিচ্ছেন; কিন্তু বাস্তবে সায়েন্স সোসাইটি বা এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান এই হোটেলে কখনই বুকিং দেয়নি কিংবা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো আলাপও করেনি। অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, একই সময়ে (১২ ডিসেম্বর, ২০২৪) সায়েন্স সোসাইটির ওয়েব পেজে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন পেডিয়াট্রিক লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন’ নামে একটি কনফারেন্স এর ভেন্যু দেখানো হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হোটেল ওয়েস্টিন; কিন্তু ওয়েস্টিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এ ধরনের কোনো কনফারেন্সের বুকিং নেই। এমনকি সায়েন্স সোসাইটি নামে কোন প্রতিষ্ঠানের নামেই কোন বুকিং তারা খুঁজে পাননি। অথচ চলতি ফেব্রুয়ারি (২০২৫) মাসের ১৩ তারিখেও সায়েন্স সোসাইটির ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ইটালিয়ান অ্যান্ড ইউরোপিয়ান স্টাডিজ’ নামে একটি কনফারেন্স আয়োজনের কথা বলা হয়; কিন্তু আবারও হোটেল ওয়েস্টিনে খোঁজ নিলে জানানো হয় ‘কোনো বুকিং নেই’।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতারণার আরও প্রমাণ
এ বিষয়ে বিশ্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ গেট থেকে জানা যায়, মূলত একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রায় আকর্ষণীয় নামে প্রায় ২০টির মতো প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়েবসাইট খুলে এই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে “researchsociety.co” “researchfora.net” “itar.in” “internationalconferencealerts.com” “conferencealerts.co.in” “allconferencealert.net” “/conferencenext.com” “after.org.in” “conferencenext.com” “iiter.org”, “asar.net.in”, “iarfconference.com.”

এ ধরনের আরও প্রায় ২০টি সাইট রয়েছে। টেকনিক্যাল অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতারণার মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় “internationalconferencealerts.com” এবং “allconferencealert.net”এই দুটি সাইট। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে নিয়মিত বিজ্ঞাপন দিয়ে এই সাইট দুটি সবার উপরে রাখা হয়। ‘আপকামিং কনফারেন্স’ বা ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স’ এ ধরনের কি ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ দিলে সবার আগে এ দুটি সাইট সামনে চলে আসে। এ সাইটটে সব সময় প্রায় এক থেকে দেড়শ কনফারেন্সের লিস্ট থাকে। সাইটে শুধু আপকামিং কনফারেন্সের তথ্য পাওয়া যায়। পূর্ববর্তী কনফারেন্সের কোনো আর্কাইভ নেই। অর্থাৎ, আগের কনফারেন্স ডেট পার হয়ে গেলে পেজের টেক্সট পরিবর্তন করে নতুন কনফারেন্সের নাম ও তারিখ বসানো হয়। দেখা যায় বিশ্বের যে শহরে ভেন্যু দেখানো হয়েছে সেখানে সবসময় একই হোটেল ‘টেনটেটিভ ভেন্যু’ হিসেবে দেখানো হয়। যেমন পাতায়াতে দ্য সিজনস, ঢাকায় দ্য ওয়েস্টিন।

রিসার্চ গেটের তথ্য অনুযায়ী এই প্রতারক চক্রকে বলা হয় শিকারি ওয়েবসাইট। তাদের টার্গেট মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক। যারা বিভিন্ন কনফারেন্স সম্পর্কে জানতে চান এবং অংশ নিতে চান। তাদের সামনে আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু ওয়েসাইটে উপস্থাপন করে প্রলুব্ধ করা হয় এবং নিবন্ধন ফি হাতিয়ে নেয়া হয়। প্রথমে সশরীরে অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন গবেষণাপত্র উপস্থাপনের কথা বলা হলেও পরবর্তী সময়ে এটি স্থানান্তর করা হয় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে। সেখানে তাদের চক্রের সদস্যরা অংশ নেন বিশেষজ্ঞ হিসেবে। এরপর শিকার হওয়া নিবন্ধনকারীদের কোনোরকমে একটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণ দেখিয়ে তারা নতুন কনফারেন্সে মনোযোগ দেয়। বাস্তবে তাদের কোনো গবেষণা নেই, ফলে প্রকৃত কোনো গবেষকও নেই। এদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অসংখ্য কনফারেন্সের নাম, তারিখ ও ভেন্যু দিয়ে যতজন শিকারিকে নিবন্ধন করানো যায়। তাদের সর্বনিম্ন নিবন্ধন ফি ১৭০ মার্কিন ডলার। প্রতিদিন ১০ জন শিকারি পাওয়া গেলেও আয় ১৭০০ ডলার। মাসে ৫১ হাজার ডলার। এটা সর্বিনিম্ন রেট হিসেবে। সর্বোচ্চ রেট ১ হাজার ৮০০ ডলার ধরা হলে এই আয়ের পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি হবে।

অনুসন্ধানে যতগুলো ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট পাওয়া গেছে, তার সবকটিতে যোগাযোগের জন্য ভারতের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। ওপরের ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে পৃথক ডোমেইনের চারটি প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের নম্বর একই পাওয়া গেছে। এই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ভারতীয় একজন ব্যক্তিই ফোন রিসিভ করেন। প্রতিটি ভার্চুয়াল কনফারেন্স সঞ্চালনাও করেন একজন ভারতের নাগরিক। এ থেকে এটা প্রমাণিত হয়, এ প্রতারক চক্রের মূল হেডকোয়ার্টার ভারতের কোন স্থানে। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সবসময়ই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপন দেখা যায়।

এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, অনলাইনে এখন নানা ধরনের স্ক্যাম রয়েছে। সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে প্রতারক চক্র খুব সহজেই অনলাইন ব্যবহারকারীদের প্রতারিত করছে। এ জন্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর না নিয়ে কোথাও পেমেন্ট করা যাবে না। দেখতে হবে পেমেন্ট গেটওয়ে বিশ্বস্ত কি না। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বিজ্ঞাপনের কারণে প্রতারক চক্র প্রতারণার সহজ সুযোগ পাচ্ছে, এক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিনের কোনো ভূমিকা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার্চ ইঞ্জিনে বিজ্ঞাপন দিয়ে যে কোনো সাইট প্রমোট করার সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিনের কিছু পলিসি আছে। পলিসি ভায়োলেন্স হলে সার্চ ইঞ্জিন অনেক সময়ই প্রমোট করে না। তবে সাধারণের জন্য এই পলিসি জটিল হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সার্চ ইঞ্জিনে যোগ্য সাইট প্রমোশন হয় না বরং এ ধরনের স্ক্যামাররা প্রতারণার জাল বিস্তৃত করার সুযোগ পাচ্ছে।

রাশেদ মেহেদী: সম্পাদক, ভিউজ বাংলাদেশ।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ