এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৭ আসামিই গ্রেপ্তার: ডিবিপ্রধান
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ৭ আসামির সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে বেশ কিছু উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে। সম্ভাব্য সব কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমি আশা করি, কারা আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে তা বেরিয়ে আসবে।’
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ডিবি কার্যালয়ে আয়েজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবিপ্রধান।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর মামলার মাস্টারমাইন্ড শিমুল ভূঁইয়াকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ডিবি। এছাড়া ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া তানভীর ও শিলাস্তি রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ফয়সাল ভূঁইয়া ও মোস্তাফিজুর রহমান নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে তারা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও সীতাকুণ্ডের মধ্যবর্তী একটি মন্দিরে হিন্দু ভক্তের ছদ্মবেশে আশ্রয় নিয়েছিল।
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘তাদের গ্রেপ্তারে ডিবি পুলিশের একটি দল সুন্দরবন ও ঝিনাইদহে যায় এবং খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, ফটিকছড়ি ও সীতাকুণ্ডে আরও দুটি দল গিয়েছিল।’
এমপি আনার হত্যায় ষড়যন্ত্রের বিবরণ দিয়ে ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, গত ১৩ মে এমপি আনার তার বন্ধু গোপালের বাসা থেকে বের হন। কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে অপেক্ষা করছিলেন ফয়সাল। এরপর ফয়সাল আনারকে শিমুলের কাছে নিয়ে যায়। কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনে ফয়সাল, শিমুল, শিলাস্তির সঙ্গে অপেক্ষা করছিলেন মোস্তাফিজ ও জিহাদ। এমপি আনারকে হত্যার আগে ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করে তাকে অজ্ঞান করে ফয়সাল।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শিমুল, ফয়সাল, মুস্তাফিজুর, জিহাদ, সিয়াম, তানভীর ও শিলাস্তি রহমান রয়েছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু ও গ্যাস বাবুকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আক্তারুজ্জামান শাহীনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘শাহিন তার পাসপোর্ট ব্যবহার করে কলকাতার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন বলে এখনও তাকেই মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গত ১০ মে দেশে ফিরলেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন তিনি।’
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জামের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, খুনিরা ১৭ হাজার টাকা দামের একটি চেয়ার ও ক্লোরোফর্ম কিনেছিল। হত্যাকাণ্ডে মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল সরাসরি অংশ নিয়েছিল এবং শাহীনের নির্দেশে ঢাকার বসুন্ধরায় আশ্রয় নেয় তারা। পরে তাদের ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে তারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে এবং হিন্দু ভক্ত সেজে খাগড়াছড়ির বন ও সীতাকুণ্ডের একটি মন্দিরে বসবাস শুরু করেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে