বিটিআরসির অভিযান: বন্ধ হচ্ছে অবৈধ জিপিএস সার্ভার
অবৈধ জিপিএস ট্র্যাকিং পরিষেবা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ইতোমধ্যে ৩টি কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্লক করা হয়েছে কমপক্ষে ৩৬টি লিংক, আইপি অ্যাড্রেস ও সার্ভার।
অভিযানে লাইসেন্স না পাওয়া যানবাহন ট্র্যাকিং পরিষেবা (ভিটিএস) কোম্পানির সার্ভার বন্ধ করে দিচ্ছে বিটিআরসি। লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগে মটোলক, ট্যাসলক ও সিনোট্র্যাক—এই তিনটি কোম্পানির সার্ভার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত বছর র্যাব অভিযান চালিয়ে অবৈধ জিপিএস ট্র্যাকার এবং অন্যান্য ডিভাইস বিক্রির জন্য তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। একইসঙ্গে সতর্কতা প্রদান করেছিল।
বর্তমানে বিটিআরসি বিভিন্ন আইআইজি, আইএসপি ও টেলিকম অপারেটরকে এসব অবৈধ পরিষেবা ব্লক করার নির্দেশনা দিয়েছে। পাশাপাশি, বিটিআরসি খতিয়ে দেখছে, কীভাবে অনুমোদন ছাড়া বিপুল পরিমাণ সিমকার্ড ক্রয় করা হয়।
অবৈধ কোম্পানির সার্ভার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বিপাকে পড়েছেন লাখ লাখ জিপিএস ব্যবহারকারী। ট্যাসলক, মটোলক, সিনোট্র্যাক এবং অন্যান্য অবৈধ অপারেটরের পরিষেবা গ্রহণকারী গ্রাহকরা এখন নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।
এদিকে, বিটিআরসির এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনস অব বাংলাদেশের (ভিটিএসপিএবি) মুখপাত্ররা। তারা মনে করছেন, বৈধ কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদক্ষেপ গ্রাহকদের অনুমোদিত পরিষেবা গ্রহণে আগ্রহী করবে।
বিষয়টি নিয়ে ভিটিএস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান ওয়ান্ড্যারল্যান্ড আইটি সলিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং সিইও জিএম মাশফিকুর রহমান ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা অনেকদিন আগে থেকেই বিটিআরসিকে এগুলোর বিষয়ে দাবি জানিয়ে আসছি। এখন যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু ইতোমধ্যে যা ক্ষতি হবার তা হয়ে গেছে। আমরা ভ্যাট, ট্যাক্স রেভিনিউ শেয়ারিংসহ নানাভাবে সরকাররের রাজস্ব খাতে অবদান রাখি। ডিভাইসগুলো ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করি। আমরা প্রমাণ নিয়ে গেলেও হবে হবে করে অনেক দেরি করে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ব্যবসা শুরু করেছি তখন এই সেবা বাংলাদেশে একদম নতুন ছিল। অনেক সফলতার গল্প আছে। একসময় একেকটা কোম্পানির মধ্যে সুন্দর বোঝাপোড়া ছিল। শুরুতে ৫টা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। ২০টা কোম্পানির কোটা ছিল। ২০টার মধ্যে পরবর্তীতে মাত্র ৭টা কোম্পানি ব্যবসা চালিয়ে গেছে। এটা খুব ব্যয়বহুল ব্যবসা। এমনিতেই এতো ছোট একটা মার্কেটে এতো কোম্পানি। এক সময় এক একটা ডিভাইসের দাম ৫-৭ হাজারের নিচে ছিল না। কিন্তু এখন ৭০০, ১২০০, ১৫০০ টাকায় সেবা দিয়ে ব্যবসার যে প্রিমিয়াম ছিল সেটা নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এমনিতেই এতো প্রতিযোগিতা তার মধ্যে যদি আবার এই অবৈধ কোম্পানিগুলো ব্যবসা করে তাহলে আমাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। এমন হয়ে গেছে, মনে হয় আমরা লাইসেন্স নিয়ে জিম্মি হয়ে গেছি।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে