দেড় দশক পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক আজ
দীর্ঘ দেড় দশক পর বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক। এই বৈঠকে অবিভক্ত পাকিস্তানের সম্পদ থেকে ন্যায্য হিস্যা হিসেবে ৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারের দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করবে বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে আমনা বালুচ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিকের পাশাপাশি ঐতিহাসিক অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। তহবিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের প্রাপ্য হিস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। এর আগে ২০১০ সালে দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বৈঠক উপলক্ষে গত বুধবার ঢাকায় পৌঁছান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বৈঠকে অংশ নেবেন। মধ্যাহ্নভোজের পর তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এর আগে গতকাল তিনি ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানি ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের পূর্ববর্তী সময়ের হিস্যা হিসেবে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার দাবিদার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ হলো ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য প্রেরিত ২০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখা থেকে এই অর্থ লাহোর শাখায় সরিয়ে নেয়া হয়।
এছাড়া পাকিস্তান ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসা সরকারি কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সঞ্চয়পত্রের অর্থ ফেরত দেয়া হয়নি। পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা ৯০ লাখ টাকা পাকিস্তান সরকার আটকে রেখেছে। এছাড়া, রূপালী ব্যাংকের করাচি শাখায় রাখা ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকাও ফেরত আসেনি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থের অর্ধেক, অর্থাৎ ৪৩৫ কোটি রুপি, এবং পাকিস্তানের ব্যাংকিং বিভাগ থেকে প্রায় ৬০ কোটি রুপির দাবিদার বাংলাদেশ।
এই বৈঠকের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের এই অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে