Views Bangladesh Logo

আটারি সীমান্ত বন্ধ: ভারত- পাকিস্তান বাণিজ্যে কী প্রভাব পড়বে

ম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ঘোষণা করেছে পাঞ্জাবের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অমৃতসরের আটারিতে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। ২৩ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিএস) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত কোথায়?
আটারি এবং ওয়াঘা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একই আন্তর্জাতিক সীমান্তকে বোঝায়। আটারি হলো সীমান্তে অবস্থিত ভারতীয় গ্রামের নাম, আর ওয়াঘা হলো সীমান্তে অবস্থিত পাকিস্তানি গ্রামের নাম। অমৃতসর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, আটারি হলো ভারতের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থলবন্দর এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের একমাত্র অনুমোদিত স্থলপথ। ১২০ একর জমিজুড়ে বিস্তৃত এবং জাতীয় মহাসড়ক-১-এর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত চেকপোস্টটি আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যে, বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে আমদানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই সীমান্ত চেকপোস্টটি জনপ্রিয় আর একটি কারণে; এখানে উভয় দেশের সৈন্যরা মুসলিমদের ঈদের ছুটি এবং হিন্দুদের দীপাবলির ছুটির সময় মিষ্টি বিনিময় করে। ২৩ এপ্রিল ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি স্পষ্ট করে বলেন যে, সীমিত সময়ের জন্য পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনকারীদের জন্য এই পথটি খোলা থাকবে, ‘যারা বৈধ অনুমোদন নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন তারা ১ মে ২০২৫ সালের আগে এই পথ দিয়ে ফিরে আসতে পারেন।’

আটারি সীমান্ত কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
আটারির চেকপোস্টটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ। এই পথ দিয়ে পাকিস্তানে সয়াবিন, মুরগির খাবার, শাকসবজি, লাল মরিচ, প্লাস্টিকের দানা এবং প্লাস্টিকের সুতার মতো পণ্য রপ্তানি করা হয়। পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে শুকনো ফল, শুকনো খেজুর, জিপসাম, সিমেন্ট, কাচ, শিলা লবণ এবং বিভিন্ন ভেষজ। ২০১৮ সাল থেকে চলমান উত্তেজনায় বাণিজ্যের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে ঠিকই; তা সত্ত্বেও করিডোরটি পণ্য এবং মানুষের যাতায়াতকে অনেকটাই সহজতর করে রেখেছিল।

ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্যের ওপর এর প্রভাব কেমন হবে?
আটারি-ওয়াঘা করিডোর গত কয়েক বছরে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহনের ২০২৩-২৪ সালের পরিসংখ্যান বলছে স্থলবন্দরটি ৩ হাজার ৮৮৬ দশমিক ৫৩ কোটি টাকার বাণিজ্য, ৬ হাজার ৮৭১টি পণ্য পরিবহন এবং ৭১ হাজার ৫৬৩টি যাত্রী পরিবহন রেকর্ড করেছে। আটারি স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের ওপর উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে। এই আন্তঃসীমান্ত বিনিময়ের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং স্বল্পপুঁজির প্রস্তুতকারকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অন্যদিকে ভারতে আফগানিস্তান থেকে পণ্য আমদানি এবং রপ্তানির একটা অংশ এই আটারি-ওয়াঘা রুট দিয়ে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে যায়। ফলে সেই পরিবহন ব্যবস্থাও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ