বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা, মহানগর রক্ষার উপায় খুঁজুন!
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের জন্য দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বল্পমেয়াদি দুর্ভোগ বয়ে আনে। বিশ্বব্যাপী প্রতিনিয়তই নানা ধরনের দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, ভূমিকম্প ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা যায়। এর মধ্যে ভূমিকম্প হচ্ছে অত্যন্ত মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। অধিকাংশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি আগে থেকে মানুষ জানতে পারে; কিন্তু ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হবার আগ পর্যন্ত কেউ তা জানতে পারে না। যেহেতু ভূমিকম্প কখন সংঘটিত হবে, সে সম্পর্কে মানুষ আগে থেকে জানতে পারে না, তাই এর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া বা মোকাবিলা করার জন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। ফলে কোনো এলাকায় উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ইন্দোনেশিয়ায় কিছু দিন আগে বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। তার আগে তুরস্কে ভূমিকম্পে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
ভূমিকম্প হচ্ছে এমন এক বিভীষিকার নাম, যা কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে একটি জনপদকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে পারে। ভূমিকম্প সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে এক অথবা দুই মিনিট স্থায়ী হয়ে থাকে। একবার কোনো এলাকায় ভূমিকম্প হওয়ার পর একই স্থানে অথবা কাছাকাছি অঞ্চলে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্প হতে পারে। একে ‘আফটার শক’ বলে। ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে ‘ইপি সেন্টার’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘ইপি সেন্টার’ হলো যেখানে ভূমিকম্প উৎপন্ন হয়। সারা বিশ্বে প্রতি মুহূর্তে কোথাও না কোথাও তীব্র অথবা স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। ইউনাইটেড স্ট্রেট জিওলজিক্যাল সার্ভের ওয়েব সাইটে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নানা মাত্রার ভূমিকম্পের তথ্য প্রকাশ করা হয়।
অনেক আগে পৃথিবীর সব স্থলভাগ একত্রে ছিল। পৃথিবীর উপরিভাগ কতগুলো অনমনীয় প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত বলে ধীরে ধীরে এগুলো আলাদা হয়ে গেছে। এ প্লেটগুলোকেই বিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটোনিক প্লেট। আর দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝে থাকা ফাটলকে ফল্ট লাইন বলা হয়। ভূমিকম্পের জন্য ফল্ট লাইনের বড় ভূমিকা রয়েছে। ফল্ট লাইন দিয়ে দুটি প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। মূলত টেকটোনিক প্লেটগুলো একে অপরের সঙ্গে পাশাপাশি যুক্ত থাকে। কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হলেই তৈরি হয় শক্তি। এ শক্তি সিসমিক তরঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। যদি তরঙ্গ শক্তিশালী হয়, তাহলে সেটি পৃথিবীর উপরিভাগে এসে ভূমিকে কাঁপিয়ে তোলে। এ কাঁপুনিই মূলত ভূমিকম্প। সারা বিশ্বকে সাতটি মেজর প্লেটে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো-আফ্রিকা প্লেট, ইউরেশিয়া প্লেট, এন্টারটিক প্লেট, ইন্দো-অস্ট্রেলীয় প্লেট, নর্থ আমেরিকান প্লেট, প্যাসিফিক প্লেট ও সাউথ আমেরিকান প্লেট। বাংলাদেশের ভূমিকম্প বলতে বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকার ভূমিকম্পকে বোঝায়। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে। এগুলো হচ্ছে, বগুড়াচ্যুতি এলাকা, রাজশাহীর তানোরচ্যুতি, ত্রিপুরাচ্যুতি, সীতাকুণ্ড টেকনাফচ্যুতি, হালুয়াঘাটচ্যুতি ডাওকীচ্যুতি, ডুবরিচ্যুতি, চট্টগ্রামচ্যুতি, সিলেটের শাহজীবাজারচ্যুতি (আংশিক-ডাওকীচ্যুতি) এবং রাঙামাটির বরকলে রাঙামাটিচ্যুতি এলাকা। বাংলাদেশ ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং বার্মার (মিয়ানমার) টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থান করছে। ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেট দুটি (১৯৩৪ সালের পর থেকে) দীর্ঘদিন ধরে হিমালয়ের পাদদেশে আটকা পড়ে আছে, অপেক্ষা করছে বড় ধরনের নড়াচড়া অর্থাৎ ভূকম্পনের।
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লেমন্ট ডোহের্টি আর্থ অবজারভেটরি ভূতাত্ত্বিকের (জুলাই ২০১৬) এক গবেষণায় জানা গেছে, বাংলাদেশের নিচে টেকটোনিক প্লেটের চাপ জমে উঠছে কম করে হলেও গত ৪০০ বছর ধরে। এ চাপ যখন মুক্ত হবে, তখন সৃষ্ট ভূমিকম্পের মাত্রা দাঁড়াতে পারে ৮ দশমিক ২ রিখটার। এমনকি তা রিখটার স্কেলে ৯ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের আর্থকোয়াক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারীর তথ্য মতে, ভূমিকম্পের রিটার্ন পিরিয়ড ধরা হয় ১৫০-২৫০ বছর। ১৭৬২ সালে আরাকান ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল, সাইকেল হিসেবে সেটি এখনো ফিরে আসেনি। এরপর ১৮৮৫ সালে একটি ভূমিকম্প হয়েছিল (মধুপুর ফল্ট ভূমিকম্প, যা বেঙ্গল ভূমিকম্প নামে পরিচিত)। এরকম ১৫০-২৫০ বছরের যে সাইকেল আছে, সেটি কখন হবে তা কেউ জানে না। তবে ব্যবস্থা একটাই, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে; যে কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি রাখতে হবে।
দেশে তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা। সব এলাকাই ঢাকা থেকে কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে। সেখানে সাত থেকে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে তা ঢাকার জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। শহরটির সম্প্রসারিত অংশে জলাশয় ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে আবাসন এলাকা। ভূমিকম্পের সময় নরম মাটি ও ভরাট করা এলাকার মাটি ভূমিকম্পের কম্পনের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় এবং মাটি লিকুইফাইড হয়ে যেতে পারে। ফলে ভূমিকম্পে ক্ষতির প্রভাব আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ঢাকা শহরের ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে মাটির গুণাগুণ বিশ্লেষণ করে দক্ষ জিওটেকনিক্যাল ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ‘বাংলাদেশ বিল্ডিং কোড’ মেনে নির্মাণ করা দরকার।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে কোনো বিশেষ অঞ্চল বা বিশেষ সময়ের ব্যাপার নয়। যে কোনো সময় যে কোনো অঞ্চলে ভূমিকম্পসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাবের সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্যোগের কারণে মানুষের প্রাণহানিসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ভূমিকম্প, বন্যা, খরা প্রতিরোধ করতে পারব না। তবে চেষ্টা করলে এবং কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ট ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণকালে সেগুলোকে দুর্যোগসহনীয় করে নির্মাণ করা হলে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। আমরা যদি দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বেশির ভাগ দুর্যোগকালেই অবকাঠামোগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব হতে পারে। অবকাঠামো নির্মাণকালে যদি আমরা দুর্যোগ সহনশীলতার বিষয়টি মাথায় না রাখি, তাহলে আমাদের ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে। দুর্যোগসহনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করে আমরা মানুষকে যেমন দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি, তেমনি আর্থিক ক্ষতিও তুলনামূলকভাবে কমিয়ে রাখা সম্ভব। দুর্যোগ সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় কিন্তু সাধারণ নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে খুব একটা বেশি নয়।
ভূমিকম্প এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি আমরা এখানে প্রাধান্য দেব। কারণ বাংলাদেশ অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ একটি অঞ্চল। বাংলাদেশ বিশ্বের সবেচেয়ে বড় বদ্বীপ অঞ্চল। বাংলাদেশ সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের নিত্যসঙ্গী। আমরা চাইলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকতে পারব না। তবে চেষ্টা করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কমিয়ে সহনশীল মাত্রায় সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও এর প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। বন্যার কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোকে অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে কৃষি জমির উৎপাদনশীলতা নষ্ট করে দিচ্ছে। দুর্যোগ সহনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিভিন্ন বিভাগ কাজ করে চলেছে। তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা আছে। আমি মনে করি, এসব বিভাগের ধারাবাহিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। কোন ধরনের দুর্যোগ হলে কোথায় কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে এবং সেই ক্ষতি কীভাবে সীমিত রাখা যাবে, তা নিয়ে অব্যাহতভাবে কাজ করে যেতে হবে। যখন কোনো এলাকায় ঘূর্ণিঝড় বা বন্যা হতে পারে, তার পূর্বাভাস আমরা আগেই পেয়ে যাচ্ছি। আমরা যখন সিদ্ধান্ত নিতে পারব দুর্যোগ-পরবর্তী ক্ষতি কীভাবে কতটা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা যাবে। ডিজাইন ম্যানুয়ালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খুব দক্ষতার সাথে সামাল দিচ্ছে। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিবেশি অনেক দেশের চেয়েও যা উন্নত মানের। বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক মানের স্ট্যান্ডিং অর্ডার অব ডিজাস্টার (এসওডি) প্রণয়ন করেছে। এই এসওডিতে দুর্যোগের সময় এবং তার পরবর্তী সময়ে কোন বিভাগের কি দায়িত্ব, তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হবার আগে, দুর্যোগ চলাকালে এবং দুর্যোগ উত্তরকালে কার কি দায়িত্ব আছে, সে সম্পর্কিত কমিটি আছে। এই কমিটি সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত। সরকারের কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্পদ এবং প্রাণহানির সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল উপকূলীয় অঞ্চলে। এরপর ১৯৯১ সালেও মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। সেই সময় যত মানুষ এবং সম্পদ বিনষ্ট হয়েছিল, এখন ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস হলে তত মানুষের প্রাণহানি হয় না। কয়েকদিন আগে মিধিলি নামে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তাতে সম্পদহানি ও অবকাঠামোর আগের মতো ক্ষয়ক্ষতি সে মাত্রায় হয়নি। যদিও মাঠের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাপারে পূর্ব সতর্কতা প্রদান করা গেলে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হয়।
আমরা আরও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আছি, তা হলো পাহাড়ধ্স। মাঝে মাঝেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড়ধসে জীবন ও সম্পদহানির খবর পাওয়া যায়। পাহাড়ধসের ব্যাপারে যদি সতর্কবাণী প্রচার করা যায়, তাহলে এই সমস্যা অনেকটা দূর করা সম্ভব। আমি ইউনির্ভাসিটি অব কুইবেকের একজন প্রফেসরের সঙ্গে একটি গবেষণা করছি। তাদের দেশের মাটিকে বলা হয় সেনসেটিভ ক্লে সয়েল। সেনসেটিভ ক্লে সয়েল ভূমিধসের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমাদের দেশের মাটি ক্লে সয়েল। আমরা চেষ্টা করলে এখানে প্রাক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি। সেটা করা গেলে ভূমিধসের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
আমাদের দেশে যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে, আমরা চাইলেই তা রোধ করতে পারব না; কিন্তু দুর্যোগের ক্ষতির পরিমাণ সহনশীল মাত্রায় সীমিত রাখতে পারি। সরকার অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা করে যাচ্ছে। অতীতে দেশে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তার ক্ষতির পরিমাণ হতো মারাত্মক। বর্তমানে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও তাতে ক্ষতির পরিমাণ থাকছে সহনীয় মাত্রায়। আগামীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে ক্ষতির পরিমাণ সীমিত থাকে, সে জন্য আমাদের আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এখন কোনো অবকাঠামো নির্মাণকালে আগে সেই রাস্তাটি কেন ভেঙে গিয়েছিল, তার তথ্য সংগ্রহ করে নতুন রাস্তা নির্মাণকালে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, যাতে আগের সেই অবস্থা ভবিষ্যতে সৃষ্টি হতে না পারে। দুর্যোগ নিয়ে একটি কবিতা মনে পড়েছে, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নিতে হবে যুগোপযোগী পদক্ষেপ / উদ্বেগ ভুলে সচেতনতা গড়ে অভিযোজনের পথে এগিয়ে যাবে বিশ্ব / দুর্যোগ প্রশমনে থাকবে না কোনো আক্ষেপ।’
তাই এখনই সময় ভূমিকম্প নিয়ে ব্যাপক গণসচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করার, মানুষকে জানানোর। উপযুক্ত প্রস্তুতির মাধ্যমেই শুধু ভূমিকম্পের ব্যাপক ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব হবে।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সেইভ পিপল ফর আর্থকোয়াক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাস্টার (স্পিড) এবং জিওটেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট।
অনুলিখন: এম এ খালেক
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে