রাজশাহীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে 'মিজু গ্যাং'র মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ১১
রাজশাহীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে 'মিজু গ্যাং' এর মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব সদস্যরা। তারা জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী। মঙ্গলবার (১৪ মে) দিবাগত রাতে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ছোটবোনগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৩০টি ধারালো অস্ত্র (হাসুয়া ১৮, তলোয়ার ৭, ছরি ও চাইনিজ কুড়াল ১), কাটার হাতল ৩টি, সিমেন্টের ব্লক ৫৩টি (যাহা হ্যান্ড গ্রেনেড হিসেবে ব্যবহৃত), খেলনা পিস্তল ১টি, ৩টি মোটরসাইকেল ও ১২টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৫ মে) র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব -৫ এর অধিনায়ক মুনীম ফেরদৌস ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-নগরীর খোজাপুর এলাকার আজিমুদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান (৩০) ও একই এলাকার মৃত মুকুলের ছেলে মো. বকুল (৩৮)। অন্যদের মধ্যে ডাসমারী পূর্বপাড়ার বাবুল হোসেনের ছেলে মো. ঈমান (২৪), ধরমপুর পূর্বপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে মো. শাকিব (২৫) ও একই এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. রবিন (২০), আসলাম আলীর ছেলে মো. রাব্বি (২৪), শমসের আলীর ছেলে আমান (২২), নাসির উদ্দিনের ছেলে বিজয় (১৭), আব্দুল খালেকের ছেলে মো. অনিক (২১) এবং চর শ্যামপুরের মোতালেবের ছেলে ইয়ামিন আলী (২৮) ও চারঘাটের শিমুলিয়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে বিপ্লব আলী (২২)। তাদের মধ্যে মিজানুর রহমান রাজশাহী মহানগর শিবিরের আইন সম্পাদক।
র্যাব জানায়, আসামিরা "মিজু গ্যাং" এর সদস্য। তারা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মহানগর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, জমি দখল এবং কোনো ব্যক্তি জমি ক্রয়, বাড়ি নির্মাণসহ যে কোনো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান খুললে তাদের চাঁদা না দিয়ে কোনো কাজ করতে পারত না। এ ছাড়াও তারা মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে দলবদ্ধভাবে ছিনতাই করে আসছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দিয়ে আসছে আসামিরা। টেন্ডারবাজী ও সরকারি কাজে বাধা প্রদান, সংঘবদ্ধভাবে মেয়েদের উত্যক্ত করা, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিল তারা। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, র্যাব-৫, রাজশাহীর সিপিএসসি, মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি চৌকস অপারেশন টিম অভিযান পরিচালনা করে রাজশাহী নগরীর মতিহার থানাধীন ধরমপুর পূর্বপাড়া সাকিনাস্থ পলাতক আসামি রমজানের (৩০) হাফ বিল্ডিং ক্লাব ঘর থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম সদস্য রমজান আলী রাতের আধারে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ডাকাতির প্রস্তুতির বিষয়টি স্বীকার করে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরো ২টি স্থান থেকে বিপুল পরিমাণ ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক মুনীম ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, মিজানুর থেকে মিজু গ্যাং। তারা টেলিগ্রামে মেসেঞ্জার ব্যবহার করে বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করে। বাসা-বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত সংঘবদ্ধভাবে রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, জমিদখল, ছিনতাই, টেন্ডারবাজী, সরকারি কাজে বাধা দান, সংঘবদ্ধভাবে মেয়েদের উত্যক্ত করা, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে মতিহার থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে