অক্সিজেন, পানি ব্যবহারের আর্থিকমূল্য বের করবে বিবিএস
একজন মানুষ সারাজীবনে কী পরিমাণ অক্সিজেন ও পানি ব্যবহার করে এবং এসবের আর্থিকমূল্য কত, তা নিরূপণ করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এ লক্ষ্যে ন্যাশনাল রিসোর্স একাউন্টস (এনআরএ) তৈরি করছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্টাল ইকোনমিক একাউন্টিং সিস্টেমের আওতায় এ কাজ করবে এনআরএ।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার ও এফএও-এর প্রতিনিধি জিয়াকুন সাই। এছাড়া আরও বক্তব্য দেন বিবিএস-এর উপমহাপরিচালক পরিমল চন্দ্র বসু।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এদেশের মাটি, পানি, বাতাস, বন, প্রাণিসম্পদসহ সব ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদের হিসাব করা হবে। যেকোনো নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই একাউন্টস ব্যাপক কাজে আসবে।
সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবে। এছাড়া, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবে। এর ভিত্তিতে ও জাতিসংঘের সহায়তায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে ১৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ একসঙ্গে কাজ করবে বলেও জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “একটি ধারণা হলো যে, পরিবেশ ও উন্নয়ন পরস্পরবিরোধী। কিন্তু এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্যই টেকসই উন্নয়নের নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, যেন দুটোই করা সম্ভব হয়। আগে গায়ের জোরে অনেকেই বন ও পরিবেশ ধ্বংস করতো। কিন্তু এখন প্রভাব খাটিয়ে কিছু করা চলবে না। সবার আগে দেখতে হবে জাতীয় স্বার্থ। এজন্যই একাউন্টস দরকার। এখন বিশ্বব্যাপী পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। কিন্তু এই যুদ্ধে প্রকৃতি কখনই হারবে না। তাই পরিবেশকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন হবে না।”
তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। এর আওতায় আরও ১১টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। তখন প্রাকৃতিক সম্পদেরও লাইভ তথ্য পাওয়া আরও সহজ হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, “বেঁচে থাকাটাই এখন মানুষের অন্যতম চিন্তা। এই চিন্তা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর এই বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতির দ্বারস্থ হতে হয়। আমাদের তথ্যভাণ্ডার যত সমৃদ্ধ হবে ততই আমরা টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে পারব। এজন্য সঠিক জরিপ প্রয়োজন।”
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, প্রকৃতিকে বাদ দিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। প্রকৃতির মধ্য থেকেই উন্নয়ন এগিয়ে নিতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদের যে একাউন্টস করা হচ্ছে সেটির জন্য সবার সহায়তা প্রয়োজন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে