ব্যাংকের এমডি: ইচ্ছামত পদত্যাগ নয়, চাকরিচ্যুতিও নয়
এখন থেকে কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চাইলেই হঠাৎ করে পদত্যাগ করে ব্যাংক ছেড়ে যেতে পারবেন না। আবার ব্যাংক কর্তৃপক্ষও যখন-তখন কোনো এমডিকে সরিয়ে দিতে পারবে না।
অর্থাৎ মেয়াদ শেষের আগে কোনো এমডিকে ব্যাংক ছাড়তে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে। সেই কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেবে,তা–ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
এমডি হিসেবে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটির কাছে মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে। এরপরই তাঁর নিয়োগ ও মেয়াদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সব ব্যাংক এমডির চুক্তির মেয়াদ প্রতিবার সর্বোচ্চ তিন বছর হবে।
এমন কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকের এমডিদের নিয়োগ ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কিত নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে এমডিদের সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের দায়িত্ব ও সুযোগ-সুবিধা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
কারা এমডি হতে পারবেন, সেটি নীতিমালায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট বা অনসাইট পরিদর্শনে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ নেই, এমন ব্যক্তি এমডি হিসেবে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ পাবেন। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যের পরিবারের কেউ এমডি হতে পারবেন না। এমডি হতে হলে ২০ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এমডি হওয়া যাবে ৪৫ বছর বয়সে, আর এ পদে থাকা যাবে ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত। তবে কেউ একবারে ৩ বছরের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ পাবেন না।
যদিও ইতোমধ্যে বেশিরভাগ এমডিকে ৫ বছর বা আরও বেশি সময় পর্যন্ত নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কাউকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সময় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ও অবলোপন করা ঋণ আদায়ে তাঁর পারদর্শিতা যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এমডিকে জোরপূর্বক অব্যাহতি দেওয়া বন্ধ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অপসারণ করতে চাইলে তার সুনির্দিষ্ট কারণসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে হবে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা অনুমোদন করলে এক মাস পর সেটি কার্যকর হবে। আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো এমডি পদত্যাগ করতে চাইলে পর্ষদের সুপারিশসহ পদত্যাগপত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটি ওই এমডির শুনানি গ্রহণ করে যে সুপারিশ করবে, সেটিই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
বিদেশি ব্যাংকের এমডি নিয়োগেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। তবে বিদেশি ব্যাংকের এমডি পদে নিয়মিত কোনো কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলে তাঁকে ওই ব্যাংকের নিজস্ব নিয়মে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, উৎসাহ বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটিসহ অন্য সুবিধা দিতে পারবে বিদেশি ব্যাংকগুলো।
পর্ষদের কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত ব্যাংকের জন্য ক্ষতিকর মনে হলে এমডিকে তা লিখিত বা মৌখিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে