কোটা আন্দোলন: প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে মধ্যরাতে উত্তাল ঢাবি
কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘মর্মাহত ও অপমানিত’ বোধ করায় স্লোগানে স্লোগানে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে বেরিয়ে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন তারা।
রোববার (১৪ জুলাই) রাত ১০টার পর প্রথমে হলের ভেতরে জড়ো হয়ে স্লোগান আর বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ১১টার পর থেকে ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে এসে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে।
কোটার বিরোধিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতায় তারা টিএসসি ও এর আশপাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। মাঝেমধ্যেই স্লোগানে উচ্চকিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ছাত্রদের সঙ্গে ছাত্রীরাও বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে যোগ দেন মধ্যরাতের এ বিক্ষোভে।
রোববার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে না তো কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে? এটি দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন।”
প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছিলেন। রোববার রাত সাড়ে ১০টার পর তারা ফের রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করেন।
এর আগে রাতে হলে বিক্ষোভ দেখানোর সময় হল গেইট আটকে রাখার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বাড়লে গেইট ভেঙে তারা বাইরে বেরিয়ে মিছিল করতে শুরু করেন।
একে একে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল, বিজয় একাত্তর হল, মাস্টার দা সূর্যসেন হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও রোকেয়া হলসহ বেশ কয়েকটি হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা- ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি নও, আমি নই, রাজাকার, রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারও বাপের না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়েও অবস্থান নেন। ঘণ্টা দেড়েক অবস্থান করে রাত ১টার পর ফিরে যেতে দেখা যায় তাদের।
চার ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ
এদিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের চার নেতা পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের গণ যোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা উপ সম্পাদক রাতুল আহমেদ শ্রাবণ এবং কবি জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের দুই নেতা রাসেল হোসেন ও রাফিউল ইসলাম রাফি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে