চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতা মেনে জাতীয় দলের উন্নতি নিয়ে ভাবনা
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে আসার পর গত সোমবার (৩ মার্চ) প্রথম সভায় বসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এতে জাতীয় ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বিসিবি পরিচালনা পর্ষদ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতার স্মৃতি পেছনে ফেলে দেশের ক্রিকেটের উন্নতির পথ খুঁজে বের করার দিকে জোর দেন। এছাড়া ওই সভায় মূল ফোকাস ছিল জাতীয় দলের দিকেই।
বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম এ ব্যপারে ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিসিবির সোমবারের সভায় জাতীয় ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া শুধু জাতীয় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে শিগগিরই আলাদা একটি সভা ডাকা হবে।’ তিনি বলেন, ‘সভায় আলোচনা হয়েছে, দুই-একজন ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কারোরই পারফরম্যান্স আপ টু মার্ক ছিল না। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
অথচ টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বড় স্বপ্ন দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স হওয়াই লক্ষ্য তাদের।’ কিন্তু তার স্বপ্ন ভেঙে ধূলিসাৎ হয়েছে গ্রুপ পর্বেই। গ্রুপ পর্বে কোনো ম্যাচেই জয় পায়নি বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ হারের পর একটিতে বৃষ্টির সৌজন্যে এক পয়েন্ট এসেছে। অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলেছিলেন, দলের সেরা প্রস্তুতিটা হয়নি। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতির কথা বলেছেন সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও। দলকে পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত করতে না পারার ব্যর্থতা মানছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিমও।
তিনি ভিউজ বাংলাদেশকে এ ব্যপারে বলেন, ‘আমাদের আদর্শ প্রস্তুতি হয়নি। দায়টা তো অবশ্যই আমাদের যে, আমরা ঠিকমতো পরিকল্পনা করতে পারিনি। তবে আমি যখন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব নিয়েছি, সেটা খুবই সাম্প্রতিক সময়ে। আমার সুযোগ ছিল না, সরাসরি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের স্বার্থ দেখাটা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আলোচনা যে আগে হয়নি, তা অবশ্য নয়। তবে আমরা এমন একটি জটিল পরিবেশের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম, যে কারণে হয়নি। পরে আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি, শেষ মুহূর্তে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, অনেক কিছু বদলাতে হচ্ছে। বিপিএলে খেলোয়াড়রা যে পারফরম্যান্স দেখান, তাতে বেশ আশাবাদী ছিলাম। আমার ধারণা, প্রস্তুতি ঠিকমতো না হওয়ার কারণে আমাদের পারফরম্যান্সটা ওই জায়গায় যায়নি। তাই এবার জাতীয় দলের উন্নতির দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিসিবি।’
বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্বে থাকা ফাহিম জানান, তারা একটি সভা করবেন শুধু জাতীয় দল নিয়ে আলোচনার জন্য। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে আমাদের কী হবে, কী করা উচিত, জাতীয় দলকে সাজানোর জন্য নিচে কীভাবে সাজানো উচিত, সার্বিক ব্যাপারগুলো কীভাবে করা উচিত, অন্য কোনো এজেন্ডা থাকবে না, শুধু জাতীয় দল নিয়ে আলোচনা করব। এটা সবাই উপলব্ধি করতে পারছে যে, জাতীয় দল ভালো করা মানেই সবকিছু ঠিক থাকা। জাতীয় দল ভালো না করলে অন্য কোনো কিছু ভালো থাকে না, যা-ই করি না কেন, যতই সাফল্যের গল্প বলি না কেন, আসল কাজটা হয় না। জাতীয় দলকে ভালো করতেই হবে।’
জানা গেছে, সোমবারের সভায় প্রধান কোচ, অধিনায়কের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না আসলেও বিসিবির সভায় বেশ কয়েকটি বিষয় চূড়ান্ত হয়েছে। এতে বিসিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও ট্রাস্টি সদস্যদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের জন্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ১০০ খেলোয়াড়কে বেতনের আওতায় এনে নতুন চুক্তি করা হয়েছে। নারী দলের স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনের কোচ হিসেবে সাবেক অ্যাথলেট ও অলিম্পিয়ান ফৌজিয়া হুদা জুইকে ৬ মাসের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পূর্বাচলের স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় জাতীয় ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এনএসজি)।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে