৪ জিম্মি উদ্ধারে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলা, নিহত দুই শতাধিক
এবার চার জিম্মিকে উদ্ধারের নামে গাজা উপত্যকাজুড়ে আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে তীব্র হামলা চালাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এ হামলায় ২১০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। সেই সঙ্গে এ হতাহতের ঘটনায় বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়।
বার্তা সংস্থা আল-জাজিরা জানিয়েছে, শনিবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক দফা বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। বিশেষ করে এদিন মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ ও নুসেইরাত এলাকায় এবং দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমাঞ্চলে এবং উত্তর গাজার একাধিক এলাকায় হামলা চালানো হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় নিহত ও আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কয়েক ডজন আহত মানুষ মাটিতে পড়ে আছেন। মেডিকেল টিম তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নুসেইরাত এবং মধ্য গাজার অন্যান্য অংশে ইসরায়েলি হামলায় ২১০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
এদিকে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দিকরান বার্তা সংস্থা সিএনএনকে বলেন, দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের কর্মকর্তারা তাদের চিকিৎসা কেন্দ্রে ৯৪টি মরদেহ গণনা করেছে।
আল-আওদা হাসপাতালের পরিচালক ড. মারওয়ান আবু নাসের সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েলি অভিযানের পর শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত তাদের হাসপাতালে ১৪২টি মরদেহ গণনা করা হয়েছে।
হাসপাতালের কর্মকর্তাদের মতে, নুসেইরাত শরণার্থী শিবির থেকে চার জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য শনিবার এ অভিযান চালায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানের পর মধ্য গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ২৩৬ জনে দাঁড়ায়।
এ ব্যাপারে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের সামরিক বাহিনী নুসেইরাত এলাকায় সন্ত্রাসী অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
পরে ইসরায়েল সেনাবহিনী আরও জানায়, নুসেইরাত এলাকায় অভিযান চালানোর সময় সেই চার জিম্মিকে উদ্ধার করেছে তারা। তাদের অবস্থা ভালো। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলার পর গাজায় যে চারজনকে নেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে উদ্ধার করা বন্দিরা ছিল।
শনিবারের হামলাকে 'ইসরায়েলি বাহিনী পরিচালিত রক্তাক্ত গণহত্যা' বলে আখ্যা দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশনে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে মধ্য গাজার নুসেইরাত এলাকায় ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে হামলা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। মধ্য গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল দাবি করেছিল, সেই অভিযানে ৩৭ জন নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, নুসেইরাত এলাকায় শরণার্থী শিবিরের ইউএনআরডব্লিউএ স্কুলের ভেতরে থাকা হামাসের একটি কম্পাউন্ডকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে ‘নির্মূল' করেছে তারা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে