শেখ হাসিনার আমলে দেখানো উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ‘ভুয়া’: ড. ইউনূস
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার আমলে দেশের যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছিল, তা ‘ভুয়া’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন না তোলার জন্য পুরো বিশ্বকে দায়ী করলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের সাইডলাইনে রয়টার্সকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) দাভোসে সবাইকে বলছিলেন কীভাবে একটি দেশ চালাতে হয়। কিন্তু কেউই সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। এটি মোটেও ভালো বিশ্ব ব্যবস্থা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর জন্য পুরো বিশ্ব দায়ী। যে কারণে বিশ্বের জন্য একটি ভালো শিক্ষা এটি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। এটা একেবারে ভুয়া প্রবৃদ্ধির হার।’
কেন এই প্রবৃদ্ধির হারকে ভুয়া বলে মনে করেন সে বিষয়ে রয়টার্সকে বিস্তারিত কিছু বলেননি ড. ইউনূস। তবে ব্যাপক-ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব ও সম্পদের বৈষম্য কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রবৃদ্ধির হার দিয়েই সবকিছু বিবেচনা করার ব্যাপারে খুব একটা একমত নই। আমি চাই, একেবারে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে প্রতিটি মানুষের উন্নত জীবনমান। আর এ কারণেই আমি এমন অর্থনীতি চাই, যেখানে সম্পদ পুঞ্জীভূত করার ধারণা এড়িয়ে চলা হয়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সবচেয়ে শক্তিশালী হওয়া উচিত। আপনি জানেন, বাংলাদেশের মানচিত্র না এঁকে আপনি ভারতের মানচিত্র আঁকতে পারবেন না। বাংলাদেশের স্থল সীমানার প্রায় পুরোটাই ভারতের সাথে।’
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো আগ্রহ তার নেই।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। তবে ছাত্র-জনতার কয়েক সপ্তাহের আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। সেখানে যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, হত্যা, দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়। একইসঙ্গে শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তাকে হস্তান্তরের বিষয়ে দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে