কোকা কোলা
বিদেশি ব্র্যান্ডের ওপর হামলা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে
ইসরায়েলের বোমার আঘাতে এখন আর কেবল বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয় না, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনকণার সঙ্গে মানবদেহও আকাশে উড়ছে। অকল্পনীয় ও হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ইসরায়েলকে কেউ থামাতে পারল না, পারবেও না। অসহায় সাধারণ মুসলমান অহর্নিশ সৃষ্টিকর্তার করুণা ভিক্ষা করছে, দোয়া করছে, প্রার্থনা করছে বিগত ৭৬ বছর ধরে। ছিয়াত্তর বছর ধরে ভিটেবাড়ি ছাড়া ফিলিস্তিনিরা, ২০ লাখ অধিবাসীর গাজা বিগত পনেরো মাস ধরে আমেরিকা আর ইসরায়েলের বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হচ্ছে, প্রতিদিন লোক মরছে, আহত হচ্ছে, অসংখ্য লাশ ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে, খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। এত লাশ, কবর দেয়ার জায়গা নেই। স্বজন, সম্পদ, আশ্রয় সব হারিয়ে নিঃস্ব গাজাবাসী। এমন রোমহর্ষক দৃশ্য দেখেও জগতবাসী নির্বিকার। মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা মানুষ পদবাচ্য নয়, মানুষ হলে শত শত শিশুর মৃত্যুতে যুদ্ধ এতদিনে থেমে যেত। জগতে সৃষ্ট প্রজাতির মধ্যে মানুষ হচ্ছে সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে দিয়ে তা প্রমাণ করা সহজ।
লুটপাট কোন ধরনের প্রতিবাদ?
প্রতি মুহূর্তে আকাশ থেকে আগুন ঝরছে, প্রতিটি ঘরে শোকের ছায়া। হাসপাতালগুলোর মেঝেতে সারি সারি রক্তাক্ত লাশ। নবজাতক শিশুরা অক্সিজেনের অভাবে মায়ের কোলে মারা যাচ্ছে, হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের নিচে চিকিৎসকরা চাপা পড়ে যাচ্ছেন, অথচ বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকায়। শিশুদের কান্না, মায়েদের আর্তনাদ, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে মানবতা।
বয়কট এখন বিশ্ব রাজনীতির বড় হাতিয়ার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোকা-কোলা বয়কটের পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তর্ক-বিতর্ক। বাংলাদেশে পক্ষে এবং বিপক্ষের লোকসংখ্যা বের করার জন্য জরিপও হয়েছে, জরিপে পরিলক্ষিত হয়েছে ৮৯ শতাংশ লোক কোকা-কোলা বর্জনের পক্ষে। গত বছর অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর থেকে কোকা-কোলা বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছিল; কিন্তু তাতে খুব সাড়া মিলেনি। সম্প্রতি কোকা-কোলার একটি বিজ্ঞাপন স্তিমিত বয়কটের প্রচারণাকে উসকে দিয়েছে। কোকা-কোলার মালিক কোনো ইহুদি নয় এবং এর কারখানা গাজায়ও আছে- এমন কথা বলে বিজ্ঞাপন দেয়ার পর আবার নতুন উদ্যমে কোকা-কোলা বয়কটের আহ্বান আসছে। এ সুযোগে দেশীয় কোমল পানীয়গুলোর বিক্রি বাড়াতে বাংলাদেশি নাগরিকদের আবেগকে কাজে লাগানো হচ্ছে, দেশীয় পণ্য ‘মোজো’র প্রতিষ্ঠানটি ফিলিস্তিনের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘মোজো সাপোর্ট ফিলিস্তিন’ নামে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।