বাংলাদেশে বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে: ইউনিসেফ
বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যায় ২০ লাখেরও বেশি শিশু গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ।
আজ প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ জানায়, এ অবস্থায় তাদের জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন্যার ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলো উপচে পড়েছে, যার ফলে ৫২ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ৫৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, স্কুল, রাস্তা, মাঠ ও ক্ষেত, এবং লক্ষাধিক শিশু ও তাদের পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ আশ্রয় খুঁজছেন। খাদ্য ও জরুরি ত্রাণের অভাবে শিশুদের সুরক্ষা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে কিছু এলাকায় সাহায্য পৌঁছানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। মৌসুমী বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউনিসেফ গত কয়েকদিন ধরে বন্যাদুর্গত এলাকায় জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করছে। সংস্থাটি ১ লাখ ৩০ হাজার শিশুসহ ৩ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষের কাছে জীবন রক্ষাকারী উপকরণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩৬ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ২৫ হাজার জেরি-ক্যান এবং ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট (মুখে খাবার স্যালাইন)। তবে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরও ত্রাণ ও সহায়তার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ইউনিসেফের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ এমা ব্রিগহাম বলেন, “এই বন্যা বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে শিশুদের জন্য একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের আবহাওয়াজনিত ঘটনা বাড়ছে এবং শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে বৈশ্বিক নেতাদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, যেন তারা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিশুদের জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেন।”
বন্যার কারণে অসুস্থ নবজাতক ও শিশুদের চিকিৎসা এবং গর্ভবতী মায়েদের নিরাপদ সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে ইউনিসেফের সহায়তা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে