Views Bangladesh Logo

নাটোরে ‘চাঁদার দাবিতে’ ছাত্রলীগ নেতাকে নির্যাতনে অবশেষে মামলা

Masum   Hossain

মাসুম হোসেন

টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে কি না, দেখতে বাড়ি থেকে বের হন ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল হোসেন কদর। তখনও তিনি জানতেন না যে, কী ঘটতে চলেছে তার সঙ্গে! মূল সড়কে তাকে দেখে ফেলেন ছাত্রদল নেতা জুবায়ের। এরপরই ভয়ঙ্কর নির্যাতনের শিকার হন কদর। তাকে রিকশার পাদানিতে উল্টো করে শুইয়ে, তার শরীরের ওপর পা তুলে দিয়ে ঘুরানো হয় শহর। পুরো সময়টাতে চলে নির্যাতনও।

নাটোর শহরের রোববারের (২০ এপ্রিল) ঘটনাটি এখন দেশজুড়ে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া

এই ঘটনায় অবশেষে জীবন ও বাড়ি-ঘর হারানোর ভয় উপেক্ষা করে মামলা হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) সদর থানায় মামলাটি করেন নির্যাতিত কদরের বাবা শহরের খানাইখালীর খায়রুল আলম লিটন।

২২ বছরের কদর নাটোর পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের (অন্তর্বর্তী সরকারের ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত’ ছাত্র সংগঠন) সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চাঁদা না পেয়ে তাকে নির্যাতন করেন বলে
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, কদরকে নির্যাতনের মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে জোর চেষ্টা চলছে।

কদরের বাবার মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ছাত্রদল নেতা এস এম জুবায়েরের নির্দেশে নাটোর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি রিমন, সাধারণ সম্পাদক নাইম, সদস্য পাইলট ও মিথিলসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জন কদরকে নির্যাতন করেন। তারা প্রত্যেকে শহরের বাসিন্দা।

অভিযুক্ত জুবায়ের নাটোরের নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ (এন এস কলেজ) ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। কদরকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলার পর সোমবার রাতেই কলেজ কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

পালিয়ে থাকা জুবায়েরসহ অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে গেলে স্বজনরা অভিযোগ করেন, রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের কানাইখালীতে ২০ হাজার টাকা চাঁদার দাবিতে কদরের ওপর হামলা চালান ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। চাচাতো ভাই ফাহিম তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তিনিও মারধরের শিকার হয়ে ফিরে যান। পরে কদরকে অটোরিকশায় তুলে পাদানিতে শুইয়ে তার শরীরের ওপরে পা তুলে দিয়ে মারধর করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রিকশায় নির্যাতন করতে করতেই তাকে শহরের হাফরাস্তার একটি গ্যারেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই গ্যারেজেও কদরকে মারধর করা হয়।

পরে কদরের বা-মা ঘটনাস্থলে গিয়ে অনেক অনুরোধের পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। তবে সাদা কাগজে কদরের বাবা-মায়ের স্বাক্ষর রেখে দেন নির্যাতনকারীরা।

স্বজনদের অভিযোগ, কদরকে তাদের কাছে হস্তান্তরের সময় এ ঘটনায় মামলা না করতে হুমকি দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তার বাবা-মাকে বলা হয়, মামলা হলে বাসায় গিয়ে কদরকে হত্যা করা হবে। তাদের বাড়ি-ঘরেরও ক্ষতি করা হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ