ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ১২ মার্কিন অঙ্গরাজ্যের মামলা
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্য। বুধবার (২৩ এপ্রিল) মামলাটি করা হয়। তাদের অভিযোগ, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া এই ধরনের শুল্ক আরোপ করতে পারেন না প্রেসিডেন্ট।
এক বিবৃতিতে অ্যারিজোনার অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস মেইস বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অযৌক্তিক শুল্ক নীতি শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে বেপরোয়া নয়। এটা হচ্ছে অবৈধ।’
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, অ্যারিজোনা ছাড়াও মিনেসোটা, নিউইয়র্ক, ওরেগনসহ আরও কয়েকটি ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন রাজ্যের পক্ষ থেকে এই মামলা করা হয়। এর এক সপ্তাহ আগেই ক্যালিফোর্নিয়া পৃথকভাবে একই ধরনের মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে আসার পর “লিবারেশন ডে” ঘোষণার মাধ্যমে একাধিক দেশের বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপ করে বহু দশকের মুক্ত বাণিজ্য নীতিকে বদলে দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দিয়েছেন। তিনি চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১৪৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেন। যার জবাবে বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
এ প্রসঙ্গে বুধবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি চীনের সঙ্গে একটি “ন্যায্য চুক্তি” নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।
এদিকে চীন ছাড়াও অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে আরও কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকিও দেন তিনি।
এ অবস্থায় বুধবার দায়ের করা মামলায় অঙ্গরাজ্যগুলো যুক্তি দেয়, ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের যে আইনটি ব্যবহার করে জরুরি
ভিত্তিতে এই শুল্ক আরোপ করছেন, তা সংবিধান অনুযায়ী কংগ্রেসের এখতিয়ারকে লঙ্ঘন করে।
মামলায় আরও বলা হয়, “যেকোনো কারণ দেখিয়ে জরুরি ঘোষণার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ইচ্ছামতো যেকোনো পণ্যের ওপর বিপুল পরিমাণ এবং বারবার পরিবর্তনশীল শুল্ক আরোপের যে ক্ষমতা দাবি করছেন, তা আমাদের সাংবিধানিক ভারসাম্যকে বিনষ্ট করেছে এবং মার্কিন অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা এনেছে।”
ট্রাম্প দাবি করেন, তার এই নীতি দেশে উৎপাদন খাতকে ফিরিয়ে আনবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। তবে অ্যারিজোনার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “হোয়াইট হাউস যাই বলুক না কেন, শুল্ক হচ্ছে একটি কর, যার বোঝা শেষমেশ অ্যারিজোনার ভোক্তাদের ওপরই পড়বে।”
এদিকে বুধবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা অব্যাহতভাবে কমেছে। এই সপ্তাহে তা ৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
অন্যদিকে এই সুযোগে ট্রাম্পের এই নীতিগুলোকে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছে ডেমোক্র্যাটরা।
গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে “দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত” বলে মন্তব্য করেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে