জাতিসংঘ পুলিশের কাজে অর্থবহ অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি-প্রস্তুতি পুনর্ব্যক্ত বাংলাদেশের
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জাতিসংঘ পুলিশের কাজে অর্থবহ অবদান রাখতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি ও প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের চতুর্থ সম্মেলনে (ইউএনকপস ২০২৪) তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিনব কৌশল ও সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্র’ শীর্ষক সম্মেলনের প্রধান সেশনে প্রথম বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রদত্ত বক্তব্যে বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রাসঙ্গিক ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বিশেষায়িত পুলিশিং বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রম চলমান দেশগুলোর আইন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাগুলোর দক্ষতাবৃদ্ধির ওপরও জোর দেন তিনি।
এছাড়াও তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের শেষান্তে, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের শান্তিরক্ষায় নিজস্ব স্বক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী পুলিশ সদস্য পাঠানো বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে নানা প্রকার অপপ্রচার রোধে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরেন। পাশাপাশি, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের গুরুত্ব বর্ণনা করে এ ধরনের প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ব্যবহারের বিষয়ে জোর দেন।
এই সম্মেলন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদৌলে সানিয়াং, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর পিস অপারেশনস জ্যঁ পিয়েরে লাখোয়া ও আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর অপারেশনাল সাপোর্ট অতুল খারে’র সঙ্গে ৩টি আলাদা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরেন।
এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বাড়ানো ও জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির নানা ক্ষেত্র আলোচনায় উঠে আসে।
এসময় উভয় আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের পেশাদারিত্ব ও অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ হতে আরও শান্তিরক্ষী পাঠানোর অনুরোধ জানান।
গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে গাম্বিয়ার অংশগ্রহণে বাংলাদেশ সহযোগিতা প্রদান করায় ধন্যবাদ জানান।
এছাড়াও ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৬-২৭ জুন ২ দিনব্যাপী জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের চতুর্থ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কামরুল আহসান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে