দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় বছরে ৮২ কেজি
বাংলাদেশে প্রতি বছর যত খাবার উৎপাদন হয়, তারও একটি বড় অংশ নষ্ট হয়। এই নষ্ট খাবারের পরিমাণ ১৪ দশমিক ১০মিলিয়ন টন।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ইউনেপের প্রকাশিত ২০২৪ সালে ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের একজন মানুষ বাড়িতে গড়ে বছরে আনুমানিক ৮২ কেজি খাবার অপচয় করে, যা যুক্তরাষ্ট্র (৭৩ কেজি), নেদারল্যান্ডস (৫৯ কেজি) এবং জাপানের (৬০ কেজি) মতো ধনী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
আরও কিছু উন্নত দেশে প্রতি বছর একটি বাড়িতে একজন ব্যক্তির দ্বারা খাদ্য অপচয়ের পরিমাণ চীনে ৭৬ কেজি, বেলজিয়ামে ৭১ কেজি, নিউজিল্যান্ডে ৬১ কেজি এবং রাশিয়ায় ৩৩ কেজি।
ভুটানের একটি পরিবার প্রতি বছর ১৯ কেজি খাদ্য অপচয় করে, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। এরপরে আছে ভারত (৫৫ কেজি) এবং শ্রীলঙ্কা (৭৬ কেজি)।
মালদ্বীপের একটি পরিবার প্রতি বছর ২০৭ কেজি খাবার নষ্ট করে, এই অঞ্চলে এটি সবচেয়ে বেশি। তারপরে আছে পাকিস্তান (১৩০ কেজি), আফগানিস্তান (১২৭ কেজি) ও নেপাল (৯৩ কেজি)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্য অপচয় কেবল একটি ‘ধনী দেশের’ সমস্যা নয়। উচ্চ-আয়ের, উচ্চ-মধ্যম এবং নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য মাথাপিছু খাদ্য অপচয়ের মাত্রা মাত্র ৭ কেজি।
উৎপাদনের শুরু থেকে অর্থাৎ সেটি মাঠে শস্য উৎপাদন হোক কিংবা সবজি, ফল, মাংস, ডিম বা দুধ যাই হোক না কেন, সেটি মানুষের খাবারের প্লেটে যদি না পৌঁছায় অথবা প্লেটে পৌঁছেও নষ্ট হয় তবে সাধারণভাবে তাকে খাদ্য অপচয় বলা যায়।
উৎপাদনের পর যদি সেটি খাওয়ার যোগ্য না হয় অর্থাৎ যদি সেটা পচে যায় বা মান সম্পন্ন না হয়, সেটিও খাদ্য অপচয় বলে গণ্য হয়।
ইংরেজিতে বিষয়টি বোঝানোর জন্য ‘ফুড লস’ এবং ‘ফুড ওয়েস্ট’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বাংলায় এ দুটিকেই খাদ্য অপচয় বলে বর্ণনা করা হয়। তবে ‘ফুড লস’ ফুড ভ্যালু চেইন বা খাদ্যচক্রের প্রাথমিক পর্যায়ে হয়ে থাকে আর 'ফুড ওয়েস্ট' হয় এই চক্রের শেষ প্রান্তে।
যখন শস্যদানা যেমন চাল-গম-ডাল, সবজি ও ফল, বিভিন্ন প্রাণীর মাংস, ডিম বা দুধ এসব উৎপাদনের পর বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে যেসব অপচয় হয় তাকে ‘ফুড লস’ বলে। কিন্তু যখন এসব খাবার বাড়ি বা রেস্তোরাঁ বা কম্যুনিটি সেন্টারে রান্নার পর অপচয় হয় তখন সেটিকে ‘ফুড ওয়েস্ট’ বলা হয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে