Views Bangladesh Logo

দ্রুত ডাকসু নির্বাচন ঘোষণা করুন

ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেই নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সেবার ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে যে আশা-উদ্দীপনা জেগেছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একগুয়েমির কারণে সেটি পূরণ হতে পারেনি। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মনোভাব ছিল একপেশে, পক্ষপাতমূলক এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সন্দেহজনক। যে কোনো নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার পূর্বশর্ত হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সবার জন্য মাঠ সমতল করা; কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকার-সমর্থক ছাত্রসংগঠনটির সব দাবি রক্ষা করলেও প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের দাবি বরাবরই উপেক্ষা করেছে।

এবার নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সময় আবার প্রকাশিত হলো ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ। রোডম্যাপ প্রকাশিত হলেও কবে নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা জানা যায়নি। রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী মাসের (মে) মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন তপশিল ঘোষণা করবে। তবে তপশিল কবে ঘোষণা করা হবে, আর কবে নির্বাচন হবে, তার উল্লেখ রোডম্যাপে নেই।

গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মনে করে, ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতিসংবলিত রোডম্যাপ প্রকাশ করা হলো।

রোডম্যাপ ঘোষণা হওয়ার পর বুধবার দুপুরে ডাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। ছাত্র অধিকার পরিষদের দাবি, আগামী মে মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট টাইমফ্রেম ঘোষণা ও জুনের মধ্যে ‘গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক’ ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। অন্যান্য ছাত্র-সংগঠনগুলোরও এই একই দাবি। ছাত্র-সংগঠনগুলোর দাবি, জুলাই অভ্যুত্থানের যে কমিটমেন্ট, এর অন্যতম কমিটমেন্ট হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন দেয়া। জাতীয় নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন দেয়া অতীব জরুরি।

এর মধ্যে অনেক রাজনৈতিক দল দাবি তুলছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন জরুরি। জাতীয় নির্বাচন কবে নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে, তার কোনো দিনক্ষণও এখনো জানা যায়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী অনুমান করা যায়, হয়তো আগামী বছরের মাঝামাঝি জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। এর মধ্যে এ বছরের মাঝামাঝিও যদি ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ভালো। তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের কর্মতৎপরতা আসবে। এর প্রভাব পড়বে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালগুলোতেও। আমরা চাই শুধু রোডম্যাপ বা নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্রুত ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ