সব বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত সচল করুন
অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এক মাসের বেশি। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠানে অনেক অদল-বদল ঘটছে। পরিচালক-মহাপরিচালকদের পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণও। কিন্তু এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। দেশের ৫৫টি স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় চলছে উপাচার্য ছাড়াই। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক প্রশাসনিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড।
গতকাল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর মোট ৩৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখনও ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় চলছে উপাচার্য ছাড়াই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেপ্টম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত ৪টির মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো উপাচার্য নিয়োগ হয়নি।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা পুরোপুরি শুরু হয়েছে। দুটিতে চলছে অনলাইন ক্লাস। তবে এখনো তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। অতি দ্রুত যদি এই স্থবিরতা কাটানো না যায় তাহলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থীদের বেশ সমস্যা হবে। গণ-আন্দোলনের সময় অনেক শিক্ষার্থীই একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছেন। তাদের নিয়মিত ক্লাস, আড্ডা চালু না হলে এই ট্রমা কাটবে না। তাই আমরা চাই দ্রুত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসুক।
শুধু যে ক্লাস শুরু ও উপাচার্য নিয়োগের মধ্য দিয়ে সব স্বাভাবিক তাও নয়। অনেক শিক্ষাবিদই দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত পরিবর্তনও দরকার। বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “নতুন প্রশাসন হয়তো পুরনো কাঠামোর ওপরেই থাকবে। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করতে হবে। একটি পদ্ধতি ভাঙা সহজ, কিন্তু গড়ে তোলা কঠিন। এখন নতুন পদ্ধতি গড়ে তোলার সময়। বিগত দিনের ক্ষতি হয়তো কয়েকমাসের মধ্যেই পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়োপযোগী গতিশীল কাঠামো তৈরিতে সময় দিতে হবে।"
আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারি কর্তৃত্ব দূর হোক, গবেষণা বরাদ্দ বাড়ুক, হলগুলো রাজনীতিমুক্ত হোক। বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের দরজা উম্মুক্ত হওয়ার স্থান, এখানে যেন কোনো সংকীর্ণ মানসিকতার ঠাঁই না পায়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে