Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে মৌমাছি মোতায়েন বিএসএফের

Tanmay Mondal, Kolkata

তন্ময় মণ্ডল, কলকাতা

বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে অস্থির অবস্থা তৈরি হয়েছে তার ছোঁয়া লেগেছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও। ফলে ছড়িয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এ অবস্থায় সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তর। এ জন্য সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেছে দেশটি। এর অংশ হিসেবে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মৌমাছি মোতায়েন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় বাংলাদেশ সীমান্তে মৌমাছির কৃত্রিম চাক স্থাপন করেছে তারা।

ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে, রাজনৈতিক ‘অস্থিরতার’ কারণে বহু বাংলাদেশি এ সময় সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করছেন। শুধু এ সময়েই নয়, সারা বছরই কাঁটাতারের দুপারের সেনারা চোরাচালানকারীদের ঠেকাতে কঠোর নজরদারি চালায়। মৌমাছি মোতায়েন তারই অংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত সপ্তাহেও বিএসএফের ১০-১২ জন সেনাকে নদীয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কাদিপুরে মৌমাছি চাষের প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গেছে। সেসময় তাদের মাথা ও মুখমণ্ডলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরা ছিল।

সীমান্ত বেড়ায় বেশ কয়েকটি মৌ-বাক্স ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৬ কিলোমিটার সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটালিয়ন। তারা এসব বাক্স ঝুলিয়ে রেখেছে। তাদের আশা, যদি কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বা দুই দেশের কোনো চোরাকারবারি কাঁটাতারের কাছে আসে তাহলে মৌমাছি তাদের উপর আক্রমণ করবে।

৩২ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট সুজিত কুমার একটি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কী করা যায় সেই চিন্তা থেকে আমার মাথায় আসে মৌমাছি চাষের বাক্সগুলো কাঁটাতারের বেড়ায় রাখা যায়। আমরা প্রায়ই দেখি কাঁটাতার কেটে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে। এছাড়া গরু চোরাচালানসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় ঘটে। আমরা খুবই অবাক হয়েছি যে সীমান্তে এসব বাক্স রাখার পর সেখানে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান শূন্যের কাছাকাছি চলে এসেছে।

একটি ইউনিট এই উদ্যোগে সফলতা পাওয়ার পর অন্যান্য ইউনিটও এই রকম ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

কাদিপুর গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, অনেক অপরাধী সীমান্ত বেড়ার আশেপাশে থাকতো। মৌমাছির কারণে তারা এখন নেই। আর সীমান্তে ছোটখাটো অপরাধের ঘটনাও কমেছে।

সম্প্রতি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় দুদেশের সম্পর্কে ফের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ভালো সম্পর্ক উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই ভারতের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক চাই।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্ত হত্যা এবং চোরাচালান ঠেকাতে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আরও নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সীমান্ত নিরাপদ না হলে প্রতিবেশি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতি হবে না। অতীতেও বহুবার এ নিয়ে অস্থিরতা হয়েছে।

তারা বলছেন, এখন দেখার বিষয় মৌমাছি মোতায়েন সীমান্তকে কতোখানি নিরাপদ করতে পারে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ