পূজার রঙে সেজেছে বগুড়া
পরিবারের সদস্য ও প্রিয়জনদের নিয়ে ফুচকা-চটপটি খেতে বসেছেন অনেকেই। শিশু-কিশোরেরা ঘুরে দেখছে পূজামণ্ডপ। নানা সাজসজ্জায় আসছেন নারীরা। তারা ভিড় করছেন প্রসাধনীর দোকানে। কেউ কেউ কিনছেন মাটির তৈরী তৈজসপত্র। সেইসাথে পূজা মণ্ডপে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে অনেকেরই হচ্ছে দেখা। মেতেছেন তারা খোশগল্পে। সবমিলিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ।
আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার বগুড়া শহরের বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্যের। তবে হামলার আশঙ্কা থেকে এবার পূজা মণ্ডপের সংখ্যা গতবারের তুলনায় কমে গেছে বলে পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে, গত বুধবার (৯ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরু হয়। পরদিন এই উৎসবের মহাসপ্তমী পালন করা হয়।
আজ মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা। ১২ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
বগুড়া শহরের মালতিনগর এলাকায় বারোয়ারী দুর্গা মন্দিরে ৯৬ বছর ধরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সেখানে অভি মোদক, রিপন চন্দ্রসহ অন্তত দশজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখছেন।
তারা জানান, যেকোনো অযুহাতে উৎসবের দিনগুলোতে আনন্দ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা উচিত নয়। আনন্দ-উৎসব থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখাটা মন এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর। উৎসবকে উৎসবের মতো করেই গ্রহণ করতে হবে। তাহলে মনে প্রশান্তি আসবে।
জানতে চাইলে বগুড়ার পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল রায় বলেন, বগুড়ায় এবার ৬২৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবার ৬৬৩টি মণ্ডপে দূর্গাপূজা করা হয়। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করা হচ্ছে। যেকোনো ধরণের আশঙ্কা নেই।
গতবারের তুলনায় এবার পূজামণ্ডপ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভয় ও আতঙ্ক থেকে অনেকেই এবার পূজার আয়োজন করেননি। বিশেষ করে দরিদ্র এলাকার হিন্দুরা পূজামণ্ডপ তৈরী করেননি। পূজার আয়োজন করতে গেলে অনেক খরচ হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মণ্ডপে হামলা বা কিছু একটা ঘটে গেলে তারা বিপদে পড়বেন। সেই ভয় থেকেই পূজামণ্ডপের সংখ্যা গতবারের তুলনায় এবার কমে গেছে।
এ ব্যাপারে বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বগুড়ায় পূজা উদযাপন হচ্ছে। পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিভিন্ন টিম কাজ করছে। যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে