Views Bangladesh Logo
author image

মৃত্যুঞ্জয় রায়

  • কৃষিবিদ, পরিবেশবিদ ও লেখক

  • থেকে

মৃত্যুঞ্জয় রায়, কৃষিবিদ, পরিবেশবিদ ও লেখক
চৈত্রদিনে ঝরাপাতার গান
চৈত্রদিনে ঝরাপাতার গান

চৈত্রদিনে ঝরাপাতার গান

বসন্ত-যমজ চৈত্র এলেই মনে পড়ে যুগপৎ মৃত্যু ও জন্মের কথা। এ সময় জীবনের এই দুই ধ্রুব সত্যের দেখা মেলে প্রকৃতিতে। প্রকৃতিতে একদিকে চলে ঝরাপাতার খেলা। ঝরাপাতা মানেই মৃত্যু, স্মৃতি আর চলে যাওয়া পায়ের শব্দ। পর্ণমোচী গাছেরা পাতা ঝরিয়ে রিক্ত হয়। গাছের তলায় জমে ওঠে শুকনো পাতার স্তূপ। দুধ-চায়ের মতো রং সেসব পাতার, আবার কখনো বা চিনেবাদামের খোসার মতো গাঢ় বাদামি সেসব পাতারা। ওপর দিয়ে হেঁটে গেলেই মচমচ করে বেজে ওঠে প্রকৃতির সারিন্দা। নিস্তব্দ নিঝুম চৈত্রের ঝিম দুপুরে চিরসবুজ গাছেরাও ঝরাতে থাকে পাখির পালকের মতো বুড়ো পাতাদের। হাওয়ায় দুলতে দুলে কেঁপে কেঁপে ওরাও এসে ভিড় করে গাছের তলায় জমে থাকা শুকনো পাতাদের সঙ্গে।

তিনটি গ্রামের বসন্ত প্রকৃতির গল্প
তিনটি গ্রামের বসন্ত প্রকৃতির গল্প

তিনটি গ্রামের বসন্ত প্রকৃতির গল্প

বসন্ত হলো এ দেশের প্রকৃতির জাগরণ কাল। শীতে শীর্ণ স্তব্ধ গাছপালায় লাগে নতুন পাতার উল্লাস, বনে বনে ছড়িয়ে পড়ে দলা দলা সবুজের আগুন। ফাল্গুন আর চৈত্র- এ দুই মাস হলো বাংলার বসন্ত। ফাল্গুন এলেই বাংলার প্রকৃতি যেন নতুন বউয়ের মতো সাজে। বসন্তের অন্তত তিনটি রূপ আমরা প্রকৃতিতে দেখতে পাই- নতুন পাতা, রঙিন ফুল ও কচি ফল। বনবসন্তে অরণ্যের গাছগাছালিতে ছড়িয়ে পড়ে পাতাঝরার গান আর পাতা ছাড়ার উন্মাদনা- শাল মেহগনি সেগুনের পাতা ঝরা, বনতলে শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনি, গাছের মিনারে বাজতে থাকে নতুন পাতার আগমনী সংগীত, সেই সঙ্গে পুষ্পকুঁড়ির উন্মেষ। শহুরে বসন্ত যেখানে পার্কে বা উদ্যানে না গেলে বুঝা যায় না যে প্রকৃতিতে বসন্ত এসে গেছে। পার্কের গাছপালায় ধরে নতুন কচি পাতা আর ফুল। মাধবী ফুল ফোটার সময়টাইতো বসন্ত। করবী আর কাঞ্চনের লালচে গোলাপি রং ছড়িয়ে পড়ে ডালে ডালে। তবে বসন্তের কাঁচা রূপ যেন ঢলে ঢলে পড়ে এ দেশের পল্লিপ্রকৃতিতে। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার ভাষায়-

তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও জনজীবন
তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও জনজীবন

তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও জনজীবন

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী এখন অগ্নিযুগে প্রবেশ করেছে। গত বছর ছিল ইতিহাসে এ যাবতকালের মধ্যে উষ্ণতম বছর। আশায় ছিলাম, এ বছর হয়তো সে তাপ সামান্য হলেও কিছুটা কমবে; কিন্তু তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং একের পর এক রেকর্ড তৈরি করে ২০২৪ সালও হতে যাচ্ছে আর একটি উষ্ণতম বছর। বিশ্বের সব স্থানের সারা বছরের গড় তাপমাত্রা হিসাব করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এটা বলে দেয়। সারা বছর যেমন তেমন, গ্রীষ্মকালটা যেন এবার আগের চেয়ে বেশি আমাদের তাপিত করেছে। দেশের তো বটেই, এশিয়ার ছয়টি দেশে এখন চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিযাসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। দেশের কোনো কোনো স্থানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি। স্মরণকালে বিগত ৭২ বছরের মধ্যে গ্রীষ্মের যে স্বরূপ আমরা দেখিনি, এখন তার মুখোমুখি হয়ে প্রাণপাত পর্যন্ত করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত গত এক সপ্তাহে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে ১০ জন। বাড়ছে তাপজনিত পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়া।