Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

কুমিল্লায় জোড়া খুনের মামলায় ৬ জনের ফাঁসি, ৭ জনের যাবজ্জীবন

District  Correspondent

জেলা প্রতিনিধি

সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

কুমিল্লায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই চাচাতো জ্যেঠাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছয়জনকে ফাঁসি এবং সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রায় দেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন।

ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনাইতরী গ্রামের মোঃ হাজী আতর আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ তোতা (৩৮), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে কামাল হোসেন (৪৮), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মো. মামুন (২৮), মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে মো. বাবুল (৩৫) ও মৃত আনোয়ার আলীর হারুনুর রশিদ (৪৫)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-একই (কুমিল্লা সদর দক্ষিণ) উপজেলার ধনাইতরী গ্রামের মৃত জুনাব আলীর ছেলে হায়দার আলী (৬৫), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আঃ মান্নান (৩২), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), মৃত আঃ খালেকের ছেলে আবুল বাশার (২৮), মৃত আঃ রশিদের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত আঃ খালেকের ছেলে আঃ কাদের (৩২) এবং এজাহার বর্হিভূত আসামি একই গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৪৫)। 

এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন-ধনাইতরী গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আমান (৪০) ও একই উপজেলার চৌয়ারা গ্রামের জুনাব আলীর ছেলে মোঃ সেলিম মিয়া (৫০)।

জেলা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ জহিরুল ইসলাম সেলিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে ধনাইতরী গ্রামের জামতলা খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন "ভাই ভাই ষ্টোর" নামক দোকানে প্রবেশ করে আসামিরা। এ সময় হায়দার আলীর নির্দেশে আসামি মোঃ তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়া বাদীর বাবা মোঃ গিয়াসউদ্দিন ও জেঠা জামাল হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হতাহতদের কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রথমে মোঃ গিয়াস উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং পরে জামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে এ ঘটনায় বাদী হয়ে আসামি মোঃ তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫)। তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মোঃ তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ এজহার নামী ১২ জন এবং এজাহার বর্হিভূত আঃ কুদ্দুসসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মঃ সহিদুর রহমান।

এরপরে মামলাটির বিচার শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষে ১১ জন এবং আসামিপক্ষে দুজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামি মোঃ তোফায়েল আহমেদ তোতাসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি হায়দার আলীসহ সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। 

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ জহিরুল ইসলাম সেলিম ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ মজিবুর রহমান বাহার এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম।

আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ