প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রায় দুই বছর পর চালু হলো বেনাপোল পৌর বাসটার্মিনাল
যশোর জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর পর বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনালে বাস ঢুকতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরেছে বেনাপোলবাসীর মাঝে। যাত্রী নিরাপত্তায় বাড়ানো হয়েছে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ ও পৌর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জনবলও।
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল দিয়ে দিনে পারাপার হন দেশ-বিদেশের প্রায় ৮ হাজার যাত্রী। তাদের নিয়ে বেনাপোলে আসা-যাওয়া করে বিভিন্ন এলাকার দেড় শতাধিক বাস। দূরপাল্লার এই বাসগুলো যাত্রী নিয়ে এতদিন সরাসরি বেনাপোল চেকপোস্টে চলে যেত। চেকপোস্ট থেকে বাজার পর্যন্ত ঢাকা-কলকাতা মহাসড়কের দুপাশে তিন থেকে চার লাইনে যত্র-তত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করাতেন চালকরা। স্থলবন্দরে রপ্তানিপণ্য নিয়ে আসা ট্রাক, আমদানিপণ্য নিতে আসা খালি ট্রাক ও পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোও মহাসড়কের দুপাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছিল। এসব অনিয়মে তীব্র যানজট তৈরি হয়ে যাত্রীদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছিল।
যানজট নিরসনে ২০১৭ সালে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক বাস টার্মিনালটির উদ্বোধন করা হয় ২০২২ সালে। তবে পরিবহন ব্যবসায়ীরা চক্রান্ত করে এটি ব্যবহার করতেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান গত বুধবার (৬ নভেম্বর) নির্দেশনা জারি করেন, পৌর এলাকায় যানজট নিরসন ও জনদুর্ভোগ কমাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বাস-মিনিবাসগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহার করতে হবে। টার্মিনাল অতিক্রম করে আন্তঃদেশীয় তিনটি ছাড়া কোনো বাসই বেনাপোল পৌর এলাকায় ঢুকতে পারবে না। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ নির্দেশনা পেয়ে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ভোর থেকে বাসগুলো আসতে শুরু করায় উদ্বোধনের দীর্ঘ দুই বছর পর পুরোপুরি চালু হয় বাস টার্মিনালটি।
ইউএনও নাজিব হাসান বলেন, ‘যানজট নিরসনকল্পে গঠিত কমিটি ও শার্শা উপজেলার অক্টোবর মাসের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্দেশনাগুলো জারি করা হয়েছে। সেগুলো সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে মেনে চললে আর বাসগুলো টার্মিনাল থেকে যাত্রী ওঠা-নামার ব্যবস্থা করলে যানজট কমবে বলে আমরা আশাবাদী।’
বাস টার্মিনাল চালুতে প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়ে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘সকালে পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো লোড হলেও যানজটে বেনাপোল বন্দর ছাড়তে ছাড়তে রাত হচ্ছিল। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলাম। নতুন এই উদ্যোগ বেনাপোলকে যানজটমুক্ত করবে বলেই মনে করি।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে