Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

খোদ বন বিভাগের বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজির অভিযোগ

Masum   Hossain

মাসুম হোসেন

রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে সড়কে চাঁদা আদায়ের দৃশ্য যেন নিত্যদিনের ঘটনা। সড়কে চলা কাঠবাহী ট্রাকেও চাঁদাবাজির ঘটনা নিয়মিত বিরতিতে ঘটে। অভিযোগ আছে, সেসব চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

অনেকে জানিয়েছেন, সড়কে দাঁড়িয়ে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন দপ্তরটির কর্মচারীরা। পরে সেই টাকা চলে যায় তাদের ‘বড় বাবুর’ পকেটে। এমনকি টাকার ভাগ পান বাগান মালিরাও।

জানা যায়, কাঠবাহী ট্রাক নিয়ে উত্তরবঙ্গ পার হতে হলে বন বিভাগ থেকে নিতে হয় বনজদ্রব্য চলাচল পাস বা ট্রানজিট পাস। আর এই ট্রানজিট পাস দেয়ার নামেই সড়কে চলে চাঁদাবাজি। মহাসড়কে ট্রাক থামিয়ে চাঁদা আদায় করেন বন বিভাগে কর্মরত বাগান মালিরা।

জানা গেছে, জয়পুরহাট ও বগুড়ার মহাসড়কে বন বিভাগের ছয়টি পয়েন্ট রয়েছে। সেগুলো হলো বগুড়ার বেতগাড়ী, দুপচাঁচিয়া ও নন্দীগ্রাম উপজেলার বাসস্ট্যান্ড, শেরপুর উপজেলার ধুনট মোড়, শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ও জয়পুরহাট জেলার গুলশান মোড়। এর যে কোনো একটি থেকে কাঠবাহী ট্রাকের চালকদের ট্রানজিট পাস সংগ্রহ করতে হয়। আর সেই ট্রানজিট পাস দেয়ার নামে চাঁদা তোলা হলেও মূলত এটি বিনামূল্যে দেয়ার নিয়ম রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সামাজিক বন বিভাগের বগুড়া কার্যালয়ের বিভাগীয় এক বন কর্মকর্তার নির্দেশেই ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি কাঠবোঝাই ট্রাকের চালকের ট্রানজিট পাস নিতে বন বিভাগকে দিতে হয় ৭০০ টাকা। বর্তমানে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৫০টি কাঠবাহী ট্রাক উত্তরবঙ্গ ছেড়ে যায়। প্রত্যেক চালককেই এই পরিমাণ চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়। তা না হলে তাদের ট্রানজিট পাস দেয়া হয় না।

একাধিক ট্রাকচালক জানিয়েছেন, ট্রানজিট পাস ছাড়াও সিরাজগঞ্জে বাড়তি আরও ১০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এরপর টাঙ্গাইল পার হতে দিতে হয় আরও ১,৯০০ টাকা। সামাজিক বন বিভাগের লোকজন সড়কে দাঁড়িয়ে এই চাঁদা তোলেন বলে অভিযোগ করেন ট্রাকচালকরা।


জানা যায়, বগুড়ার নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কাঠবাহী ট্রাকের ট্রানজিট পাস সরবরাহ করেন ওই উপজেলার সামাজিক বন বিভাগ কার্যালয়ের বাগান মালি আব্দুল জলিল।

মুঠোফোনে তিনি জানান, প্রতিটি ট্রাকের ট্রানজিট পাসের টাকা থেকে ৫০ টাকা করে ভাগ পান তিনি। বাকি টাকা নন্দীগ্রাম অফিসে জমা দেন। সেই টাকার একটা বড় অংশ বগুড়ায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সামাজিক বন বিভাগের বগুড়া কার্যালয়ের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ-বন সংরক্ষক) মো. মতলুবুর রহমান জানান, ট্রানজিট পাসের বিনিময়ে টাকা নেয়ার কোনো নিয়ম নেই।

তার নির্দেশেই টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাগান মালিরা কাজ বাদ দিয়ে অকাজ করছে। বিষয়টি দেখবো আমি।”
একই সঙ্গে, যারা টাকা নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ