কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন উপনির্বাচন
প্রার্থীদের প্রচারণায় জমজমাট কুমিল্লা
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
প্রার্থীদের গণসংযোগের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে চলছে ধারাবাহিক প্রচারণা ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা নিজ নিজ প্রতীকের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন৷ দোয়া চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। আগামী ৯ মার্চ এ সিটির উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে শুধুমাত্র মেয়র পদে নির্বাচন হওয়ায় মূল নির্বাচনের তুলনায় শোরগোল কিছুটা কম। নগরীর ভোটারদের মাঝেও নেই নির্বাচনী আমেজ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ নির্বাচন শুধু একজন মেয়র পদের উপনির্বাচন। এতে ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলর পদে নির্বাচন না থাকায় শুধু মেয়র পদে চার প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেই এখন পর্যন্ত প্রচার সীমাবদ্ধ রয়েছে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ছিল প্রতীক বরাদ্দের চতুর্থ দিন। এদিন পর্যন্ত নগরীতে প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানারের প্রচারণাও জমে উঠেছে। তবে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসবে নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গে সাধারণ ভোটাররাও উদ্দীপ্ত হবেন তখন ভোটের মাঠের পরিবেশ আরও চাঙ্গা হয়ে ভোটের আবহ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকগণ।
এদিকে সোমবার মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর আওয়ামী লীগের সমর্থিত বাস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এবং সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের কন্যা ডা. তাহসিন বাহার সূচনা দিনভর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তিনি তিনি নগরীর ২ ও ৩ নাম্বার ওয়ার্ড কালিয়াজুড়ি, ছোটরাসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ চালান।
এ সময় তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, "নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত নগর প্রশাসন গড়ে তুলে নগরীর উন্নয়নে কাজ করব।" তিনি সকলের কাছে দোয়া চান এবং বাস প্রতীকে ভোট দিতে অনুরোধ করেন।
একই দিনে বিএনপির সাবেক নেতা ও সাবেক সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর প্রচারণার নগরীর ২০ নং ওয়ার্ডের দিশাবন্দ, কাজীপাড়া ও নিউমার্কেট এলাকায় প্রচারণা করেছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সাক্কু অভিযোগ করে বলেন, তাঁর পোস্টার লাগানোর কারণে কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। তাদের ভিডিও তিনি নির্বাচন কমিশনে দিয়েছেন। পাশাপাশি, সাধারণ ডায়েরিও করেছেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, "আমি পরপর দু'বার মেয়র ছিলাম। পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে নগরীকে সাজিয়েছি। অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে আপনারা টেবিল ঘড়ি মার্কায় ভোট দিন।"
মনিরুল হক সাক্কু ২০০৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি ও ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ টানা দুই মেয়াদে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
অন্যদিকে, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রেসকোর্স এলাকা ও নগরীর কান্দিরপাড় ও আশপাশের এলাকায় প্রচারণা চালান ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার।
এসময় তিনি বলেন, "কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়। দুর্নীতিবাজ আর ভাগবাটোয়ারাকারীদের মানুষ আর চায় না। তাই কুমিল্লার মানুষ জড়ো হয়েছে। গত তিনদিন কুমিল্লার মানুষ আমাকে দেখে রাস্তায় নেমে এসেছে।"
তিনি বলেন, "কালো টাকা দিয়ে তারা জনগণকে কিনতে চায়। কিন্তু আমার সাথে আছে আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার নেতা-কর্মীরা। তারা আমাকে অভয় দিচ্ছে তারা আমার সাথে আছে। সুতরাং কালো টাকা দিয়ে এবার কুমিল্লার মানুষেক ধোঁকা দেয়া যাবে না।"
সিটি কর্পোরেশন উপ-নির্বাচনে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন আরেক মেয়র প্রার্থী নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম। নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফৌজদারি মোড় এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। সোমবার সকালে নেতা-কর্মীদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান হাতি প্রতীকের এই প্রার্থী।
তিনি বলেন, "সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ভোটারদের যে বিপুল সাড়া পাচ্ছি তাতে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। কুমিল্লার মানুষ এখন অনেক সচেতন।"
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে