Views Bangladesh Logo

সিপিএএ উদ্যোগে রাউন্ডটেবিল

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে নতুন কূটনৈতিক অংশীদারিত্বের আহ্বান

সেন্টার ফর পলিসি অ্যানালাইসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (সিপিএএ)-এর আয়োজনে “BANGLADESH 2.0: Reimagining Partnerships with South and Southeast Asia” শীর্ষক এক রাউন্ডটেবিল সংলাপ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে বক্তারা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে আরও গভীর ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ার আহ্বান জানান।


সিপিএএ’র প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ড. মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সংলাপে শিক্ষাবিদ, সাবেক কূটনীতিক, সাংবাদিক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং তরুণ নেতৃত্বসহ বিভিন্ন স্তরের বুদ্ধিজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।

বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর দিলারা চৌধুরী বলেন, “স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ইন্দো-সেন্ট্রিক পররাষ্ট্রনীতিতে আস্থাশীল ছিল, যা বর্তমানে পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। এখন সময় এসেছে 'লুক ইস্ট' নীতিকে নতুনভাবে ভাবার।” তিনি যোগ করেন, “বিগত তিনটি নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে যে কেবল বাইরের দেশ নয়, অভ্যন্তরীণ ডিপ স্টেট ও আমলাতন্ত্রও আমাদের চ্যালেঞ্জ।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর এম শাহীদুজ্জামান বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারে মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আমাদের পররাষ্ট্র নীতির অংশ হতে হবে। বার্মা অ্যাক্ট বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখতে চায়, তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট জাতীয় অবস্থান প্রয়োজন।”

রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার বলেন, “দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশ্ব জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ধারণ করে। এই অঞ্চলের বাজার ও ব্লু ইকোনমিকে কাজে লাগিয়ে এলডিসি-পরবর্তী বাংলাদেশকে প্রস্তুত করতে হবে।”

নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির এসআইপিজি পরিচালক প্রফেসর তৌফিক এম হক বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে কিছুটা স্বাধীনতা এসেছে, তবে ভারত আমাদের স্বায়ত্তশাসনের এই লক্ষণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। ভারত তার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মুসলিম বিরোধিতা ব্যবহার করছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।”

ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস নেক্সাসের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. হাসান নাসির বলেন, “বিবিআইএন ও অন্যান্য করিডর নিয়ে এখনই রাজনৈতিক সংলাপ প্রয়োজন। আমাদের সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব পুনরুদ্ধার এবং জাতিসংঘ ও চীনের ভূমিকা বিবেচনায় নিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে তরুণ চিন্তাবিদ ও সংগঠকরা দেশের ভূ-রাজনীতিতে তরুণদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, আসিয়ানের দেশগুলোর সঙ্গে শিক্ষার্থী বিনিময় ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে হবে।

সমাপনী বক্তব্যে সিপিএএ’র প্রেসিডেন্ট ড. মো. শরীফুল আলম বলেন, “আমরা একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করি এবং জাতীয় স্বার্থকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি।”

সংলাপে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকট, করিডোর রাজনীতি, ব্লু ইকোনমি, পররাষ্ট্রনীতির ভবিষ্যৎ ও তরুণদের সম্পৃক্ততা—বহুমাত্রিক বিষয়ে গভীর আলোচনা হয়।



মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ