স্টার্টআপে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

স্টার্টআপে ছয় ধাপ এগিয়েও প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে এখনো পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার নিচে বাংলাদেশ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৩তম। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারত ১৯তম, পাকিস্তান ৭১তম ও শ্রীলঙ্কা ৭৬তম অবস্থানে আছে।

স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নিয়ে গবেষণা করা আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘স্টার্টআপব্লিঙ্ক’ সম্প্রতি ‘গ্লোবাল স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম ইনডেক্স ২০২৪’ প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

স্টার্টআপব্লিঙ্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী আরও জানা যায়, তালিকার শীর্ষ ৫টি দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, কানাডা, সুইডেন ও সিঙ্গাপুর। আর শীর্ষ ৫টি শহর হচ্ছে সান ফ্রান্সিসকো, নিউইয়র্ক, লন্ডন, লস অ্যাঞ্জেলেস ও বোস্টন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের সেরা ১৫০টি শহরের তালিকায় ঢুকেছে ঢাকা। শীর্ষ ১ হাজার শহরের মধ্যে ঢাকা ২০২৩ সালের চেয়ে ৭১ ধাপ এগিয়ে ১৪০তম অবস্থানে আছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় শহরগুলোর আধিপত্য থাকলেও ঢাকার অবস্থান অষ্টম। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় কৃষিপ্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপে ঢাকার অবস্থান সপ্তম।

এশিয়া প্যাসিফিকে ১৯টি দেশের ১৫৯টি স্টার্টআপ অর্থনীতি রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ১৮তম। বাংলাদেশের পরে আছে শুধুমাত্র কিরগিজস্তান।

চলতি বছর বিশ্বে এগিয়ে ছিল সফটওয়্যার ও ডেটাভিত্তিক স্টার্টআপ। এরপর আছে, ই-কমার্স ও রিটেইল, স্বাস্থ্য, আর্থিক ও শিক্ষাভিত্তিক স্টার্টআপ। পরিবহনভিত্তিক স্টার্টআপে ঢাকা শীর্ষ ১০০টি দেশের মধ্যে আছে।

বাংলাদেশের শীর্ষ স্টার্টআপ হিসেবে পাঠাও, শপআপ, সহজ, আরোগ্য ও টেন মিনিট স্কুলের কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। স্টার্টআপ খাতকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের সমর্থন প্রয়োজন। ইন্টারনেট স্থিতিশীলতাসহ অবকাঠামোগত উন্নতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পাশাপাশি নীতিসহায়তা, করপোরেট উদ্যোগে বিনিয়োগব্যবস্থা ও স্টার্টআপকে সহযোগিতা করার জন্য শিল্প-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতার উন্নতিতেও কাজ করতে হবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিকভাবে স্টার্টআপের বিনিয়োগ ২০২১ সালের পর থেকে কমছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ এসেছে। যা গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় ৭০ শতাংশ কম। এই বিনিয়োগের ৭৫ শতাংশের বেশি এসেছে দেশের বাইরে থেকে।

২০২৪ সালের শেষ তিন মাস বাদ দিলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে ১০ মিলিয়ন ডলারের নিচে।

স্টার্টআপব্লিঙ্কের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের পর ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন বিনিয়োগ এসেছে। প্রতিবেদনে বিনিযোগ কমার কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক মন্দা ও মূল্যস্ফীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।