নতুন শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে ভাষাশহীদদের স্মরণ করবেন বগুড়াবাসী
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত নতুন শহীদ মিনারটি বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কে এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। অপেক্ষা শুধু একুশের প্রথম প্রহর থেকে দিনভর ফুলে ফুলে সজ্জিত হওয়ার।
জেলা পরিষদের মাধ্যমে পুনর্নির্মিত শহীদ মিনারটিতে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে এবারের মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বায়ান্নর ভাষাশহীদদের স্মরণ করবেন বগুড়াবাসী।
স্বাধীনতার পরে একই স্থানে আরো দুবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে বগুড়ার কারুশিল্পী প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল করিম দুলালের নকশায় নির্মিত প্রথম শহীদ মিনারের উপরিভাগে পশ্চিম পাশে ‘ক’ ‘খ’ ও দক্ষিণ পাশে ‘অ’ ‘আ’ অক্ষর খোদাই করা ছিল।
২০০৫ সালে সেটি ভেঙে আরেকটি শহীদ মিনার নির্মিত হয়। তবে সেটি যথাযথ হয়নি, অভিযোগ তুলে পুনর্নির্মাণের দাবিতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে আন্দোলনে নামেন সংস্কৃতিকর্মী, লেখক, শিল্পী, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। সে সময় শহীদ খোকন পার্কে সভা-সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার অসন্তোষ থেকে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে তা রুপ নেয় গণআন্দোলনে।
দীর্ঘদিনের দাবির মুখে ২০২৩ সালের ১৮ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু করে পুনর্নিমাণ শেষে এবারের শহীদ দিবসের একেবারে আগ মূহুর্তে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয় শহীদ মিনারটি।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে অনেকটা চাপ প্রয়োগ করেই ঠিকাদারকে দিয়ে শহীদ মিনারটির পুনর্নির্মাণ করে নেয়া হয়েছে। ফলে নতুন শহীদ মিনারে ফুল দিয়েই ভাষাশহীদদের স্মরণ করতে যাচ্ছেন বগুড়াবাসী।
তবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে এখনও নোংরা, ময়লা রয়ে গেছে। শহীদ খোকন পার্কে গণশৌচাগার না থাকাটাও যথেষ্ট অস্বস্তির বিষয় হয়ে রয়ে গেছে দীর্ঘদিন ধরেই।
জেলা পরিষদ বলছে, তারা শুধু শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণসহ নতুন কিছু নির্মাণের দায়িত্ব এখন পৌরসভার। পার্কের পূর্ব কোণায় গণশৌচাগার নির্মাণের পরামর্শ পৌর প্রশাসনকে দিয়েছেন তারা।
বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক মাসুম আলী বেগ বলেন, ‘গণশৌচাগার নির্মাণের পক্ষে-বিপক্ষে জনমত রয়েছে। সিদ্ধান্তে আসতে দ্রুত আলোচনায় বসবো। আশা করছি, খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখার কার্যকরী উপায় বের করতে পারবো’।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে