Views Bangladesh Logo

মারা গেছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন। রোববার (৪ মে) বিকেল সোয়া ৪টায় রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি মারা যান। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির ভিউজ বাংলাদেশকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ গত ২১ এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানেই লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় রোববার বিকেলে মারা যান তিনি।’

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ১১ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। ৬ জানুয়ারি তার জুনিয়র আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে তাকে সংবর্ধনাও দিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।

যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দল থেকে পদত্যাগ করেন। তখন দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির ডা. শফিকুর রহমান এক বার্তায় বলেছিলেন, তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যে কোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আমরা আশা করি তার সঙ্গে আমাদের মহব্বতের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। এরপর তিনি নতুন দল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।

২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে বিমানবন্দরে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার প্রশ্নে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি একজন আইনজীবী। আমি কোর্ট রুমে ব্যারিস্টার। আমি আইনের অঙ্গণে আমার অবদান রাখার চেষ্টা করবো। আইনের শাসন একটি অতি বড় জিনিস। দেশে যদি আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে আমাদের রাজনীতি সফল হবে। অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। সুতরাং আইন অঙ্গণে আমার বিচারণ, আইন অঙ্গনে আমি থাকবো। আইন অঙ্গনের মাধ্যমে আমি দেশ এবং জাতির খেদমত করার চেষ্টা করবো।’

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এম এ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সা‌লে তি‌নি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যা‌রিস্টার ডিগ্রি অর্জন ক‌রেন। ১৯৮৫ সা‌লের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ড‌নেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছি‌লেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সেল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হন ২০০২ সালে।

ব্যা‌রিস্টার রাজ্জাকের দুই ছে‌লে ও এক মে‌য়ে। দুই ছেলেও ব্যারিস্টার এবং তারা সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ