বিসিবিতে আমিনুল ইন, ফারুক আউট!
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি পদ হারাতে যাচ্ছেন ফারুক আহমেদ। কারণ—বিসিবিতে পরিবর্তন আনতে চায় সরকার। ইতোমধ্যেই গত বুধবার (২৮ মে) রাতে এক বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফারুক আহমেদকে এই বিষয়ে অবহিত করেছেন। তবে বিসিবির সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনও নেননি বলে জানিয়েছেন ফারুক।
আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হবে বিসিবির নির্বাচন। নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব আসবে। ফারুক আহমেদের জায়গায় বিসিবির সভাপতি হিসেবে দেখা যেতে পারে সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে। আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে পরিচালক হওয়ার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন তিনি। তবে সভাপতি হওয়ার ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলতে চাননি আমিনুল। অবশ্য দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে বিসিবির যেকোনো দায়িত্ব পালনে তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।
গত আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর বিদেশ থেকে নিয়ম মেনে পদত্যাগ করেন তৎকালীন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এরপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় পরিচালক মনোনীত হয়ে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পান ফারুক আহমেদ। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ক্রিকেটকে দুর্নীতিমুক্ত ও সঠিক পথে পরিচালনায় তিনি ব্যর্থ হন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে বিপিএলের ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম ও কেলেঙ্কারি ঘটে। ফারুকের বিরুদ্ধে বিসিবির ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফারুক বলেন, সরকার ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনতে চায়। তবে আমি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। কিছু সময় চেয়েছি।
নিয়ম মেনেই বিসিবির সভাপতি হয়েছেন ফারুক আহমেদ। তার পদত্যাগ ছাড়া সভাপতি পরিবর্তনের আইনি সুযোগ নেই। সরকার চাইলেও তাকে সরাসরি অপসারণ করতে পারে না। কারণ, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রমাণিত হলে আইসিসি থেকে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে।
ফারুক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু হঠাৎ করেই তার পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, অনেক আগেই বিসিবির পরিচালক হওয়ার প্রস্তাব পান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তাকে সভাপতি করা হলে তিনি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে রাজি। তবে দীর্ঘমেয়াদে থাকতে চান না, কারণ তার পরিবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বসবাস করে। পারিবারিক কাজে দেশে ফিরে এবার আলোচনায় আসেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে কয়েক দিন আগে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল—আমি বিসিবিতে কাজ করতে আগ্রহী কি না। আমি বলেছি, বোর্ডের অনেক জায়গায় উন্নয়নের সুযোগ আছে।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাকে বিসিবির পরিচালক পদে চায়। সভাপতির বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। কারণ সভাপতি তো কেউ এভাবে নির্ধারণ করতে পারে না। পরিচালকদের ভোটেই সভাপতি নির্বাচন হবে। তবে আমি দেশীয় ক্রিকেটের স্বার্থে যেকোনো দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
বর্তমানে আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন আমিনুল।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে