ভারতের কাছে আবার হারল বাংলাদেশ
সেমিফাইলের লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। তবে ৫০ রানে হেরে সুপার এইটের ‘গ্রুপ ১’-এর প্রথম দল হিসেবে বিদায় প্রায় নিশ্চিত করল বাংলাদেশের।
এই ম্যাচে ভারতের দেওয়া ১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দলটির দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে আত্মসমর্পণ করেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। নিয়মিত উইকেট পড়লেও তারা রীতিমতো ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে গেছেন শেষ পর্যন্ত। তবে ১৪৬ রানের বেশি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
টাইগারদের হয়ে অধিনায়ক শান্ত সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন। এছাড়া তানজিদ তামিম ২৯ ও রিশাদ হোসেন ২৪ রান করেন।
ভারতের বোলারদের মধ্যে কুলদীপ যাদব ১৯ রানে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন। এছাড়া জসপ্রীত বুমরাহ ১৩ রানে দুটি উইকেট নেন। দুই উইকেট পেয়েছেন আর্শদীপ সিংও, তবে তিনি ৩০ রান দিয়েছেন।
বল-ব্যাটে অসাধারণ পারফর্ম করা হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।
এদিন লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ভারতের মতোই ভালো শুরু করেন লিটন দাস ও তানজিম সাকিব। প্রথম চার ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই ২৭ রান তোলেন দুই ওপেনার। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে হার্দিককে একটি ছক্কা হাঁকান লিটন। তবে পরের বলে ক্যাচ আউট হয়ে যান তিনি। ফলে ৩৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ওভারের চতুর্থ বলটিও উড়িয়ে মারেন লিটন, কিন্তু মারে জোর না থাকায় বোঝাই যাচ্ছিল যে, বল সীমানা অতিক্রম করবে না। পরে স্কয়ার লেগ অঞ্চল থেকে সহজ ক্যাচটি লুফে নেন সূর্যকুমার যাদব। ফলে ১০ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ১৩ রান করে ফিরতে হয় লিটন দাসকে, খবর ইউএনবি'র ।
এরপর শান্ত এসে তানজিদের সঙ্গে বড় জুটি গড়ায় মনোযোগী হন। এতে খানিকটা সফলও হন তারা। শুরুতে বুমরাহর গতি সামলে নিয়ে ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হন দুই ব্যাটার। মাঝে ষষ্ঠ ওভারে একবার জীবন পান তানজিদ। বুমরাহর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু বল খানিকটা বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে তা গ্লাভসে ধরে রাখতে ব্যর্থ হন ঋষভ। এমন মিস দেখে মুখে হাত দেন বুমরাহ।
৭.৫তম ওভারে দলীয় পঞ্চাশ পার করেন তারা। এরপর হার্দিককে দুটি ছক্কা মেরে এক ওভারে ১৪ রান নেন শান্ত। তবে দশম ওভারের চতুর্থ বলে কুলদীপের ঘুর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে যান তানজিদ।
ঋষভের লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। এর ফলে ৬৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আর ৩১ বলে চারটি চারের সাহায্যে ২৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন বাংলাদেশের আরেক ওপেনার।
এরপর তৌহিদ হৃদয় এসেও বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হননি। কুলদীপের পরের ওভারের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। এসময় খালি চোখে বল মিডল স্ট্যাম্প বরাবর আঘাত হেনেছে দেখা গেলেও তা বুঝতে পারেন না নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা শান্ত। ফলে পরপর দুটি রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে, তিন ওভারে মাত্র ১০ রানে দুই উইকেট তুলে নেন কুলদীপ যাদব।
এরপর সাকিবের সঙ্গে রান রেট বাড়ানোর চেষ্টা করেও বিফল হন শান্ত। অপর প্রান্তের সাকিব ক্যাচ হয়ে যান। বোলার সেই কুলদীপ।
চতুর্দশ ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপকে ছক্কা হাঁকান সাকিব। কিন্তু পরের বলটিও উড়িয়ে মারতে গিয়ে বোকা বনে যান তিনি। সাকিবের আগ্রাসী মনোভাব বুঝতে পেরে পরের ডেলিভারিটি স্লোয়ার দেন তিনি। আর তাতেই বিভ্রান্ত হয়ে কভারে থাকা রোহিতের তালুবন্দি হন সাকিব। এর ফলে ৯৮ রানে চার উইকেট হারায় টাইগাররা। আর ব্যক্তিগত চার ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট নিয়ে কার্যত বাংলাদেশের কোমরে ভেঙে দেন কুলদীপ।
এরপর ৩২ বলে ৪০ রান করে বিদায় নেন অধিনায়ক শান্ত। তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ৩২ বলে ৪০ রান করেন তিনি। এর পরের ওভারে জাকের আলী (১) ও ১৯তম ওভারে বুমরাহর বলে কাটা পড়েন রিশাদ হোসেন। শেষ দিকে ব্যবধান কমাতে চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে ১০ বলে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ২৪ রান করে তাকেও ফিরে যেতে হয়।
শেষের দিকে মাহমুদুল্লাহও আউট হয়ে গেলে আট উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান সংগ্রহ করতে সমর্থ হয় টাইগাররা।
পরপর দুই ম্যাচে জিতে সুপার এইটের ‘গ্রুপ ১’ থেকে প্রথম দল হিসেবে সেমির জায়গা মোটামুটি পাকাপোক্ত করে ফেলল ভারত। রোববার ভোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া জিতলেই ভারত অস্ট্রেলিয়া দুই দলেরই সেমি ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে