Views Bangladesh Logo

পাহাড়ি পথে শোভা পাচ্ছে: বান্দরবানে লাল-হলুদ-নীল-সোনালি রঙের ফুল যেন পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে

বান্দরবানে পাহাড়ি পথে পথে শোভা পাচ্ছে লাল-হলুদ-নীল-সোনালি রঙের ফুল। ভ্রমণকারীদের যে কেউই দেখে ভাবতে পারেন হয়ত ভিন্ন কিছু। যেন নববধূর সাজে কারও অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে কেউ। জেলা প্রবেশপথসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো এখন সেজেছে এমনি, যেন বধূ সেজে বসে আছে ওই পাহাড়ি কন্যা বান্দরবান।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পার্বত্য জেলা বান্দরবান বেড়াতে আসার প্রবেশপথেই চোখে পড়বে এমন দৃশ্য। বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের হলুদিয়া থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে রাস্তার দুই পাশে এখন শোভা পাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, অশোক, সোনালু, জারুল, চম্পা, কড়ইসহ নানা রঙ, রূপ আর ঘ্রাণের নানা রঙের ফুল।

গ্রীষ্মের এই আগুনঝরা দিনে বান্দরবান গেলে ভ্রমণকারীদের মনে হতেই পারে পাহাড়ি পথে যেন লেগেছে লাল-নীল-সোনালি রঙের আগুন। তবে এ আগুনে কোনো কৃত্রিমতা নেই, এ যে প্রকৃতির রূপের আগুন-ফুলের শোভা। রাস্তার দুই পাশে কৃষ্ণচূড়ার রূপ দেখে কেউ মুগ্ধ হয়ে কেউবা হয়তো ভাবতে বসবেন লাল বেনারসি পরা নববধূর সজ্জায় কারো অপেক্ষায় আছে পর্যটন শহর বান্দরবান। ভ্রমণ পিপাসু বেড়াতে আসা পর্যটকরাও ফুলে সাজানো বান্দরবান দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।

বেড়াতে আসা পর্যটক শারমিন, শায়েলা ও সাজ্জাদ বলেন, পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে এসে ফুলে ফুলে সাজানো বান্দরবান দেখলাম, সত্যিই অসাধারণ। বিশেষ করে সোনালু ফুলের সোনালি রং এবং কৃষ্ণচূড়ার লালরাঙা সৌন্দর্যের বর্ণনা করা অসম্ভব। ফুলের রূপে মুগ্ধ আমরা। এটি গ্রীষ্মে পাহাড়ের সৌন্দর্যের ভিন্ন আরেকটি রূপ, যা না দেখলে কেউই বুঝবেন না।

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, মূলত ২০০৩ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া ও তৎকালীন বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অবনীভূষণ ঠাকুর শহরের প্রবেশদ্বার হলুদিয়া থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে সৌন্দর্য বর্ধনে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগান। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরই স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগের উদ্যোগে প্রধান সড়কসহ পৌর শহরের রাস্তার দুই পাশে ফুলের গাছ লাগান। অভ্যন্তরীণ রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি সড়কেও ফুলের গাছ লাগানো হয়। কয়েক বছরের মধ্যে গাছগুলো বেড়ে উঠে বসন্ত ও গ্রীষ্মে পাল্টে দেয় পর্যটন শহরের চিরচেনা দৃশ্য।

বান্দরবান রেসিডেনশিয়াল হোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জানান, বান্দরবানকে ফুলের শহর হিসেবে গড়ে তোলার বহুদিনের স্বপ্ন এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এ উদ্যোগ ও পরিকল্পনা পাহাড়ি এ জেলার সৌন্দর্যকে আরো প্রস্ফুটিত করেছে। দূর থেকে মনে হয় যেন পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে বর্ণিল ফুল গাছগুলো। শুধু সড়ক নয়, পর্যটন স্পট এবং হোটেল রিসোর্টগুলোতেও বিভিন্ন রং-বেরঙের ফুল গাছে সাজানো হয়েছে পর্যটকদের আকৃষ্টের জন্য।

বন বিভাগের বিভাগীয় সদর রেঞ্চ কর্মকর্তা সুলতান টিটু জানান, বান্দরবান-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সবগুলো সড়কের দুই পাশে চলতি বছরে নতুন করে গাছ লাগানো পরিকল্পনা রয়েছে বন বিভাগের। সৌন্দর্য বর্ধনে লাগানো অনেক গাছ মরে গেছে। শূন্য স্থানগুলো চিহ্নিত করে নতুন করে আরও গাছ লাগানো হবে।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, পর্যটন জেলা বান্দরবানের সৌন্দর্য বর্ধন এবং পাহাড়ের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি জেলার সৌন্দর্য ধরে রাখতে এবং রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয়দেরও আরও সচেতন হতে হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ