জাতীয় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে প্রবাসীদের সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তাঁরা জাতীয় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আরও বেশি সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, যা আগে সরকার রেখে গেছে একপ্রকার আর্থিক ধ্বংসাবশেষ হিসেবে।

শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সমাবেশে ড. ইউনুস এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, গত আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার সময় রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও ব্যাংক প্রায় ফাঁকা ছিল। আগের সরকার সবকিছু শূন্য করে রেখে গেছে। রেমিট্যান্স না থাকলে আমরা টিকে থাকতে পারতাম না। আপনাদের সহায়তাই আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দিয়েছে। এখন আপনাদের সাহায্য আমাদের আরও বেশি প্রয়োজন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশ পুনরুদ্ধারের পথে এগোলেও সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের বহু জরুরি সমস্যা সমাধান করতে হবে। আপনাদের সহযোগিতাই আমাদের প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে সাহায্য করবে। 

সম্প্রতি একটি জাপানি কোম্পানির সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনুস বলেন, বাংলাদেশ আর্থিক দায়বদ্ধতা পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একটি কোম্পানি বিলম্বিত পেমেন্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। আমরা তাদের বলেছি, অর্থ ব্যবস্থাপনার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। ইতিমধ্যে আমরা অনেক দেনা পরিশোধ করেছি, এবং আশ্বস্ত করেছি যে কোনো অর্থ হারাবে না। আমাদের স্বচ্ছতা ও পরিশোধ রেকর্ড দেখে তারা নিশ্চিন্ত হয়েছে।

তিনি প্রবাসীদের আরও সক্রিয়ভাবে ব্যবসা উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে নতুন সুযোগ খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে। বাংলাদেশ থেকে এসব উদ্যোগ সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় না। যারা দেশে ফিরতে চান, তাদের বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে দেশ গড়ার কাজে যুক্ত হতে হবে যেমনটা দেশ আছে, তেমনভাবেই; যেমনটা তারা চায়, তেমন নয়।

তিনি ব্যক্তি উদ্যোগের গুরুত্বও তুলে ধরে বলেন, বড় পরিবর্তনের সূচনা এক বা দুইজন মানুষের মাধ্যমেই হয়। ভাববেন না আপনি একা কিছু করতে পারবেন না। ছাত্র ও কর্মীদের যে ত্যাগ, তা সম্মিলিত অঙ্গীকারের মাধ্যমেই সম্মানিত হতে পারে।

 তিনি ঐক্য ও সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন,একসঙ্গে কাজ করলে শুধু বাংলাদেশ উপকৃত হয় না, বরং জাপানের মতো দেশের কাছেও আমাদের অবস্থান শক্ত হয়। ভাষা শিক্ষা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান পর্যন্ত, আমাদের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে এবং তা রক্ষা করতে হবে।