Views Bangladesh Logo

কথিত ‘তৌহিদী জনতা’ই কি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ‘কাল’ হবে?

Amin Al  Rasheed

আমীন আল রশীদ

পোশাক নিয়ে এক ছাত্রীকে হেনস্তার দায়ে বুধবার (৫ মার্চ) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে কথিত ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একদল লোক শাহবাগ থানায় গিয়ে হট্টগোল করেন- যার কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তারা অর্ণবের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।

ওইদিন পুলিশ অর্ণবকে নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করলেও তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন এবং তখন ওই কথিত তৌহিদী জনতা তার গলায় ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। তার মাথায় পাগড়ি পরিয়ে দেন। এমনকি তার হাতে পবিত্র কোরআন শরিফ তুলে দেন। যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। ছড়িয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

গণমাধ্যমের খবর বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বুক বাইন্ডার অর্ণব গত বুধবার দুপুরে এক ছাত্রীকে তার পোশাক নিয়ে উত্ত্যক্ত করেন। তিনি ঘটনার বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। সেখানে অর্ণবের ছবি যোগ করে তিনি লেখেন, ‘এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলতেছে আমার ড্রেস ঠিক নাই ইত্যাদি...। এরপর আমি প্রক্টরকে কল দিতে চাইলে সে দৌড় দিয়ে চলে যায়।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, তারা বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওই ছাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ পান এবং এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী অর্ণবকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অর্ণবকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেছেন: ‘জুলাইয়ে যখন হাসিনার খুনি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতেছিলেন তখন কি পাশের জন ছেলে না মেয়ে, দাড়িওয়ালা না দাড়ি ছাড়া, হিজাব না জিন্স, বিএনপি না জামায়াত- এই খোঁজ নিছিলেন কেউ? বাংলাদেশে জুলাই আসছিল বহু মত, বহু পথ, বহু স্বভাব, বহু পোশাকের দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্যই। এইখানে মোরাল পুলিশিংয়ের দায়িত্ব কাউকে দেয়া হয় নাই। দাড়ি-টুপি-বোরকাকে যখন স্টিগমাটাইজ করা হইছিল তখন প্রতিবাদ করছিল বাংলাদেশ। আজকে উল্টা দিকে যখন স্টিগমাটাইজ করা হচ্ছে তখনো বাংলাদেশকে প্রতিবাদ করতে দেখে আশাবাদী হই। সব প্রকার মিসোজিনিকে সোজা বাংলায় ‘না’! আগেও না, আজকেও না, ভবিষ্যতেও না।’

মনে রাখতে হবে, জুলাই অভ্যুত্থানের মূল স্লোগান ছিল বৈষম্যের অবসান। সেখানে ‘ইনক্লুসিভ’ বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছিল। অর্থাৎ সবাইকে নিয়ে দেশ- যেখানে কোনো বৈষম্য নেই। কেউ বিশেষ নয়। সংখ্যাগুরুর হ্যাডম বা সংখ্যালঘুর মন খারাপ নেই; কিন্তু সেই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে অব্যাহতভাবে ধর্মের নামে এমন সব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বা হয়েছে যা ওই ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের দর্শনের পরিপন্থি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ আল মামুন- যিনি জুলাই অভ্যুত্থানে বেশ সক্রিয় ছিলেন, তার ভাষায়: ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের জন্য আমরা লড়াই করলাম। করেও যাবো। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি- জামায়াতে ইসলাম ও তথাকথিত ইসলামপন্থি নানা গ্রুপ/তৌহিদী জনতা তাদের জন্য এক্সক্লুসিভ বাংলাদেশ বানাইতে তৎপর হয়ে উঠেছে- যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী, নারী, প্রগতিশীল বিভিন্ন ধারা ও অন্য জাতিসত্তার মানুষদের ঠাঁই হবে না! অথচ, এই সব বর্গের মানুষ ফ্যাসিস্টবিরোধী তৎপরতায় শামিল ছিল।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফাহমিদুল হক লিখেছেন: ‘ইন্টারিম দুর্বল সরকার, তাই যে পারছে চাপ/ধাক্কা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে তৌহিদী দুনিয়া। তাদের ভাবভঙ্গি, এখনই ইসলামিক রিপাবলিক কায়েম করবেন; কিন্তু তারা এও জানেন বাংলার জনগণ সেজন্য প্রস্তুত নয়, মোটের ওপরে জনগণ কট্টর নয়। গণতান্ত্রিক ভোটাভুটিতেও তাদের বিশেষ আস্থা আছে বলে মনে হয় না। তারা জিতে আসতে পারবেন না, জানেন। তারা চাচ্ছেন, নির্বাচন যত দেরি হয়, ভালো। আছে সংস্কারের অজুহাত। কারও বা হাসিনার বিচারের। মাঝ দিয়ে দুর্বল সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখে যতটা পারা যায়, থলিতে সঞ্চয় কুড়িয়ে নিতে চাচ্ছেন তারা। এদের সুযোগ সন্ধানী বলা যায়। এপ্রোচটা ফ্যাসিস্টের।’

স্মরণ করা যেতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরের মাসেই গত বছরের সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক তরুণীকে কান ধরে ওঠবস করানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় কয়েকজন তরুণ একটি আবাসিক হোটেলে রেইড দিয়েছেন। একটি কক্ষ থেকে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষকে বের করে এনেছেন যারা স্বামী-স্ত্রী নন। তাদের বকাঝকা করা হচ্ছে। ক্যামেরার সামনে দাঁড় করিয়ে তাদের জেরা করা হচ্ছে যে, কেন তারা হোটেলে এসেছেন? কাছাকাছি সময়ে খুলনায় উৎসব মণ্ডল নামে এক তরুণকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে বেদম মারধর করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মহানবীকে (স.) কটূক্তি করেছেন। প্রথমে একটি জাতীয় দৈনিকে ওই তরুণের মৃত্যুর খবর বলা হলেও পরে তারা লিখেছে তিনি বেঁচে আছেন।

গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেশ কিছু মাজার ভাঙা হয়েছে। শুধু তাই নয়, একজন সাবেক সংসদ সদস্যের কবরে আগুন পর্যন্ত দেয়া হয়- যে ধরনের ঘটনা বাংলাদেশ তো বটেই, সারা বিশ্বেই বিরল। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে সরকারের তরফে বারবার বিবৃতি ও হুমকি-ধমকি দেয়া হলেও মবকারীরা এসব হুমকি ও বিবৃতিকে যে থোড়াই কেয়ার করে, তার প্রমাণ গত সাত মাসেও এসব থামেনি।

প্রশ্ন হলো, গত সাত মানে বিভিন্ন স্থানে নারীদের খেলা বন্ধ করে দেয়াসহ নানা ইস্যুতে মব তৈরি করে যেসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে তাতে বাংলাদেশ সম্পর্কে দেশের বাইরে কী বার্তা যাচ্ছে? এই কথিত তৌহিদী জনতা আসলে কাদের হয়ে খেলছেন বা কাদের পার্পাস সার্ভ করছেন? যেসব দেশ বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে একটি উগ্রবাদী, মৌলবাদী ও জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে চায়- এইসব ঘটনার মধ্য দিয়ে তাদের হাতে রসদ তুলে দেয়ার পেছনে কাদের ইন্ধন, প্ররোচনা ও বিনিয়োগ আছে- তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশকে উগ্র ও জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র প্রমাণের চেষ্টা বহু বছর ধরেই চলছে। এটা প্রমাণ করা গেলে এখানে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাক গলানো সহজ। আবার প্রতিবেশী দেশও যদি বিশ্বকে এই বার্তা দিতে পারে যে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি নতুন ধরনের সরকার গঠিত হলেও দেশটা মূলত কট্টরপন্থিদের হাতে চলে গেছে- তাহলে এই সরকারকে বিতর্কিত ও বিব্রত করা সহজ।

সুতরাং কে কার স্বার্থে কাজ করছেন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনোভাবেই বিশ্বের কাছে এই বার্তা না যায় যে, বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়েছে। তাতে দেশের সাধারণ মানুষও বিরক্ত হতে থাকবে এবং যারা বহু বছর ধরে বাংলাদেশকে মৌলবাদী ও উগ্রবাদীদের দেশ হিসেবে প্রমাণ করে এখানে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে, তারাও ঝোপ বুঝে কোপ মারবে। এই সুযোগ কোনোভাবেই কাউকে দেয়া যাবে না।

৩.

সাম্প্রতিক মব ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘জনগণকে সচেতন করতে হবে। জনগণ এমন উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেলে অনেক সময় কিন্তু সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়ে তো সবসময় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।’

গত ছয় মাসে মব ভায়োলেন্স কমছে না। বাসাবাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব এমনকি বিদেশিদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের কন্ট্রোল করার জন্য মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন যেমন বড় ভূমিকা পালন করেন, এক্ষেত্রে আপনাদেরও (সাংবাদিক) একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।’

খুবই কেতাবি কথা। একইরকম কেতাবি কথা বলেছেন সরকারের আরেকজন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে মব জাস্টিস ও মোরাল পুলিশিংয়ের সুযোগ নেই। এটার বিরুদ্ধে সরকার সবসময় শক্ত অবস্থানে আছে। যেহেতু এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের অবস্থায় আমরা ফেরত আনতে পারিনি, আসেনি। সেক্ষেত্রে কোনো কোনো জায়গায় মব জাস্টিস এবং মোরাল পুলিশিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, এটার সুযোগ নেই।’

প্রশ্ন হলো, জনগণ উচ্ছৃঙ্খল হচ্ছে কেন? যারা উচ্ছৃঙ্খল হচ্ছে, মব তৈরি করে ফৌজদারি অপরাধ করছে, তারা কোন জনগণ? তারা কি সাধারণ মানুষ নাকি তারা বিশেষ কোনো দল বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে নেমেছে? কোনো সাধারণ মানুষ কি মব তৈরি করে কিংবা কথিত তৌহিদী জনতার ব্যানার টানিয়ে নারীদের উত্ত্যক্ত করে বা তাদের খেলা বন্ধ করে দেয়? তাদের নিশ্চয়ই একটা উদ্দেশ্য আছে। সুতরাং তাদের ‘জনগণ’ বলে চিহ্নিত করাটাও একধরনের দায়িত্ব এড়ানোর কৌশল। যারা অপরাধী তাদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, কে কাকে সচেতন করবে? সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে কি পাল্টা মব তৈরি করবে? তখন কি পরিস্থিতি আরও সাংঘর্ষিক হয়ে যাবে না? তাছাড়া জনগণকে সচেতন করেই যদি পৃথিবীতে মব বা অপরাধ থামানো যেত, তাহলে আর পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগের প্রয়োজন হতো না। উপরন্তু যারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক বা ধর্মীয় উদ্দেশ্য নিয়ে কিংবা কোনো বিদেশি শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে, তাদের সচেতন করার সুযোগ নেই। কেননা তারা সচেতনভাবেই এগুলো করে। যারা এই ধরনের মব তৈরি করে বা নিজের বিশ্বাস, মত ও আদর্শ অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য সোশ্যাল পুলিশিং করে, তাদের প্রধান সমস্যা অশিক্ষা অথবা কুশিক্ষা। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তারা শিক্ষিত হলেও শিক্ষা তাদের মনে আলো জ্বলাতে ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং এখানেও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো, প্রকৃত শিক্ষায় মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে কি না- সেটি নিশ্চিত করা। জনে জনে গিয়ে সচেতন করার সক্ষমতা পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রের থাকে না। রাষ্ট্র বরং কিছু সিস্টেম বা পদ্ধতি তৈরি করে; কিছু আইন ও নীতিমালা তৈরি করে; কিছু গাইডলাইন তৈরি করে যার ওপর ভিত্তি করে দেশটি পরিচালিত হবে। সেই পদ্ধতি, আইন, নীতিমালা ও গাইডলাইনের ভেতরে সমস্যা থাকলে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার কথা বলা অর্থহীন।

সরকার নিজেই যদি মব ভয় পায় বা কথিত তৌহিদী জনতার শক্তির কাছে মাথা নত করে তাহলে তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। তাদের কারণে দেশ আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়বে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। নির্বাচন তো দূরের কথা, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনও ঝুঁকিতে পড়বে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত সাত মাসেও কেন মব থামাতে পারলো না; এটি শুধুই তাদের প্রশাসনিক ব্যর্থতা, সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা নাকি এর পেছনে সরকারেরই একটি অংশের সমর্থন আছে সেই সন্দেহও কারও কারও মনে আছে। সুতরাং, মব ও কথিত তৌহিদী জনতার বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে খুব সুস্পষ্ট বার্তা আসতে হবে। শুধু বিবৃতি দিয়ে এদের থামানো যাবে না। বরং সরকার যে সব ধরনের মব, ছাত্রজনতা ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে সংঘটিত সব অপরাধ ও অনধিকার চর্চা কঠোর হাতে দমন করতে আন্তরিক- সেটি প্রমাণ করতে হবে। এটি প্রমাণ করতে না পারলে এই কথিত ছাত্রজনতা ও তৌহিদী জনতাই সরকারের জন্য ‘কাল’ হবে।

আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ