Views Bangladesh Logo
author image

রাহাত মিনহাজ

  • সহকারী অধ্যাপক

  • থেকে

রাহাত মিনহাজ: শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক। শিক্ষকতার করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত। খণ্ডকালীন উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে। সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন চ্যানেল ওয়ান, এটিএন বাংলা, যমুনা টিভি ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে। ২০১৩ সালে পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের বজলুর রহমান স্মৃতি পদক, আরও পেয়েছেন আবুল মনসুর আহমদ প্রবন্ধ লিখন পুরস্কার ২০১৮। মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা নিয়ে লেখকের ১১টি বই প্রকাশিত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ‘সায়মন ড্রিং ও অন্যান্যের একাত্তর’, ‘নভেম্বর ক্যু’৭৫: অন্ধকার সময়ের সংবাদচিত্র’, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: সংবাদপত্রের আধেয় বিশ্লেষণ’ ও ‘পশ্চিম পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর বন্দি জীবন’ অন্যতম। শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখক মুক্তিযুদ্ধ ও গণমাধ্যম নিয়ে নানা ধরনের গবেষণায় নিয়োজিত আছেন। তাঁর দাপ্তরিক নাম মিনহাজ উদ্দীন। জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তরের শহর বগুড়ায়। উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে।
নভেম্বর ১৯৭৫: ধোঁয়াশাপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত ও খালেদ মোশাররফের প্রচেষ্টা
নভেম্বর ১৯৭৫: ধোঁয়াশাপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত ও খালেদ মোশাররফের প্রচেষ্টা

নভেম্বর ১৯৭৫: ধোঁয়াশাপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত ও খালেদ মোশাররফের প্রচেষ্টা

১৯৭৫ সালের নভেম্বরের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ২০২৪ সালের পালাবদলের একটি মিল রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর রাতে খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর ৭ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো সরকার ছিল না। ২০২৪ সালেও শেখ হাসিনার পতনের পরও কয়েক দিন সরকারশূন্য ছিল। যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক না কেন ১৯৭৫ সালের নভেম্বর ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আবছা, রক্তাক্ত অধ্যায়। ইতিহাসের এই ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবি আর দোষারোপের শেষ নেই। প্রায় ৫০ বছর পর রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে দিনটিকে পালন বা উদযাপন করে আসছে। কেউ করে অসমাপ্ত বিপ্লবের আক্ষেপ, কারও কাছে দিনটি বিপ্লব ও সংহতির আবার কারও কাছে দিনটি মুক্তিযোদ্ধা হত্যার শোকাবহ দিন। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় পর্যায় ও রাজনৈতিক পরিসরে দিনটি ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে পালিত হয়েছে। এ সময় গণমাধ্যম ও রাষ্ট্রযন্ত্রে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের শক্তিশালী বয়ান প্রতিষ্ঠিত ছিল। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় ২০২৪ সালে ভিন্ন আঙ্গিকে দিনটি পালিত বা উদযাপিত হবে। সামনে আসবে নতুন আলোচনা নতুন তথ্য, নতুন সমীকরণ, নতুন ব্যাখ্যা। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন একটু নির্মোহভাবে জানার চেষ্টা করি ঠিক কী ঘটেছিল ওই কয়েকদিন।

প্রাণঘাতী বিপর্যয়ের নির্মম সাক্ষ্য
প্রাণঘাতী বিপর্যয়ের নির্মম সাক্ষ্য

প্রাণঘাতী বিপর্যয়ের নির্মম সাক্ষ্য

২০১৩ সাল বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে খুবই ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ একটি বছর। এ সময় দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছিল, যা নিয়ে ঘোষণা দিয়ে ধারাবাহিক হিংসাত্মক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল জামায়াত-শিবির। এই বিচারের প্রেক্ষাপটেই বছরের শুরুতে উদ্ভব হয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চের। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ব্যানারে চলছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের আন্দোলন।

বাঙালির শেকড় আর ঐতিহ্যের টানে বৈশাখ পেয়েছে নতুন মাত্রা
বাঙালির শেকড় আর ঐতিহ্যের টানে বৈশাখ পেয়েছে নতুন মাত্রা

বাঙালির শেকড় আর ঐতিহ্যের টানে বৈশাখ পেয়েছে নতুন মাত্রা

বাঙালি জাতির সর্বজনীন উৎসবের প্রধান উপলক্ষ পহেলা বৈশাখ। পুরোনোকে ভুলে শুদ্ধতার স্রোতে অবগাহনের দিন। এদিনের নতুন সূর্যের সঙ্গে বাঙালির পথে প্রান্তরে শুরু হয় এক উৎসব আবহ। ফসলকেন্দ্রিক নানা হিসাব-নিকাষ, হালখাতা, নানা রকমের মেলা, নগরে ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান, মঙ্গল শোভাযাত্রা সবকিছু মিলে বাঙালি জাতির জীবনে এটি একটি রঙিন দিন। যে দিন নতুনের বারতা নিয়ে পুরোনোকে ভুলে সামনে চলার শপথ নেন বাঙালিরা।

ইন্দিরা-তাজউদ্দীন বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধের মহাপরিকল্পনা
ইন্দিরা-তাজউদ্দীন বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধের মহাপরিকল্পনা

ইন্দিরা-তাজউদ্দীন বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধের মহাপরিকল্পনা

ঢাকায় ভয়াবহ গণহত্যা শুরুর পর দীর্ঘ, দুর্গম এক পথ পাড়ি দিয়ে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার ভারতীয় সীমান্তে পৌঁছান তাজউদ্দীন আহমদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তখনকার আওয়ামী নেতা ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম। সন্ধ্যার পর ভারতীয় সীমান্তের অংশে তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল বিএসএফের আঞ্চলিক প্রধান, ডিআইজি গোলক মজুমদারের। প্রাথমিক আলোচনার পর গোলক মজুমদারের সঙ্গে তারা কলকাতায় যান। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা হয় বিএসএফের প্রধান কে এফ রুস্তমজীর (খুসরো ফারামুর্জ রুস্তমজী)।

তিব্বতি সেনাদের অজানা বীরত্বগাঁথা
তিব্বতি সেনাদের অজানা বীরত্বগাঁথা

তিব্বতি সেনাদের অজানা বীরত্বগাঁথা

১৯৭১ সালে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল চট্টগ্রাম। সমুন্দ্রবন্দর, মিয়ানমার সীমান্ত, পাহাড়, ঘন বনাঞ্চল ও বিদ্রোহী মিজোদের সহযোগিতার কারণে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে এটি ছিল একটি ভিনটেজ পয়েন্ট। যে কারণে যুদ্ধদিনে এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে সব ধরনের চেষ্টাই করেছে পাকিস্তান। আর অন্যদিকে কৌশলগত তাৎপর্যপূর্ণ এই জায়গা দখলের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের। বিশেষ করে চীনের প্রভাববলয়ে থাকা মিয়ানমারের সঙ্গে যে কোনো ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করতে চট্টগ্রামের দখল বা নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি ছিল যৌথ-বাহিনীর কমান্ডারদের কাছে।

‘একাত্তর’ জেনোসাইডের জ্বলন্ত সাক্ষী হলেও স্বীকৃতি নেই
‘একাত্তর’ জেনোসাইডের জ্বলন্ত সাক্ষী হলেও স্বীকৃতি নেই

‘একাত্তর’ জেনোসাইডের জ্বলন্ত সাক্ষী হলেও স্বীকৃতি নেই

খুলনার দিঘলিয়া থানার সেনহাটি গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সালাম। ১৯৭১ সালে যোগ দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে, যুদ্ধ করেছেন ৯ নম্বর সেক্টরে। যে অপরাধে রাজাকারদের সহযোগিতায় ৩০ এপ্রিল আবদুস সালামের বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল পাকিস্তানি সেনারা। প্রাণ বাঁচাতে চার মাসের শিশু রেহেনাকে কোলে নিয়ে পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেন আবদুস সালামের স্ত্রী; কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পাকিস্তানি সেনারা তাকে ধরে ফেলেন। এরপর কোল থেকে চার মাসের শিশুটিকে নিয়ে প্রবল আক্রোশে উঠানে আছড়ে ফেলে হিংস্র সৈনিকরা। শক্ত বুটের তলায় পিষে ফেলে শিশুটির কচি শরীর। বাবা যুদ্ধে গেছেন, এই অপরাধে নিষ্পাপ একটি শিশুকে এমনই বর্বরভাবে হত্যা করেছিল হায়েনারা, যা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত সাক্ষী। হত্যাকাণ্ডের সময় চার মাসের রেহেনার গায়ে যে জামাটি ছিল সেটি এখন সংরক্ষিত আছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গ্যালারিতে। সেনালী বর্ডারে হাতাকাটা এই জামাটির সামনে দাঁড়ালে শিউরে উঠতে হয়।