দেড় বছর পর চালু হচ্ছে বেঙ্গল টেক্সটাইল মিল; কর্মসংস্থানের প্রত্যাশায় হাজারো শ্রমিক

দেড় বছর বন্ধ থাকার পর যশোরের অভয়নগরের ‘বেঙ্গল টেক্সটাইল মিল’ ফের চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ করপোরেশন (বিটিএমসি)। কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার দ্বার খোলার প্রত্যাশায় উন্মুখ হাজারো শ্রমিক।

যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামে ১৬.৩২ একর জমিতে বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলের অবস্থান। একই সীমানা প্রাচীরের ভেতরে রয়েছে আলাদা দুটি মিল।

তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সূতা ও চামড়া ব্যবসায়ী হাজী নজির আহম্মেদের তিন ছেলে ১৯৬২ সালে ১২ হাজার ৫০০ টাকু নিয়ে বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলস্-১ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৬ সালে এটির উৎপাদন শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে মিলটি রাষ্ট্রায়ত্ব করা হয়। ১৯৮৭ সালে চীনা ক্রেডিটের আওতায় চায়না মেশিনারিজ দিয়ে ২৫ হাজার ৮৮টি টাকুর মিলস্-২ স্থাপিত হয়। ১৯৮৯ সালে এটির উৎপাদন শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মিলটির মেশিন ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। ভবনগুলোর দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে।

অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। ছাদ চুইয়ে পড়া পানি থেকে মেশিন রক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে পলেথিন। আগাছা আবর্জনায় তৈরি হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ।

কর্মকর্তারা জানান, মেশিনের আধুনিকায়ন না করাসহ বেশ কিছু সমস্যায় বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলের লোকসান বেড়ে যায়। এরপর ধাপে ধাপে শ্রমিক ছাটাই শুরু হয়। পরে বিটিএমসি কর্তৃপক্ষ সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে মিল চালু করলেও সফলতার দেখা মেলেনি।

তারা জানান, মিলস্-১ ও ২ এর মেশিনসহ যন্ত্রপাতির মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নতুন মেশিন স্থাপন করলে মিলটি সচল হবে, শুরু হবে উৎপাদন।

মিলের সাবেক সিবিএ নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। মিল বন্ধের পর শ্রমিক পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই ফের মিল চালু হলে খুবই উপকৃত হবেন তারা।

মিলের ব্যবস্থাপক (স্পিনিং) ও মিল ইনচার্জ মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মিল বন্ধ হয়ে যায়। আমিসহ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও নিরাপত্তাকর্মী মিলিয়ে ২২ জন এখনো কর্মরত আছি। ফের চালুর উদ্দেশ্যে ২৯ এপ্রিল বিটিএমসির চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও জুট কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা মিল পরিদর্শন করেন। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনার (পিপিপি) পদ্ধতিতে মিল চালুর প্রক্রিয়া চলমান’।

বিটিএমসি'র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাহিদ হাসান বলেন, 'বেঙ্গল টেক্সটাইলসহ বন্ধ থাকা সব মিল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।পিপিপি পদ্ধতিতে চালুর চেষ্টা চলছে। পার্টনার পেতে কিছুটা সময় লাগবে'।