বিজয়ের সামনে এবং পেছনে
সময় নামের নদী বয়ে চলে নিরন্তর। মহাকালের সাগর-মহাসাগরে হারিয়ে যায়; কিন্তু হারিয়ে যাওয়া নদী যেমন রেখে যায় তার দুই তীরে বসতি উজাড় করা ভাঙনের নির্মম দুঃখবহ স্মৃতি, তেমনই রেখে যায় সোনালি ফসলের আশা জাগানিয়া উর্বর পলিও। সময়ও রেখে যায় তার কিছু অবিস্মরণীয় স্মৃতি, কালজয়ী কিছু ঘটনাপ্রবাহ, যাকে আমরা বলি ইতিহাস। সেই ফেলে আসা সময়ের অনেক কিছু হারিয়ে গেছে বটে আমাদের জীবন থেকে, কিন্তু জ্বলন্ত সূর্যের দীপ্তি হয়ে রয়ে গেছে রক্ত আর অশ্রুতে স্নাত, ত্যাগে আর গৌরবে আলোকিত ১৯৭১।
মার্চ থেকে ডিসেম্বর সেই অবিস্মরণীয় একাত্তর থেকে আজ মুক্তিযুদ্ধ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীও পার হয়ে ২০২৩ । টানা ৫৩ বছর। মহান মুক্তিযুদ্ধ বিজয় ও স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হচ্ছে এই ডিসেম্বরেই। এমন ঐতিহাসিক গৌরবময় মুহূর্তে আমরা যারা বেঁচে আছি নিঃসন্দেহে তারা বড় ভাগ্যবান। কত বীর মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের উল্লাসে মুক্ত জন্মভূমিতে স্বাধীনতা অর্জনের আনন্দে উল্লসিত হয়েছিলেন; কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে বিজয় দিবসের উদযাপনে সমৃদ্ধির আলোয় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ তারা দেখলেন না, শামিল হতে পারলেন না গৌরবময় আনন্দ উদযাপনে।
কী বিস্ময়করভাবেই না বদলে গেছে বাংলাদেশ! অনুন্নত, দারিদ্র্যপীড়িত, অনাহারক্লিষ্ট, একটা ভূখণ্ড কীভাবে সচ্ছল, সমৃদ্ধশালী, তথা উন্নয়নের আলোয় আলোকিত, প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগের আধুনিকতম সমাজে রূপান্তরিত হতে পারে, তার অনন্য দৃষ্টান্তও আজকের বাংলাদেশ।
আজ কি আমাদের মনে পড়বে না ১৯৭১ সালের লাখ লাখ মানুষের আত্মাহুতি, স্বাধীনতার বেদিমূলে যারা তাদের বর্তমান উৎসর্গ করেছিলেন আমাদের ভবিষ্যৎ রচনার জন্য? ১৯৭১ এর সেই চরম ত্যাগ আর বিজয়ের গৌরবে উল্লসিত দিনগুলো আজ প্রবীণদের স্মৃতির জানালা খুলে দেবে, পেছন ফিরে তাকালে কোটি কোটি মানুষের দুঃখ-দুর্দশার ছবি ভেসে উঠবে। প্রিয় মাতৃভূমি মৃত্যুগুহা হিসেবে দেখতে বাধ্য হওয়া অগণিত মানুষের অশ্রু আর রক্তের মর্মস্পর্শী সেই ঘটনাপ্রবাহ সামান্য কৃতজ্ঞতা বোধ থাকলে আপ্লুত করে দেবে নিশ্চয়ই।
এই ডিসেম্বরে নিঃসন্দেহে স্মৃতিতে ভেসে উঠবে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ১৬ ডিসেম্বর শেষ বিকেলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের সেই দৃশ্য, যা বাঙালির জন্য অনন্য গৌরবের স্মৃতি হয়ে আছে।
১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন থেকে শুরু করে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে বিজয় থেকে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় পর্যন্ত অনন্য ঘটনাপ্রবাহ চোখের সামনে ভেসে উঠছে আজ। মনে হয় যেন সেদিনের ঘটনা! অথচ ৫৩ বছর অতিক্রান্ত!
ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িকতাদুষ্ট সামরিক শাসনে পিষ্ট পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দুর্বার আকাঙ্ক্ষায় বাংলার মানুষের নয়নমণি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছর যে কঠিন ত্যাগ আর প্রাণপণ সাহসী সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের ঘটনাবলিও বিজয়ের ডিসেম্বরে আমাদের স্মৃতিতে ধ্রুবতারার মতো দেদীপ্যমান হয়ে জ্বলবে।
একাত্তরে বাংলাদেশ যে কঠিন মূল্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, তার সোনালি ফসল আজ ঘরে তুলছে দেশবাসী। একদিন সাম্রাজ্যবাদীরা যে বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান ছিল, তলাবিহীন ঝুড়ি বলে অপমানের অপচেষ্টা করেছিল, আজ তারাই বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখার জন্য স্বল্পোন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোকে পরামর্শ দিচ্ছে!
বাংলাদেশে আপন দক্ষতায় স্বনির্ভর উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় ভূষিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বদলে গেছে বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশে এক দ্রুত উন্নয়নশীল বিকাশমান অর্থনীতির রাষ্ট্র; কিন্তু ফুলের সঙ্গে যেমন কাঁটা থাকে তেমনি উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতির ঝুঁকি থাকে। সেই ঝুঁকির মধ্য দিয়ে, ভয়াবহ করোনা এবং এর পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে আজ যে অর্থনৈতিক সংকট সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে, তারও মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যাবার সংগ্রামে লড়তে হচ্ছে। অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি আরো অনেক রকম প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে সদ্য স্বাধীন দেশে ফিরে এসেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন। একদিকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচরণকারী সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তি, অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরের স্বাধীনতাবিরোধী এবং বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের নানা প্ল্যাটফর্ম থেকে যে চরম ষড়যন্ত্র, সেই ষড়যন্ত্র বঙ্গবন্ধুকে এক দিনের জন্যও স্বস্তি দেয়নি এবং শেষ পর্যন্ত দেশজুড়ে সৃষ্ট সেই নৈরাজ্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিয়েছিল।
ফলে একাত্তরের ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হয়ে গেল দ্বিধা বিভক্ত। স্বাধীনতাবিরোধীরা আবার সুযোগ পেল রাজনীতিতে ফিরে আসার। ফিরে এলো পাকিস্তানি ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লাঞ্ছিত হলো শহীদের রক্তস্নাত এই বাংলায়। দুটি দশক পাকিস্তান স্টাইলে এদেশে চালু থাকল সামরিক শাসন। সামরিক শাসকরা বিদায় নিলেও তাদের তল্পিবাহকরা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বহাল ছিল বহু বছর। রাজনীতিতে হত্যা, ক্যু আর অস্ত্র, ষড়যন্ত্র সন্ত্রাসের অপসংস্কৃতি স্থায়ী আসন গেঁড়ে বসল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকেই তারা পাল্টে দিতে চেয়েছিল।
গত অর্ধ শতাব্দী কালের ইতিহাস এই নির্মম সত্যই আমাদের সামনে দগদগে ক্ষতের মতো রেখে গেছে। স্বাধীনতাবিরোধী তথা পাকিস্তানপন্থিদের দুই দশকের শাসনামলে কম করে হলেও অন্তত তিনটি প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের মহিমা এবং বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় ত্যাগী ভূমিকার কিছুই জানতে পারল না। এরাই এখন বংশানুক্রমে পাকিস্তানপন্থি রাজনীতির পতাকা বহন করে এ পর্যন্ত এসেছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তারা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দর্শন ছড়িয়ে দিতে পেরেছে সারা বাংলায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর দুটি রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে আজ যে দ্বন্দ্ব সংঘাত, তার মূলেও বিরাজ করছে ওই মৌলিক ভিন্নতা। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি ঐতিহাসিক গৌরবময় বিজয়বাস্তবতাকে যারা স্বীকার করছে ঠেকে এবং খণ্ডিতভাবে তাদের সঙ্গে কেমন করে ঐক্য হবে? কঠিন প্রশ্ন। দুনিয়ার কোনো দেশে রাষ্ট্রীয় মৌলিক বিষয় নিয়ে, মীমাংসিত বিষয় নিয়ে এমন দীর্ঘকাল বিরাজমান ভিন্নতার বিরোধ আছে কি না জানা নেই।
রাজনীতিতে ভিন্ন মত থাকবে। অনেক ক্ষেত্রেই বিরোধিতাও হতে পারে কিন্তু যিনি স্বাধীনতার মহান স্থপতি তাকে মেনে না নেবার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না; কিন্তু বাংলাদেশে তা সম্ভব হচ্ছে। সে জন্যই মাত্র সাড়ে তিন বছরের প্রান্তে জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে খুন হতে হলো! তার কন্যাকেও দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দেখা গেছে!
এমন নির্মম বাস্তবতায় কোনো রকমের সমঝোতার সুযোগ থাকে না। তারপরেও বাংলাদেশে যখন আওয়ামী লীগের সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর এই রাজনৈতিক শক্তি তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে, যতই দর্শনগত দিক থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের কাছে অগ্রহণযোগ্য হোক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার প্রশ্নে আপস-সমঝোতা হতেই হবে।
আসন্ন নির্বাচনকে অধিকতর জনসম্পৃক্ত ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য যতটা সম্ভব ক্ষমতাসীনদের ছাড় দিয়ে হলেও দেশে একটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতেই হবে। বিএনপি এবং তার সহযোগীরা নির্বাচনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, কেন নিয়েছে তা রাজনীতি বিষয়ে সামান্য জ্ঞান আছে তারাও জানেন। রাজনৈতিক অবস্থা যত দিক থেকে দলটি বলতে গেলে আজ নেতৃত্ব শূন্য। নির্বাচনের জিতে তাদের প্রধানমন্ত্রী কি হবে, রাষ্ট্রপতি কে হবে এই প্রশ্নের উত্তর তারা নিজেরাও দিতে পারবেন না। এই নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা তারা করবেন; কিন্তু সেটা সহিংসতার পথে কিছুতেই হতে পারে না। এই সত্য মনে রেখেও একটা মীমাংসায় আসতেই হবে।
ন্যূনতম নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন রাজনীতি ইতিবাচক রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখে; কিন্তু অপরাজনীতি ঐতিহ্যবাহী গৌরবময় রাজনীতিকেও কলুষিত পথে পা বাড়াতে বাধ্য করে। এই বাস্তবতার দেখলে বঙ্গবন্ধুর সেই আওয়ামী লীগ আর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের বাংলাদেশের আজকের আওয়ামী লীগ এক নয়। এক থাকা সম্ভবও নয়। বাংলাদেশের যদি প্রগতিশীল বাম রাজনৈতিকরা এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ হতে পারতেন, তাহলে বাংলাদেশ তারা আপন পথে হয়তো চলতে পারতো। বাধাটা এত বড় হতো না; কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এই বামেরা বারবার বিভ্রান্তির অন্ধকারে পা ফেলেছেন। নিজেদের ক্ষমতা রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেননি, তৃণমূলেও তারা বিস্তৃত হতে পারেননি শক্তভাবে।
এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হলে কিছুটা সমঝোতার পথে যাবেন সেটাই সচেতন মানুষের কাম্য। বিবেকবান প্রতিটি মানুষই জানেন বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং অস্থিরতা, আজ যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট তার মূলে কাজ করছে পঁচাত্তর পরবর্তী ওই বিভ্রান্তি আর বিভক্তি; কিন্তু দীর্ঘকাল পরে হলেও ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর দেখানো রাজনৈতিক পথে আবার যাত্রা করার সুযোগ পেয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের হারানো সম্মান ফিরে পেয়েছেন। জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখতেন সেই স্বপ্নের পথেই চলতে শুরু করল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য কাজটা সহজ ছিল না।
সঙ্গত কারণেই আজ তো দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসে আমাদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির দিকেও দৃষ্টিপাত করা দরকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত এই বাংলাদেশে যদি সর্বক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হয়ে উঠতে না পারে, তাহলে সকল আনন্দই ম্লান হয়ে যাবে। অর্জনের আনন্দ আমাদের গর্বিত করছে, কিন্তু আগামী দিনগুলোতে যদি উন্নয়নের এই প্রবাহ বেগবান রাখা না যায়, তাহলে তা হবে লাখো শহীদের মৌন দীর্ঘশ্বাস আর আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হতাশার; যা দেশকে ভালোবাসেন- এমন কোনো মানুষের কাম্য হতে পারে না।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের দুস্থ-দরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা সভ্য রাষ্ট্রের জন্য অনিবার্য কর্মসূচি; কিন্তু সেই কর্মসূচি গ্রহণ আর বাস্তবায়নের জন্যও বাংলাদেশকে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বিলম্বে হলেও আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত; কিন্তু আরও বহুদূর যেতে হবে সত্যিকারের সুখী-সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর আজীবন স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হলে দুর্নীতি কমাতেই হবে। বাজারের বেসামাল অবস্থা যারা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করতেই হবে সরকারকে।
যে অর্থনৈতিক উন্নতি ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে তার সুফল আরও অধিক মাত্রায় জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে সত্য; কিন্তু তার সিংহভাগ কয়েক হাজার কোটিপতির ঘরে বৃত্তাবদ্ধ। দেশের সম্পদ কালো টাকার মালিকরা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। বিদেশে বেগমপাড়ার মতো অবাঞ্ছিত ধনীপাড়া গড়ে উঠেছে, যা কখনো কাম্য হতে পারে না। বিজয়ী জাতি হিসেবে এসব ঘটনা আমাদের জন্য কলঙ্কের। দুর্নীতির এই কলঙ্কিত অন্ধকার থেকে বিজয়ী বাংলাদেশকে আলোকিত অধ্যায় নেবার সাধনাই হোক বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।
লেখক: কবি ও সিনিয়র সাংবাদিক
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে