Views Bangladesh Logo
author image

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

  • অর্থনীতিবিদ

  • থেকে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান নির্বাহী ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টাকশাল (দ্যা সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস) 

বিদেশি ব্র্যান্ডের ওপর হামলা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে
বিদেশি ব্র্যান্ডের ওপর হামলা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে

বিদেশি ব্র্যান্ডের ওপর হামলা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে

ইসরায়েলের বোমার আঘাতে এখন আর কেবল বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয় না, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনকণার সঙ্গে মানবদেহও আকাশে উড়ছে। অকল্পনীয় ও হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ইসরায়েলকে কেউ থামাতে পারল না, পারবেও না। অসহায় সাধারণ মুসলমান অহর্নিশ সৃষ্টিকর্তার করুণা ভিক্ষা করছে, দোয়া করছে, প্রার্থনা করছে বিগত ৭৬ বছর ধরে। ছিয়াত্তর বছর ধরে ভিটেবাড়ি ছাড়া ফিলিস্তিনিরা, ২০ লাখ অধিবাসীর গাজা বিগত পনেরো মাস ধরে আমেরিকা আর ইসরায়েলের বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হচ্ছে, প্রতিদিন লোক মরছে, আহত হচ্ছে, অসংখ্য লাশ ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে, খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। এত লাশ, কবর দেয়ার জায়গা নেই। স্বজন, সম্পদ, আশ্রয় সব হারিয়ে নিঃস্ব গাজাবাসী। এমন রোমহর্ষক দৃশ্য দেখেও জগতবাসী নির্বিকার। মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা মানুষ পদবাচ্য নয়, মানুষ হলে শত শত শিশুর মৃত্যুতে যুদ্ধ এতদিনে থেমে যেত। জগতে সৃষ্ট প্রজাতির মধ্যে মানুষ হচ্ছে সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে দিয়ে তা প্রমাণ করা সহজ।

নতুন নোট পাওয়ার দিনক্ষণ
নতুন নোট পাওয়ার দিনক্ষণ

নতুন নোট পাওয়ার দিনক্ষণ

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফ্রেশ নোট বিনিময় স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ বঙ্গবন্ধুর ছবি বা প্রতিকৃতি সংবলিত নোট তারা আর ইস্যু করতে চায় না। এই সিদ্ধান্ত গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সঙ্গতিপূর্ণ হলেও এবার ঈদে জনগণ নতুন নোট থেকে বঞ্চিত হলো, যা গণঅভ্যুত্থানের নতুন স্পিরিটের সঙ্গে আবার সঙ্গতিহীন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা প্রতিদিন নতুন নোটের জন্য চাহিদা দিচ্ছে, তাদের ধারণা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরাতন কর্মী হিসেবে আমার পক্ষে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কিছু ফ্রেশ নোট বের করা সম্ভব। যারা গণঅভ্যুত্থানের অকৃত্রিম সমর্থক তারাও ফ্রেশ নোট চায়, বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট হলেও তাদের কোনো আপত্তি নেই। ফ্রেশ নোটের বিরাট চাহিদা চট্টগ্রামবাসীর, ফ্রেশ নোট না পেলে তাদের ঈদ অপূর্ণ থেকে যাবে, নতুন নোট তাদের কাছে মেজবানের মতো। ঈদে সেলামি দেয়া-নেয়ায় রীতিতে পুরাতন ও জরাজীর্ণ নোট একেবারেই অনুপযোগী ও অগ্রহণযোগ্য। ফ্রেশ নোট না থাকায় এবার শিশুরা সেলামি থেকেও হয়তো বঞ্চিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কারণে এবার ঈদ উৎসবে ফ্রেশ নোটে লেনদেনের দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্যেও ছেদ পড়ল।

ফ্রেশনোট ঈদে না ছাড়লেও অন্য সময় ছাড়তে হবে
ফ্রেশনোট ঈদে না ছাড়লেও অন্য সময় ছাড়তে হবে

ফ্রেশনোট ঈদে না ছাড়লেও অন্য সময় ছাড়তে হবে

বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে এক প্রজ্ঞাপন ইস্যু করে তাদের সব অফিসকে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মাঝে ফ্রেশনোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রেখে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সব লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদন করতে নির্দেশ দিয়েছে। একই প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গেও ফ্রেশনোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছে। অর্থাৎ আসন্ন ঈদুল ফিতরে কোনো ফ্রেশনোট ছাড়া হচ্ছে না; কিন্তু এই প্রজ্ঞাপন জারির কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক আরেকটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৯ মার্চ থেকে ফ্রেশনোট ইস্যু করা হবে মর্মে ঘোষণা দিয়েছিল। অল্প সময়ের ব্যবধানে পরস্পরবিরোধী প্রজ্ঞাপন থেকে প্রতীয়মান হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের গৃহীত পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে।

ব্যাংক নিয়ে অবিমৃষ্যকারী বক্তব্য
ব্যাংক নিয়ে অবিমৃষ্যকারী বক্তব্য

ব্যাংক নিয়ে অবিমৃষ্যকারী বক্তব্য

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সরল উক্তি, জোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংক বাঁচানো যাবে না। কেন বাঁচানো যাবে না? তার উত্তর হচ্ছে, কোনো কোনো ব্যাংক থেকে ঋণের ৮৭ শতাংশই নিয়ে গেছে একটি পরিবার, যা আর ফেরত আসবে না। এ ধরনের বক্তব্য নতুন নয়, তিনি গভর্নর হয়েই বলা শুরু করে দিলেন যে, কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। শুরু হলো অস্থিরতা, গ্রাহকদের আমানত তোলার হিড়িক। শাখা ব্যবস্থাপকরা ব্যাংক শাখার দরজা বন্ধ করে গ্রাহকদের চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেন, যারা কোমল হৃদয়ের তারা কান্নাকাটি করে গ্রাহকদের শান্ত রাখার চেষ্টা করলেন। গভর্নর বললেন উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে তিনি কোনো ব্যাংককে এক টাকাও দেবেন না। আমানতকারীরা আরও বেশি হতাশ ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ল। পরে বাস্তবতা উপলব্ধি করে দুর্বল ব্যাংকগুলোতে টাকা ঢালতে লাগলেন; কিন্তু কাজ হলো না। কারণ আতঙ্ক দূর করা এবং আস্থা ফিরিয়ে আনা সহজ নয়। কীভাবে ব্যাংক থেকে একটি পরিবার টাকা নিয়ে গেল, কারা সহযোগিতা করল- এসব কথা কেউ বলে না। এস আলম পরিবার ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে গেলেও পিস্তল ধরে লুট তো করেনি, নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছে। ঋণ প্রদানে অনিয়ম হলেও জামানত থাকার কথা; না থাকলে কেন নেই, অফসাইট-অনসাইট পরিদর্শনে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলা ছিল কি না- তা নিয়ে কারও মুখে কোনো কথা নেই।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের হালচাল
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের হালচাল

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের হালচাল

গত ৩ মার্চ রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক নামে দুজন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বা সমর্থককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের কাছে একটি অস্ত্র ছিল যা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় লুণ্ঠিত থানার অস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। অস্ত্র একটি নয়, নিহতদের পালিয়ে যাওয়া সঙ্গীদের হাতেও অস্ত্র ছিল এবং তাদের এলোপাতাড়ি ছোড়া গুলিতে ৫ গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।

ড. ইউনূস এই অচলাবস্থা ভাঙার উপযুক্ত ব্যক্তি
ড. ইউনূস এই অচলাবস্থা ভাঙার উপযুক্ত ব্যক্তি

ড. ইউনূস এই অচলাবস্থা ভাঙার উপযুক্ত ব্যক্তি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান নিয়ে একটি যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তার মতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই চীন এবং ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব একটু বেশি। অবস্থানগত কারণ ছাড়াও বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল জনগোষ্ঠী, এই জনগোষ্ঠীকে তিনি এখন আর বোঝা মনে করেন না। তার অভিমত হচ্ছে জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের তরুণরা যা দেখিয়েছে তার প্রেষণায় বিশ্ব জয়ের জন্য তাদের দরজা খুলে দিতে হবে। আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নেপাল, ভুটান এবং ভারতের পূর্বাঞ্চল সেভেন সিস্টারের সমুদ্রবন্দর না থাকায় তারা বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে, একইভাবে বাংলাদেশও নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করে লাভবান হতে পারে। হিমালয় পর্বতে জমে থাকা পানি থেকে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণ করার বাসনা ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। নেপালও নাকি জলবিদ্যুৎ দেয়ার জন্য এক পায়ে দাঁড়ানো। ড. ইউনূস এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আগ্রহী।